ঘনিষ্ঠ বন্ধু হোলগার রুনের বিরুদ্ধে কোয়ার্টার ফাইনালে ম্যাচটি কিছুটা অস্বস্তির হলেও কোর্টে নেমে একজন প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবেই খেলেছেন স্প্যানিশ তরুন কার্লোস আলকারাজ। বুধবার উইম্বলডনের কোয়ার্টার ফাইনালে ড্যানিশ বন্ধু হোলগারকে ৭-৬ (৭/৩), ৬-৪, ৬-৪ গেমের সরাসরি সেটে পরাজিত করে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছেন আলকারাজ। এদিকে নারীদের বিভাগে গত বছরের ফাইনালের ব্যর্থতা কাটিয়ে প্রতিশোধ নিয়েই আবারো শেষ চারে উঠেছেন ওনাস জাবের।
স্প্যানিশ নাম্বার ওয়ান আলকারাজ শেষ চারে খেলবেন ডানিল মেদভেদেভের বিরুদ্ধে। কোয়ার্টার ফাইনালে মাত্র একটি ব্রেক পয়েন্টে মোকাবেলা করেছেন আলকারাজ, যাতে তিনি পরাজিত হয়েছে। পুরো ম্যাচে ৩৫টি উইনিং শটের বিপরীতে ১৩টি আনফোর্সড এরর করেছেন।
ম্যাচ শেষে আলকারাজ বলেছেন, ‘সত্যি কথা বলতে কি বিষয়টা আমার জন্য অসাধারন। যখন থেকে টেনিস খেলা শুরু করেছি তখন থেকে এই স্বপ্ন দেখে আসছি।’
ইউএস ওপেন বিজয়ী আলকারাজ এনিয়ে ঘাসের কোর্টে টানা ১০ ম্যাচে জয়ী হয়েছেন। ২০ বছর বয়সী আরেক তরুনের বিরুদ্ধে জয়ী হয়ে উচ্ছাস প্রকাশ করেছেন আলকারাজ। স্প্যানিশ এই তরুন বলেছেন, ’এই মুহূর্তে দারুন টেনিস খেলছি। এই ধরনের কোর্টে এতটা ভাল খেলবো প্রত্যাশাও করিনি। আমার জন্য বিষয়টা সত্যিই আনন্দের।’
ম্যাচের শুরুটা কঠিন ছিল বলে স্বীকার করেছেন আলকারাজ। বিশেষ করে নেটের অপর পাশে রুনের মত খেলোয়াড় থাকলে ম্যাচের গতি যেকোন সময় পরিবর্তন হতে পারে বলে তিনি বলেছেন, ‘কোয়র্টার ফাইনালে খেলতে আসলে সেখানে বন্ধু বলে কিছ থাকেনা। নিজের ম্যাচের ওপর গুরুত্ব দিতে হয়। আমি মনে করি আজ আমি সবদিক থেকেই এগিয়ে ছিলাম।’
২০০৭ সালে জকোভিচের পরে সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে উইম্বলডনের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করলেন আলকারাজ। কিন্তু তৃতীয় বাছাই মেদভেদেভের বিরুদ্ধে শেষ চারে তাকে কঠিন লড়াইয়ের মুখে পড়তে হবে, তা সহজেই অনুমেয়। রাশিয়ান এই অভিজ্ঞ তারকা শেষ আটে অবাছাই মার্কিন খেলোয়াড় ক্রিস্টোফার ইউবাংকসকে ৬-৪, ১-৬, ৪-৬, ৭-৬ (৭/৪), ৬-১ গেমে পরাজিত করেছেন। আগের রাউন্ডে পঞ্চম বাছাই স্টিফানোস টিসিতপাসকে হারিয়ে অঘটনের জন্ম দিয়েছিরেন ইউবাংকস। অভিষেকে তৃতীয় খেলোয়াড় হিসেবে সেমিফাইনালে খেলার হাতছানি ছিল তার সামনে। কিন্তু ২৭ বছর বয়সী মেদভেদেভ কোন ধরনের অঘটন ঘটতে দেননি।
সেমিফাইনালে আলকারাজের শক্তিমত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে মেদভেদেভ বলেছেন, ‘তাকে যদি একটি সহজ শট খেলতে দেয়া হয় তবে সমস্যায় পড়তে হবে। এসব ম্যাচে জিতলে সামনে অনেক বড় সুযোগ থাকে। নোভাক জকোভিচ কিংবা রাফায়েল নাদালের মত খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে জেতার যে অনুভূতি তা অনেক সময় প্রকাশ করা যায়না। কিন্তু আলকারাজ ভিন্ন ধরনের খেলোয়াড়, তাকে অনেক সময় যাচাই করা যায়না।’
এদিকে নারীদের বিভাগে গত বছরের ফাইনালের প্রতিশোধ নেবার এর থেকে ভাল সুযোগ আর হয়তো আসতো না জাবেরের সামনে। তিউনিশিয়ান ষষ্ঠ বাছাই জাবের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন এলিনা রিবাকিনাকে ৬-৭ (৫/৭), ৬-৪, ৬-১ গেমে পরাজিত করে সেমিফাইনালে উঠেছেন। উভয় খেলোয়াড়ই প্রথম সেটে দুইবার ব্রেক পয়েন্ট অর্জন করেছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কাজাকাস্তানের তৃতীয় বাছাই রিবাকিনা টাই-ব্রেকে সেটটি জিতে নেন। দ্বিতীয় সেটের ১০ম গেমে রিবাকিনা হেরে বসেন। যে কারনে জাবের ম্যাচে সমতা ফেরান। এরপর আর জাবেরকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
২৮ বছর বয়সী জাবের স্বীকার করেছেন গত বছরের ফাইনালের হারটা তিনি আর সামনে আনতে চাননা, কারন ঐ ম্যাচটি ছিল দারুন হতাশার। জাবের বলেন, ‘গত বছর এই ধরনের ম্যাচ খেলার জন্য আমি প্রস্তুত ছিলাম না। তবে গত বছরের ম্যাচ নিয়ে আমার কোন অনুশোচনা নেই। আমি আগেও বলেছি এটা হতেই পারে।’
সেমিফাইনালে জাবেরের প্রতিপক্ষ বিশ্বের দুই নম্বর খেলোয়াড় আরিনা সাবালেঙ্কা। বেলারুশিয়ান সাবালেঙ্কা কোয়ার্টার ফাইনালে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাডিসন কেইসকে সহজেই ৬-২, ৬-৪ গেমে পরাজিত করে শেষ চার নিশ্চিত করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:৫৪:০০ ৬৩ বার পঠিত