মানুষের মৌলিক চাহিদা সবগুলোই ভূমির উপর নির্ভরশীল। তাই, ভূমি ব্যবস্থাপনা সংস্কার হলে, সার্বিকভাবে দেশ সংস্কার হবে। মানব সভ্যতার সূচনা লগ্নেই মানুষের প্রথম এবং প্রধান চাহিদা বা প্রয়োজনের নাম হচ্ছে “ভূমি”। ভূমিষ্ঠ হবার পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত মানুষের কাছে প্রধান নির্ভরয্যেগ্য ও মূল্যবান সম্পদ হিসেবে “ভূমি” স্বীকৃত হয়ে আসছে। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে মানুষের জীবন ধারণের জন্য মৌলিক চাহিদার প্রায় সবগুলোই ভূমির কাছ থেকেই পাওয়া যায়। আর তাই মানুষের মৌলিক চাহিদা যথাযথ নিশ্চিত করতে এই প্রশিক্ষণের আয়োজন বলেন,ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার।
আজ রাজধানীর ডেমরায় করিম জুট মিলের সভাকক্ষে ১৩৯ তম সার্ভে ও সেটেলম্যান্ট প্রশিক্ষন কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রশিক্ষণ কোর্সের আয়োজন করে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর। এই প্রশিক্ষণে প্রশাসন ক্যাডার,পুলিশ ক্যাডার, জুডিশিয়ারি ক্যাডার ও বন ক্যাডারের মোট ৬১ জন অংশগ্রহণ করেন।
ভূমি উপদেষ্টা বলেন, ভূমি প্রকৃতির অন্যতম অবদান হলেও এর ব্যবহার প্রাকৃতিক নয়। যুগে যুগে মানব সভ্যতার ও জ্ঞান-বিজ্ঞান বিবর্তনের সাথে সাথে ভূমি ব্যবহারেও এসেছে নানা বৈচিত্র্য। ফলে সময়ে সময়ে এর রক্ষণাবেক্ষণ পদ্ধতির ক্ষেত্রেও পরিবর্তন ও সংস্কার সাধিত হচ্ছে। আধুনিক বিশ্বে ভূমি, ভূমির ব্যবহার ও ভূমি ব্যবস্থাপনার সাথে জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনার প্রায় প্রতিটি বিষয় যেমন- রাজনীতি, অর্থনীতি, প্রতিরক্ষা, জাতীয় উন্নয়ন, উন্নয়ন পরিকল্পনা, কৃষি ইত্যাদি এমন ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত যে এর একটি থেকে আর একটি আলাদা করা কঠিন।
প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশে ভূমি উপদেষ্টা বলেন, আমাদের এ ছোট দেশের সীমিত ভূ-সম্পদ এবং তার উপর জনসাধারণের প্রচন্ড চাহিদা এ দেশের ভূমি সম্পদকে করেছে আরও বেশি মূল্যবান। জগতে সব সময়ই মূল্যবান জিনিস নিয়েই যত বিরোধের সূত্রপাত। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে পরস্পরের সাথে বন্ধুত্বের বন্ধন দৃঢ় হবে। এখানের প্রশিক্ষণ লব্ধ জ্ঞানকে মানুষের কল্যাণে ও রাষ্ট্রের কল্যাণে কাজে লাগাতে হবে। এছাড়া ভূমি আইন যারা করেছেন এবং যারা বাস্তবায়ন করবেন তাদের মনে রাখতে হবে মানুষের অধিকার যেন ক্ষুন্ন না হয়।
ভূ-স্বত্বের প্রতি মানুষের একটি সহজাত আকর্ষণ রয়েছে। ভূ-স্বত্বের উপর অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য মানুষ প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে যাচ্ছে। ফলশ্রুতিতে এ ভূমিকে কেন্দ্র করেই কলহ-বিবাদ, যুদ্ধ-বিগ্রহ, আন্দোলন ও বিপ্লব হয়েছে। এ কারণে যুগ যুগ ধরে ভূমি ব্যবস্থার উপর সমাজ বিজ্ঞান রাজনীতিবিদ ও পরিকল্পনাবিদদের দৃষ্টি নিবদ্ধ রয়েছে। একথা বলা বাহুল্য যে, যারাই প্রশাসনের সাথে জড়িত, বিশেষ করে যারা মাটি ও মানুষ নিয়ে কাজ করেন, যারা আইন শৃংখলা ও বিচার কাজে নিয়োজিত তাদের সকলেরই দেশের ভূমি ব্যবস্থা ও ভূমি প্রশাসন সম্পর্কে পরিচ্ছন্ন ধারণা থাকা প্রয়োজন। এ কারণেই সরকার প্রতি বছর বিসিএস ক্যাডারভূক্ত (প্রশাসন, পুলিশ, বন ও রেলওয়ে) এবং বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস এর কর্মকর্তাগণের জন্য সার্ভে ও সেটেলমেন্ট প্রশিক্ষণের আয়োজন করে থাকে।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড.মো: মাহমুদ হাসান; অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অধিদপ্তরের পরিচালক(ভূমি রেকর্ড) মো: মোমিনুর রশিদ, বিশেষ অতিথির বক্তব্য করেন পরিচালক(প্রশাসন) সৈয়দ রবিউল ইসলাম।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:১৯:৪৪ ৩ বার পঠিত