আকস্মিকভাবে দেশজুড়ে সামরিক আইন জারি করার কথা ঘোষণা করেছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল। ইতোমধ্যেই তিনি এক দফায় অভিশংসন চেষ্টার সম্মুখীন হয়েছেন।
এবার তার দেশ ছাড়ার ওপরেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এরপরও পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর দায়িত্বে রয়েছেন প্রেসিডেন্ট ইউন। মূলত বিরোধিতা ও টানাপোড়েনের মধ্যেও তিনি এখনও ক্ষমতার মূল চাবিকাঠি ধরে রেখেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকা।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জোর দিয়ে বলেছে, প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল সোমবারও দেশের সশস্ত্র বাহিনীর দায়িত্বে রয়েছেন। যদিও গত সপ্তাহে সামরিক আইন জারির চেষ্টার পরে বিচার মন্ত্রণালয় তার ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
আইনজ্ঞরা এটিকে উচ্চমাত্রার সাংবিধানিক সংকট বলে অভিহিত করেছেন। এই সংকট ঘটনাটিকে আরও জটিল করেছে। যদিও ইউনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে এবং তার নিজের দলের প্রধান বলেছেন, তিনি আর রাষ্ট্রীয় বিষয়ে জড়িত থাকবেন না; তবে রক্ষণশীল আইনপ্রণেতারা তার অভিশংসনের বিরোধিতা অব্যাহত রেখেছেন এবং সোমবার দিনের শেষ পর্যন্ত ইউন ক্ষমতার মূল চাবিগুলো ধরে রেখেছেন বলে মনে হচ্ছে।
বিদ্রোহের সন্দেহে থাকা একজন প্রেসিডেন্ট কীভাবে দেশের সশস্ত্র বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন— একজন সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, “আইনত কর্তৃত্ব বর্তমান কমান্ডার ইন চিফের কাছেই থাকবে।”
ইউন প্রেসিডেন্টের অন্যান্য দায়িত্ব পালনও অব্যাহত রেখেছেন, যেমন সিনিয়র কর্মকর্তাদের পদত্যাগ গ্রহণ এবং অন্যদের নিয়োগ প্রদান। তিনি ও তার রক্ষণশীল মিত্ররা যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তাতে তিনি কী দায়িত্ব পালন করেছেন, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
এর আগে গত রোববার পিপিপি প্রধান হান ডং-হুন বলেন, প্রধানমন্ত্রী হান ডাক-সু দলের সাথে পরামর্শ করে রাষ্ট্রীয় বিষয়াদি পরিচালনা করবেন। উভয়ের কেউই নির্বাচিত পদে নেই।
হানকুক ফরেন ল্যাঙ্গুয়েজ ইউনিভার্সিটির সাংবিধানিক আইনের অধ্যাপক জিওন হাক-সিওন বলেন, প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা অপসারণের একমাত্র প্রতিষ্ঠিত প্রক্রিয়া হলো— অভিশংসন বা পদত্যাগ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিউলভিত্তিক আরেকজন আইনের অধ্যাপক বলেন, ইয়ুন এবং তার দল সম্ভবত প্রেসিডেন্টের শূন্যতা এড়ানোর চেষ্টা করছেন। কারণ এমন পরিস্থিতিতে সংবিধান অনুসারে ৬০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
অবশ্য গত শনিবার দেওয়া এক ভাষণে ইউন সুক ইওল উদ্বেগ সৃষ্টির জন্য ক্ষমা চেয়েছেন এবং বলেছেন, ভবিষ্যতের শাসন “আমাদের দল এবং সরকার যৌথভাবে পরিচালনা করবে।”
বাংলাদেশ সময়: ১২:০৫:৩৫ ৭ বার পঠিত