মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মোঃ আব্দুর রহমান বলেছেন, আসন্ন ঈদুল আজহা (কুরবানীর ঈদ) উপলক্ষ্যে সীমান্ত দিয়ে চোরাই পথে অবৈধভাবে কুরবানীর পশু বিশেষ করে গরু বাংলাদেশে যাতে ঢুকতে না পারে সেজন্য কঠোরভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে।
তিনি আজ রোববার রাজধানীর শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেইরি সায়েন্স বিভাগের উদ্যোগে ‘বিশ্ব দুগ্ধ দিবস-২০২৪’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ-৫ আসনের সংসদ সদস্য কৃষিবিদ নজরুল ইসলাম, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া, কোষাধ্যক্ষ ড. মোঃ নজরুল ইসলাম ও বাংলাদেশ কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ। এতে সভাপতিত্ব করেন শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এনিমেল সায়েন্স এন্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. কে বি এম সাইফুল ইসলাম।
প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আব্দুর রহমান বলেন, ‘কুরবানিকে সামনে রেখে কিছু দুষ্ট ও মতলববাজ লোক আমাদের দেশীয় খামারিদের নিরুৎসাহিত করার জন্য চোরাই পথে অবৈধভাবে কিছু কিছু গরু আনছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
তিনি বলেন, এ ব্যাপারে সরকার অত্যন্ত কঠোর অবস্থান নিয়েছে এবং এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ করা হবে। তাই দেশীয় খামারিদের এ ব্যাপারে ভাবনার কোনো কারণ নেই। আসন্ন ঈদ উল আজহা যাতে মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা উৎসবের সাথে ও সুন্দরভাবে উদযাপন করতে পারে সে ব্যাপারে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সতর্ক রাখবে এবং উৎসব মুখর পরিবেশে যাতে ঈদুল আজহা উদযাপিত হতে পারে সেজন্য সার্বিক তত্ত্বাবধানেও থাকবে এই মন্ত্রণালয়।’
প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, ১৯৭৩ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অস্ট্রেলিয়া থেকে ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড় আনয়নের মাধ্যমে গবাদি পশুর জাত উন্নয়নের মধ্যদিয়ে দুধের উৎপাদন বাড়ানোর উৎদ্যোগ গ্রহণ করেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শুধু একটা স্বাধীন ভূখ-ই দিয়ে যান নি। বরং স্বাধীন ভূখ-কে কিভাবে খাবারে, পুষ্টিতে, ভাতে, মাছে, উন্নয়নে সর্বাঙ্গীণভাবে উন্নত দেশে পরিণত করা যায়, সে ভাবনাটিও তিনি সঙ্গে-সঙ্গে করেছেন।
আব্দুর রহমান বলেন, ‘জাতির পিতার দূরদৃষ্টি, তার মানবপ্রেম, শিশুদের প্রতি তার ভালোবাসা এবং পুষ্টিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে এই জাতিকে একটি সাবলম্বী জাতি হিসেবে গড়ে তোলার যে ভাবনা তা সত্যিই আমাদের সবাইকে অবাক করে দেয়। আজকে তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বাবার আদর্শ বুকে ধারণ করে শত কষ্টের পাহাড় ডিঙিয়ে সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে সামনে এগিয়ে যাচ্ছেন।’
তিনি বলেন, দুধের উৎপাদন বাড়ালে দুধ খাওয়া বাড়বে, এমনটি নয় বরং দুধ খাওয়ার প্রবণতা বাড়লেই দুধের উৎপাদন বাড়বে। কারণ চাহিদা বাড়লেই সরবরাহ বাড়ানোর বিষয়টি সামনে আসে। দুধের উৎপাদন বাড়িয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে বলেও মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
গ্রামে প্রান্তিক খামারিরা দামের অভাবে অনেক সময় দুধ উৎপাদনে উৎসাহ হারিয়ে ফেলে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, দুধের দাম কম হলেও দুধ থেকে উৎপন্ন মিষ্টির দাম অনেক বেশি। দুগ্ধ শিল্পের সাথে যারা জড়িত, তারা অনেক সময় ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না বলে বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ পাওয়া যায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘খামারিরা যাতে তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পায় সেরকম একটা ব্যবস্থা আমাদের তৈরি করতে হবে’।
শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেইরি সায়েন্স এন্ড অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রীতে স্নাতক ডিগ্রীধারীদের বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইন্সটিটিউটে নিয়োগ না দেয়ার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মন্ত্রী বলেন, বিষয়টি নিয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পেলে গভীরভাবে পর্যালোচনা করে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২২:৪১:৫০ ২১ বার পঠিত