ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগেল ওয়াংচুক আজ নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে অবস্থিত বাংলাদেশ স্পেশালাইজড ইকোনমিক জোন (জাপান ইপিজেড) পরিদর্শন করেছেন।
সকাল ১১ টায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে তিনি জাপান ইপিজেডে এসে পৌঁছান। পরে বেজার কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভায় যোগ দেন। সেখানে বেজা কর্মকর্তারা ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগেল ওয়াংচুককে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে কি কি সুবিধা ভুটান পাবে তা তুলে ধরেন।
এরই মধ্যে ভুটানের রাজার বাংলাদেশ সফর উপলক্ষে রংপুরের কুড়িগ্রামে ২১১ একর ভূমির উপর ভুটানকে একটি ইপিজেড করার জন্য জমি বরাদ্দ দেয়ার বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার জাপান ইপিজেডে বিনিয়োগকারীদের কি কি সুবিধা প্রদান করছে সেটি সরজমিনে দেখানো হয় ভুটানের রাজাকে। গ্যাস বিদ্যুৎ টেলিকম ব্যবস্থাপনাসহ সকল সুবিধার ওয়ানস্টপ সার্ভিস সুবিধার বিষয়টি তুলে ধরা হয়।
ভুটানের রাজাকে বেজার কর্মকর্তারা জাপান ইপিজেডে তুরস্কের বিনিয়োগে নির্মিত সিঙ্গার রেফ্রিজারেটর কোম্পানি ঘুরে দেখান। জাপান ইপিজেড ঘুরে এবং সিঙ্গারের কোম্পানিটি দেখে ভুটানের রাজা বেশ খুশি হয়েছেন বলে জানান বেজার চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ।
তিনি বলেন, ভুটানের সাথে রংপুরের কড়িগ্রামে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চলে জায়গা বরাদ্দ দেয়ার জন্য এরই মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। ওই ইপিজেডে ভুটান কি ধরনের ইন্ডাস্ট্রি নির্মাণ করবে সেটি ধারণা নিতেই বাংলাদেশ স্পেশালাইজড ইকোনমিক জোন যেটি জাপানি ইকোনমিক জোন হিসেবে পরিচিত সেটি পরিদর্শন করেছেন।
ভুটানের উদ্যোক্তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। ভুটানে জমির পরিমাণ কম থাকায় তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করবে।
জাপানী রাষ্ট্রদূত জানান, বাংলাদেশ স্পেশালাইজষ্ট ইকনোমিক জোনে বিনিয়োগের সুযোগ সুবিধা দেখে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন ভুটানের রাজা। জাপানের পাশাপাশি ভুটানও বাংলাদেশে বিনিয়োগ করবে। মূলত বিনিয়োগের পরিবেশ ও সার্বিক সুবিধার বিষয়টি দেখার জন্যই তিনি এই পরিদর্শন করেছেন।
সিঙ্গারের ফ্যাক্টরিটি ভিজিট করে ভুটানের রাজা মুগ্ধ হয়েছেন বলে জানান সিঙ্গার অথরিটি অফিসার হাকান। তিনি ভুটানের রাজাকে সিঙ্গার ইন্ডাস্ট্রি নির্মাণের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।
হাকান বলেন, এই নির্মাণের সাথে বাংলাদেশের ৩০০ শ্রমিক কাজ করছে। এটি পুরোপুরি নির্মাণ শেষ হলে উৎপাদনের প্রায় তিন হাজার শ্রমিকের কর্মসংস্থান হবে।
এ দিকে বাসস’র মুন্সীগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শনের আগে পদ্মাসেতু পরিদর্শন করেছেন। তিনি গাড়ি থকে নেমে সেতুর উপর টানা ১০ মিনিট অবস্থান করেন। বিশাল এই সেতুর পাশাপাশি চৈত্রে পদ্মার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করেন রাজা।
বাঙালির সক্ষমতার স্মারক পদ্মা সেতু। শুধু বাঙালির মর্যাদার প্রতীকই নয় আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলেও এই সেতু ঘিরে রয়েছে আলোচনা আর কৌতুহল। তাই ভূটানের রাজা পরিদর্শন করলেন এই সেতু। সেতুর মাঝামাঝি ১৮ নম্বর পিয়ারের কাছে গাড়ি থামিয়ে নেমে পরেন ভূটানের রাজা। তিনি টানা ১০ মিনিট ধরে সেতুতে অবস্থান করেন। পায়ে হাটেন সেতুতে, সেতু থেকে রৌদ্র উজ্জ্বল সকালে বসন্তে পদ্মার রুপ প্রত্যক্ষ করেন। এই সময় সেতুতে ছবিও তুলেন ভূটানের রাষ্ট্র প্রধান। পদ্মা সেতুতে ভিনেদশী রাজার আগমনে খুশি পদ্মা পারের মানুষ।
জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক সেতুর সার্ভিস এরিয়া-২ এ গমন করলে সেতু কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসন তাকে স্বাগত জানান। সেখানে সেতু সম্পর্কে ব্রিফ করেন প্রকল্প পরিরচালক। ভুটানের রাষ্ট্রদূত রিনচেন কুয়েনসিল-সহ দেশটির অন্যান্য উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। রাজার আগমন উপলক্ষে পুরো সড়ক পথেই নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:৪৩:২৮ ৩৭ বার পঠিত