সোমবার, ১৩ মে ২০২৪

প্রবাসী ব্যবসায়ীদের নিয়ে এনবিআরে অনেক সমস্যা রয়েছে: নানক

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারি » প্রবাসী ব্যবসায়ীদের নিয়ে এনবিআরে অনেক সমস্যা রয়েছে: নানক
সোমবার, ১৩ মে ২০২৪



প্রবাসী ব্যবসায়ীদের নিয়ে এনবিআরে অনেক সমস্যা রয়েছে: নানক

পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, বিদেশি রাষ্ট্রদূত ও প্রবাসে ব্যবসা করা বাঙালিরাও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও কাস্টমসের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ করে। এনবিআর এবং কাস্টমসের যে সমস্যাগুলো রয়েছে এটা বড় সমস্যা। আসন্ন মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করব।

সোমবার (১৩ মে) সচিবালয়ে পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) প্রতিনিধিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এ কথা বলেন মন্ত্রী।

বিজিএমইএর পক্ষ থেকে এনবিআর ও কাস্টমসের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ তোলার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, আমরা আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা চিহ্নিত করেছি। সমস্যা যখন চিহ্নিত সমাধান হতে বাধ্য। সুতরাং আমরা সমাধানের সূত্রগুলো বের করব এবং সমাধানগুলো খুব তাড়াতাড়ি করতে হবে।

তিনি বলেন, পোশাক শিল্পকে আমরা শুধু বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সব থেকে বড় ক্ষেত্র হিসেবে দেখছি না, সমাজ পরিবর্তনেও আপনারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। দারিদ্র্য বিমোচনেও আপনারা মুখ্য ভূমিকা পালন করছেন। প্রায় ৪২ লাখ শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে। এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত অধিকাংশ শ্রমিক নারী। এই শিল্পের কল্যাণে নারীর ক্ষমতায়ন ফিরে এসেছে। নারীরা স্বপ্ন দেখতে শিখেছে। কাজেই সেই শিল্পকে আমাদের অগ্রাধিকার দিতে হবে।

পাটমন্ত্রী বলেন, কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত এনবিআর সম্পর্কে এবং কাস্টমসের হয়রানি নিয়ে কথা বলেছেন। সব জায়গা থেকে একটি অভিযোগ আসছে। আমি সম্প্রতি ওমরা করে এসেছি। সৌদি আরবে ব্যবসায়ীরা জোর করেই আমার সঙ্গে বসেছিলেন। বাঙালি ব্যবসায়ীরা সেখানে দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। সেখান থেকেও একই ধরনের অভিযোগ এসেছে।

অভিযোগ সম্পর্কে নানক বলেন, অভিযোগ মূলত দুটি। একটি হলো রেমিটেন্স পাঠানো, আরেকটি তারা যে ব্যবসা করে তারা যে সব মালামাল পাঠায় তা নিয়ে চট্টগ্রাম কাস্টমস ও এনবিআরের সমস্যা। সংস্থা দুটির যে সমস্যাগুলো রয়েছে এটা বড় সমস্যা। সামনের মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করব।

বিজিএমইএর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করে পূর্ণভাবে প্রস্তুত না করে বাইরে কোথাও শিল্প করতে দেয়া যাবে না, এটা শিল্পনীতি হতে পারে না। আপনারা নগদ সহায়তা প্রদান ২০২৬ সাল পর্যন্ত বলবৎ রাখার দাবি জানিয়েছেন। আমাদের টার্গেটে পৌঁছাতে হলে বিশ্ববাজারে টিকে থাকতে হলে এই নগদ সহায়তার বিষয়টি থাকতে হবে।

এর আগে বিজিএমইএ সভাপতি এসএম মান্নান (কচি) বলেন, রানা প্লাজা দুর্ঘটনার সময় আমরা মাত্র ২৩ বিলিয়ন ডলার রফতানি করছিলাম। ৮টা ফ্যাক্টরি ছিল মাত্র গ্রিন ফ্যাক্টরি। প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের সহযোগিতায় আজকে আমরা এ পর্যায়ে এসে ৪৭ বিলিয়ন ডলার রফতানি করতে পেরেছি। আজকের ২১৫টি গ্রিন ফ্যাক্টরি। আরও ৩০০ গ্রিন ফ্যাক্টরির পথে আছে। অর্থাৎ বিশ্বের সবচেয়ে বেশি গ্রিন ফ্যাক্টরি আজকে বাংলাদেশে। বাংলাদেশ আজকে নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে সব থেকে হয়রানির জায়গা এনবিআর। এনবিআরের চেয়ারম্যান অত্যন্ত সৎ একজন। উনি একজন সৎ কিন্তু উনার নিচে যারা আছেন তারা অসৎ। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ না করলে অডিট হয় না। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ না করলে আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয়। এতে করে নির্দিষ্ট সময়ে আমরা আমাদের মাল আমদানি করতে পারছি না, রফতানিও করতে পারছি না।

বিজিএমইএ সভাপতি আরও বলেন, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আইনি কোনো বাধা থাকে না। কিন্তু যোগাযোগ না করলেই হয়রানির শিকার হতে হয়। আমরা যাতে আইন মেনেই সুন্দর সুষ্ঠুভাবে ব্যবসা করতে পারি তার দাবি জানাচ্ছি। আমরা হয়রানি মুক্ত ব্যবসা করতে চাই।

এ সময় ২০২৬ সাল পর্যন্ত পোশাক রফতানিতে নগদ সহায়তা বহাল রাখার দাবি জানান বিজিএমইএ সভাপতি। পাশাপাশি সোর্স ট্যাক্স ১ শতাংশ থেকে কমিয়ে দশমিক ৫০ শতাংশ করার দাবি জানান।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক একটি সার্কুলার জারি করেছে অর্থনৈতিক অঞ্চলের বাহিরে শিল্প করা যাবে না। ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে মাত্র তিনটি চালু হয়েছে। অর্থনৈতিক অঞ্চল চালু না করেই বাহিরে শিল্প করা যাবে না, এমন নির্দেশনা দিলে বিনিয়োগ বন্ধ হয়ে যাবে। অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই এই সার্কুলার তুলে নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬:৪১:০৮   ২২ বার পঠিত