ভারতের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভা ও উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় বিতর্কিত মুসলিম ওয়াক্ফ সংশোধনী বিল পাসের প্রতিবাদে দেশটির বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ হয়েছে।
বিক্ষোভের মধ্যে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) এক নেতার বাড়িতে আগুন দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। বিজেপির ওই নেতা সংগঠনটির সংখ্যালঘু মোর্চার মণিপুর সভাপতি।
সোমবার (৭ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
বেশ কয়েকটি সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, রোববার সন্ধ্যায় বিজেপি সংখ্যালঘু মোর্চার মণিপুর সভাপতি আসকার আলীর বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। বিতর্কিত ওয়াকফ সংশোধনী আইনকে সমর্থন করার অভিযোগে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার এই ঘটনা ঘটে।
এনডিটিভি বলছে, সংসদে ওয়াকফ সংশোধনী বিল পাসের বিরুদ্ধে রোববার রাজ্যের বিভিন্ন মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। থৌবাল জেলার লিলং এলাকায় ১০২ নম্বর জাতীয় সড়কে আয়োজিত এক সমাবেশে ৫ হাজারেরও বেশি মানুষ অংশ নিয়েছিলেন।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য নিরাপত্তা বাহিনী আগে থেকেই সেখানে উপস্থিত থাকলেও পরে আধাসামরিক বাহিনী এবং অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়। এছাড়া নিরাপত্তা বাহিনীর কঠোর পাহারায় আলিয়া মাদ্রাসা এলাকা দিয়ে লিলং হাওরেবিতে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
লিলং হচ্ছে সমগ্র রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মুসলিম জনসংখ্যার এলাকা। রোববার দুপুরের নামাজের পর বিভিন্ন মুসলিম এলাকায় প্রতীকী বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। এসময় বিক্ষুব্ধ জনতা সেখানে বিভিন্ন স্লোগান দেন এবং ফেস্টুন প্রদর্শন করেন।
এছাড়া সকাল থেকেই বিভিন্ন মুসলিম এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। তবে এই ধরনের পদক্ষেপকে মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্যরা তাদের মনোবল ভেঙে ফেলা এবং যেকোনও ধরণের গণতান্ত্রিক প্রতিবাদ ও সমাবেশ করা থেকে বিরত রাখার প্রচেষ্টা বলে অভিহিত করেছেন।
কিছু এলাকা থেকে নিরাপত্তা বাহিনী এবং বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ছোটখাটো সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে।
থৌবালের ইরোং চেসাবাতে সকালে নিরাপত্তা বাহিনী এবং বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। মূলত নিরাপত্তা বাহিনী মুসলিমদের একটি সমাবেশকে জোরপূর্বক বন্ধ করে দিতে চাইলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। তবে এখনও পর্যন্ত কোনও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
সমাজকর্মী এবং সম্প্রদায়ের নেতা সাকির আহমেদ সমাবেশে অংশ নিয়ে বলেন, ওয়াকফ সংশোধনী বিল ভারতীয় সংবিধানের নীতির পরিপন্থি কারণ এটি মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য।
ইম্ফল পূর্বের ক্ষত্রি আওয়াং লেইকাই, কৈরাং মুসলিম এবং কিয়ামগেই মুসলিম এলাকা এবং বিষ্ণুপুর জেলার সোরাসহ অন্যান্য এলাকা থেকেও বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২:৫৮:০৯ ৫ বার পঠিত