আম রফতানি বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ। তিনি বলেন, বাংলাদেশের আম স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয় এবং বিদেশেও খুবই জনপ্রিয়। প্রতিবছর দেশ থেকে লক্ষাধিক টন আম রফতানির সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু আমরা মাত্র তিন হাজার টনের মতো আম রফতানি করতে পারি। এক্ষেত্রে মূল প্রতিবন্ধকতা ছিল উত্তম কৃষি চর্চা (গ্যাপ) অনুসরণ না করা। সেজন্য গ্যাপ মেনে আমরা নিরাপদ আম উৎপাদন শুরু করেছি। আজকে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত এ কার্যক্রম ঘুরে দেখেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার কান্দবোনা গ্রামে গ্যাপ অনুসরণ করে পরিচালিত আমচাষী রুহুল আমিনের আমবাগান পরিদর্শন করেন ঢাকায় নিযুক্ত প্রায় ২০টি দেশের রাষ্ট্রদূত ও মিশনপ্রধান। তারা বাংলাদেশের এ উদ্যোগের প্রশংসা করেন এবং নিরাপদ আম উৎপাদন কার্যক্রম দেখে মুগ্ধ হন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, আমরা বেশি পরিমাণ আম রফতানির চেষ্টা করছি। এ পরিদর্শনের মাধ্যমে রাষ্ট্রদূতদের উৎসাহিত করছি যাতে করে বেশি পরিমাণ আম রফতানি ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব হয়। আমি মনে করি, এ ভিজিটের ফলে আম রফতানি বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে।
কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মো. আব্দুল ওয়াদুদ, স্থানীয় সংসদ সদস্য মুহা. জিয়াউর রহমান, কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার, পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মো. বখতিয়ার এবং ব্রুনাই দারুস সালাম, অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, স্পেন, পাকিস্তান, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ভুটান, ভিয়েতনাম, শ্রীলংকা, মিয়ানমার ও লিবিয়ার রাষ্ট্রদূতরা এ পরিদর্শনে অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া এ টিমে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) বাংলাদেশ প্রতিনিধিও ছিলেন।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, কৃষি, বাণিজ্য এবং পররাষ্ট্র তিন মন্ত্রণালয় মিলে আমরা আমকে বিদেশে ব্র্যান্ডিং করব। যাতে বিদেশে রফতানি আরো বৃদ্ধি পায়। আম রফতানির ক্ষেত্রে আমাদের বহু সমস্যা আছে, থাকতে পারে। এগুলো আমরা সমাধান করব।
তিনি বলেন, গ্যাপ না থাকলে চাইলেই বিদেশে আম রফতানি করা যায় না। আমরা গ্যাপ বাস্তবায়ন শুরু করেছি। সামনে কোনো সমস্যা থাকবে না।
কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার বলেন, আমরা গ্যাপ শুরু করেছি। এটি সারা বিশ্বের প্রতিনিধিরা দেখল। যা আমাদের রফতানি বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, আমাদের আমের কোয়ালিটি নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তবে সব দেশেই ফাইটোস্যানিটারি ইস্যু আছে, এর একটা নির্দিষ্ট স্ট্যান্ডার্ড আছে। গ্যাপ মেনে আম উৎপাদন করলে বিশ্বের সব দেশেই আম রফতানি করা যাবে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের সুস্বাদু ও সম্ভাবনাময় আম রফতানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষি মন্ত্রণালয় নানাবিধ উদ্যোগ গ্রহণ ও তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে গ্যাপ অনুসরণ করে নিরাপদ আমের উৎপাদন কার্যক্রম ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও মিশনপ্রধানের নিকট তুলে ধরতে আমবাগান পরিদর্শনের আয়োজন করে মন্ত্রণালয়।
উল্লেখ্য, বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের ৩৮টি দেশে আম রফতানি হচ্ছে; যদিও এর পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম। ২০২১ সালে বিশ্বে প্রায় ১.৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের আম রফতানি হয়। আর বাংলাদেশ থেকে ২০২১-২২ অর্থবছরে ১ হাজার ৭৫৭ মেট্রিক টন আম রফতানি এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৩ হাজার ১০০ মেট্রিক টন আম রফতানি হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮:৪৪:৪০ ১৪ বার পঠিত