প্রচণ্ড গরম অনুভূত হওয়ার জন্য নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন দায়ী উল্লেখ করে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘এক সময়- সুজলা, সুফলা, শস্য, শ্যামলা সবুজ বাংলাদেশ নামে এ দেশের খ্যাতি ছিল। এখন আর এটা নেই।’
‘আমরা গাছ কেটে বনভূমি উজাড় করেছি। আমরা প্লাস্টিক বর্জ্য দিয়ে মাটি দূষিত করে ফেলছি। গাছপালা কমে যাওয়ায় শ্যামল ছায়া আর দেখতে পাওয়া যায় না। সবুজ শ্যামল বাংলাদেশ থেকে অনেক দূরে সরে গেছি আমরা। এগুলো এখন আমাদের কাছে ইতিহাস মনে হয়। ঢাকা শহরে পরিকল্পিতভাবে বৃক্ষ রোপণের মধ্য দিয়ে সেই ইতিহাসকে সামনে নিয়ে আসতে চাই। আবার ঢাকা শহরকে সবুজ ছায়ায় ছেয়ে দিতে চাই।’
আজ বৃহস্পতিবার মহাখালীর এ. কে. খন্দকার সড়কে ডিএনসিসি ও বন অধিদপ্তরের যৌথভাবে বৃক্ষরোপণ অভিযানে তিনি এসব কথা বলেন।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘পরিকল্পিত বৃক্ষ রোপণের মধ্য দিয়ে ঢাকাকে আবার সবুজ শ্যামল নয়নাভিরাম ঢাকায় পরিণত করা হবে। একসময় এ ঢাকা ছিল গাছ-পালায় ভরপুর। মাটি ছিল উর্বর। নিজেদের স্বার্থের কথা ভাবতে গিয়ে বনভূমি উজাড় করে ফেলেছি। এখন রাস্তায় বের হলে আর আগের মতো ছায়া পাই না। বিশুদ্ধ অক্সিজেন হাব কোথাও নেই। অসহ্য তীব্র গরমে হাঁসফাঁস করতে থাকি। প্রকৃতি তার প্রতিশোধ নিতে শুরু করেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি দাবি জানিয়েছিলাম যারা সুষ্ঠুভাবে ছাদ বাগান করবেন সেইসব বাসার মালিককে ১০ শতাংশ হারে হোল্ডিং টেক্স ছাড় দেওয়া হবে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সেই সুবিধা এখন সব সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভাকে দিচ্ছে। এটি একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত।’
‘আমাদের বাঁচার একটাই পথ, বিপুল পরিমাণ গাছ লাগাতে হবে। যেখানেই ফাঁকা জায়গা সেখানেই বৃক্ষ রোপণ করে পরিচর্যা করতে হবে। এভাবে এগিয়ে যেতে থাকলে ঢাকা হবে আবার সেই সবুজ ঢাকা এবং একটি পরিপূর্ণ অক্সিজেন হাব। যে কোনো পরিস্থিতিতে ডিএনসিসিসহ যে কোনো সংস্থাকে আর একটি গাছও না কাটার আহ্বান জানাই। কোনো কাজের জন্য গাছ কাটার দরকার হলে আসুন আমরা বসি। আলোচনা করি। বাস্তবতা বিচার করি। মনে হলো আর গাছ কেটে ফেললেন, এটা করা যাবে না।’
ডেঙ্গু পরিস্থিতি বিষয়ে আতিকুল ইসলাম বলেন, রোদ বৃষ্টি এডিস মশার বংশ বিস্তারের জন্য উপযুক্ত সময়। আমাদের অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে আমাদের বাসা-বাড়ির আঙ্গিনায় কোথাও পানি জমে থাকছে কি না। ফুলের টব, খালি বোতল, দই আইসক্রিমের কাপ, পরিত্যক্ত টায়ার, রঙের কৌটায় পানি জমে এডিস মশা বংশবিস্তার করে। দিনের পানি দিনে ফেলে দিতে হবে।
কোরবানির বর্জ্য অপসারণে করণীয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কোরবানির সময় পশুর বর্জ্য যেখানে সেখানে ফেলা যাবে না। সিটি কর্পোরেশন ১০ লাখ পরিবেশ বান্ধব পলিব্যাগ বিতরণ করবে। বর্জ্যগুলো ব্যাগে ভরে নির্দিষ্ট স্থানে রাখুন। সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মীরাই যথা সময় নিয়ে যাবে।’
বাংলাদেশ সময়: ১৬:৪৯:০৪ ৪২ বার পঠিত