মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের জন্য টেকসই উন্নয়ন নীতি ও কৌশল গ্রহণ করার জন্য অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি) সদস্যদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, অর্থনৈতিক ও ডিজিটাল ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে চাহিদা অনুযায়ী সেবার উদ্ভাবন করতে হবে। কর্মক্ষেত্রে নারীর সক্ষমতা বৃদ্ধি, প্রযুক্তিগত সহায়তায় দক্ষতা অর্জন এবং আর্থিক সুবিধাদি প্রদানে সরকার, জাতিসংঘ, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং সিভিল সোসাইটির মধ্যে সহযোগিতা জোরদার করতে হবে।
ইন্দিরা আরো বলেন, নারীর অগ্রযাত্রা ও উন্নয়নে পরিবেশবান্ধব, টেকসই এবং স্মার্ট প্রকল্প গ্রহণ করা দরকার যাতে নারীরা বেশি করে কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে এবং মহিলাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে।
ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা আজ মিশরের কায়রোতে ওআইসি’র উইমেন ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের মিনিস্ট্রিয়াল সেশনে বক্তৃতাকালে এ আহ্বান জানান। আজ ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
এই সেশনের থিম ছিল “আর্থিক ও ডিজিটাল অন্তর্ভূক্তির মাধ্যমে নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য পরিবেশবান্ধব ও টেকসই প্রকল্প”। নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে ওআইসি’র সদস্য রাষ্ট্রভূক্ত দেশগুলোর সমন্বয়ে ২০২০ সালে উইমেন ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডাব্লিউডিও) গঠিত হয়। বর্তমানে এর সদস্য সংখ্যা ১৯টি। বাংলাদেশ ২০২১ সাল থেকে এ সংগঠনের সদস্য।
ডাব্লিউডিওর নির্বাহী পরিচালক ড. মায়া মুরসির সভাপতিত্বে ডাব্লিউডিও’র সদস্য রাষ্ট্রের মহিলা বিষয়ক মন্ত্রী, ওআইসি ও বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিবৃন্দ কাউন্সিল সভায় বক্তব্য রাখেন।
ইন্দিরা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সংবিধানে নারীদের সমান অধিকার ও সমমর্যাদা নিশ্চিত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আর্থিক ও ডিজিটাল অন্তর্ভূক্তির মাধ্যমে জেন্ডার সমতা অর্জন, নারীর ক্ষমতায়ন এবং জেন্ডার সম্পর্কিত এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারীর ক্ষমতায়নে অসামান্য অবদানের জন্য গ্লোবাল উইমেনস লিডারশিপ, প্ল্যানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন এবং এজেন্ট অব চেঞ্জ অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হয়েছেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করেছেন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের রূপকল্প ঘোষণা করেছেন । তিনি তথ্য ও প্রযুক্তি খাতে নারীর অংশগ্রহণ ২০৩০ সালে ত্রিশ শতাংশে ও ২০৪১ সালে পঞ্চাশ শতাংশে উন্নীত করার অঙ্গীকার করেছেন।
তিনি বলেন, দেশের তৃণমূল পর্যায়ে গ্রামীণ নারী উদ্যোক্তাদের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে প্রায় আট হাজার ডিজিটাল সেন্টার প্রতিষ্ঠা এবং প্রান্তিক নারীদের ডিজিটাল ও আর্থিক সেবার জন্য নারী নেতৃত্বাধীন এজেন্ট নেটওয়ার্ক ‘সাথী’ প্রবর্তনসহ অন্যান্য বেশ কিছু তথ্য-প্রযুক্তি নির্ভর প্রকল্পের বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
ইন্দিরা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বাংলাদেশের সুদূরপ্রসারী উদ্যোগের স্বীকৃতির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের সর্বোচ্চ পরিবেশ সম্মান, চ্যাম্পিয়নস অফ দ্য আর্থে ভূষিত করেছেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধ, টেকসই বনায়ন ও জীবিকা উন্নয়নের জন্য সরকার উপকূলীয় এলাকায় বনায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। উপকূলীয় এলাকায় বনায়ন করা হয়েছে। সামাজিক বনায়ন কর্মসূচিতে পঞ্চাশ শতাংশ সুবিধাবঞ্চিত গ্রামীণ দরিদ্র ও ভূমিহীন নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, সরকার বাংলাদেশ ডেল্টা প্লান ২১০০, মুজিব ক্লাইমেট প্রসপারিটি প্লান ২০৩০ ও জেন্ডার রেস্পন্সিভ কোস্টাল এ্যাডাপ্টেশন প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করছে।
কায়রোর দি নীল রিটজ কার্ল্টন হোটেলে ৬ থেকে ৮ জুন মিনিস্ট্রিয়াল কাউন্সিল সেশনে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, কুয়েত, পাকিস্তান, মালদ্বীপ, মিশর, ক্যামেরুনসহ ১৯টি দেশের মন্ত্রী, সিনিয়র অফিসিয়াল ও প্রতিনিধিবৃন্দ অংশগ্রহণ করেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭:৪৪:২৪ ৪৪ বার পঠিত