রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড) থেকে যে পরিমাণ পণ্য রফতানি হয়েছে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) তা ডাবল কাউন্ট (দুবার গণনা করা বা দুবার যোগ করা) করায় রফতানি আয়ের তথ্যে গরমিল হয়েছে বলে জানালেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।
রোববার (৭ জুলাই) রাজধানীর একটি হোটেলে ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি), বাংলাদেশ আয়োজিত এক সেমিনারে কথা বলেন তিনি।
সালমান বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাজই হচ্ছে, যারা বেশি রাজস্ব দেয় তাদের ওপর আরও ট্যাক্সের বোঝা চাপানো। এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। এনবিআরকে ডিজিটালাইজড করা গেলে এ প্রবণতা কমবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে ইপিবির সমন্বয়েরও অভাব আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইপিজেড থেকে যে পরিমাণ পণ্য রফতানি হয়েছে, ইপিবি তা ডাবল গণণা করায় রফতানি আয়ের তথ্যে গরমিল হয়েছে।
এর আগে, গত বুধবার (৩ জুলাই) ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ের ব্যালেন্স অব পেমেন্ট প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাতেই পরিষ্কার হয়েছে, ইপিবির বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে করে আসা রফতানি আয় ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখানোর অভিযোগ। এনবিআরের সংশোধিত পদ্ধতিতে গেলো অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত রফতানি পণ্য জাহাজীকরণের তথ্যে মেলে এর প্রমাণ।
দেশে প্রকৃতপক্ষে রফতানি কমলেও ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখিয়ে আসছিল ইপিবি। এমন বিপরীতমুখী চিত্র ওঠে এসেছে এনবিআরের হালনাগাদ তথ্যে। এনবিআর সংশোধিত পদ্ধতিতে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের এপ্রিল পর্যন্ত রফতানি পণ্য জাহাজীকরণের তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংক ও ইপিবিতে পাঠিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে ৩ হাজার ৩৬৭ কোটি ডলারের পণ্য জাহাজীকরণ করা হয়েছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় যা ৬.৮০ শতাংশ কম। অথচ ইপিবি বলছে, এপ্রিল পর্যন্ত রফতানি হয়েছে ৪ হাজার ৭৪৭ কোটি ডলারের পণ্য। অর্থাৎ, পণ্য জাহাজীকরণেই পার্থক্য ১৩.৮০ বিলিয়ন ডলার।
এর আগে, ২০২২-২৩ অর্থবছরেরও জুলাই-এপ্রিল সময়ে ৪ হাজার ৫৬৮ কোটি ডলার রফতানি দেখিয়েছিল ইপিবি। সংশোধিত তথ্য অনুযায়ী, আসলে পণ্য জাহাজীকরণ হয় মাত্র ৩ হাজার ৬১৪ কোটি ডলার। অর্থাৎ, ইপিবির সঙ্গে হালনাগাদ তথ্যের পার্থক্য ৯৫৪ কোটি ডলার।
ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে পণ্য রফতানি দেখানো হয় ৫ হাজার ৫৫৬ কোটি ডলার। আর দেশে আসে ৪ হাজার ৩৫৭ কোটি ডলার। পার্থক্য থেকে যায় ১ হাজার ১৯৯ কোটি ডলার। ২০২১-২২ অর্থবছরে ইপিবির হিসাবে রফতানি হয়েছিল ৫ হাজার ২০৮ কোটি ডলার; আর দেশে আসে ৪ হাজার ৩৬০ কোটি ডলার।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:৫৭:৩১ ৬২ বার পঠিত