রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের হাসান নগর এলাকার ছাপাখানা ব্যবসায়ী মো. নূর আলমকে হত্যার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির কামরাঙ্গীরচর থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- মিরাজ মিয়া (২০), মো. শিপন ওরফে সম্রাট (২৫) ও মো. রিফাত (১৯)। এসময় তাদের কাছ থেকে হত্যার ঘটনায় ব্যবহৃত একটি হাতুড়ি, একটি কাঁচি ও দুটি চাকু উদ্ধার করা হয়।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয় , ভিকটিম মো. নূর আলম কামরাঙ্গীরচর থানার হাসান নগর ভান্ডারী মোড়ে একটি দোকান ভাড়া নিয়ে ফেব্রিক্সের ব্যবসা করে আসছিলেন। গত ৬ ডিসেম্বর সকালে ভিকটিম নূর আলম তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার আগে তার স্ত্রীকে ফোন করে। এসময় ভিকটিমের স্ত্রী কয়েকজন লোকের সাথে স্বামীর বাকবিতন্ডার কথা শুনতে পান। এরপর থেকে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। ঘটনার পর থেকে মো. নূর আলম নিখোঁজ থাকায় তার জামাতা আতাউল্লাহ খান সজিব কামরাঙ্গীরচর থানাকে বিষয়টি জানান ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘটনাটি জানার পর কামরাঙ্গীরচর থানা পুলিশ প্রাথমিক তদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে। পরে মঙ্গলবার কামরাঙ্গীরচরে ছাপাখানা থেকে কর্মচারী মিরাজকে গ্রেফতার করে থানার একটি দল। একই দিন কামরাঙ্গীরচরের ঝাউরাহাটি থেকে রিফাতকে ও কোতয়ালী থানার সদরঘাট এলাকা থেকে শিপনকে গ্রেফতার করা হয়।
আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, গত শুক্রবার ভোরে গ্রেফতারকৃত শিপন, মিরাজ, রিফাত ও পলাতক জিহাদসহ অজ্ঞাত ২/৩ জনের সহায়তায় নূর আলমকে মাথায় হাতুড়ি দিয়ে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে চাকু দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে এবং মৃতদেহ বাথরুমে নিয়ে দুই খণ্ড করে। মৃতদেহ যাতে কেউ খুঁজে না পায় সেজন্য মৃতদেহ গুম করার উদ্দেশে মৃতদেহের খন্ড দুটি পলিথিন ও কাপড় দিয়ে পেচিয়ে একটি বস্তায় ভরে ছাপাখানার ভেতরে টেবিলের নিচের মেঝে ভেঙ্গে মাটি চাপা দেয়। এরপর জায়গাটি বালু ও সিমেন্ট দ্বারা ঢালাই করে।
পরে পুলিশ গ্রেফতারকৃতদের দেখানো মতে পুলিশ ছাপাখানার ভেতর থেকে মেঝের ঢালাই ভেঙ্গে ভিকটিমের দুই খন্ড মৃতদেহ উদ্ধার করে। হত্যায় ব্যবহৃত হাতুড়ি ও চাকু এবং অন্যান্য আলামত পুলিশ উদ্ধারের পর জব্দ করেছে। লাশের ময়না তদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের জামাতা আতাউল্লাহ খান সজিব বাদী হয়ে কামরাঙ্গীরচর থানায় গত ১০ ডিসেম্বর একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ ঘটনায় পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও অন্যান্য আসমিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয় ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:২২:৫৮ ১২ বার পঠিত