কালা মানিক চাঁদপুরের সবচেয়ে বড় কোরবানির পশু। ওজন প্রায় ১ হাজার ৮০০ কেজি। গত চার বছর লালনপালনে এর পেছনে ব্যয় হয়েছে ২০ লাখ টাকারও বেশি। তবে ক্রেতা সংকটে গত বছর বিক্রি হয়নি। তাই এবারও কালা মানিককে ক্রেতার হাতে তুলে দিতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছেন খামার মালিক।
সরেজমিনে দেখা গেছে, একটু সুযোগ পেলেই ভোঁ দৌড়। তাই শক্ত দড়ি বেঁধেও লাগাম টেনে ধরা কঠিন। চাঁদপুরে ফরিদগঞ্জ উপজেলার পাটোয়ারী বাজারে মায়ের দোয়া ডেইরি ফার্মে লালনপালন করা হচ্ছে বিশাল আকৃতির এ কোরবানির পশু।
গায়ের রং কুচকুচে কালো। তাই নাম তার কালা মানিক। ঘাস, খৈল, ডাল আর গমের ভু্সি তার প্রিয় খাবার। পানি ছাড়াই প্রতিদিনের খাবারের পরিমাণ ২৫ থেকে ৩০ কেজি। শরীরের যত্নে শ্যাম্পু দিয়ে এ গরমে গোসল করাতে হয় দুই বেলা। রাখতে হয় বৈদ্যুতিক পাখার নিচে।
তবে গত বছর খামারি কালা মানিককে বিক্রি করতে গিয়ে বিপাকে পড়েন। ক্রেতা সংকটে বিক্রি হয়নি। অথচ গত চার বছরে কালা মানিককে লালন পালন করতে ব্যয় হয়েছে ২০ লাখ টাকারও বেশি। তবে এবার উপযুক্ত দামেই ছেড়ে দিতে চান এমনটাই জানান মায়ের দোয়া ডেইরি ফার্মের পরিচর্যাকারী রেজাউল করিম।
তিনি জানান, কোনো ধরনের কেমিক্যাল ছাড়া দেশি খাবার দেয়া হচ্ছে কালা মানিককে। এরই মধ্যে গত চার বছরে তাকে লালনপালন করতে গিয়ে খরচ গুনতে হয়েছে প্রায় ২০ লাখ টাকা। তাই এখন কিছু লাভ পেলেই ছেড়ে দেয়া হবে কালা মানিককে। তবে কেনার জন্য নয়, অনেকেই উৎসুক মনে দেখতে আসেন কালা মানিককে।
খামারে আসা এমন কয়েকজন জানান, এর আগে এত বড় আকারের কোরবানির পশু তারা কখনো দেখেননি। তবে দাম সাধ্যের মধ্যে না থাকায় কালা মানিককে দেখেই চলে যেতে হচ্ছে তাদের।
ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে তোলা এমন খামারিদের টিকে থাকার জন্য সরকারি সহায়তার দাবি জানান ফরিদগঞ্জ উপজেলার বালিথুবা পূর্ব ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ।
তিনি জানান, বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে খামার মালিকরা তেমন ভালো অবস্থায় নেই। বেড়েছে পশু খাদ্যের দাম। এ ছাড়া লালন পালন করা পশুর ন্যায্য দামও পাচ্ছেন না তারা।
অন্যদিকে এমন অবস্থায় আকারে বড় ধরনের কোরবানির পশু বিপণনের জন্য অনলাইন প্লাটফরম বেছে নেয়ার পরামর্শ দেন জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগে কর্মরত ডা. মুকবুল হোসেন।
তিনি বলেন, ‘সরকারি বেসরকারি মিলিয়ে এখন অনেক পেজ আছে। যেখানে কোরবানির পশু কেনাবেচা হয়ে থাকে।’
সংশ্লিষ্ট বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবারের কোরবানির ঈদে জেলায় মোট পশুর চাহিদা ৭০ হাজারেও বেশি। এর বিপরীতে ঘাটতি রয়েছে প্রায় ৩৫ হাজার পশু।
বাংলাদেশ সময়: ১৪:৩৪:৫৪ ৩৯ বার পঠিত