আগামী ছয় মাসের (১৮০ দিন) মধ্যে খুলনা বিভাগের “ক” তফসিলভুক্ত অর্পিত সম্পত্তির তথ্য যথাযথ ব্যবস্থাপনায় আনা হবে। বিভাগের লিজ বহির্ভূত থাকা “ক” তফসিলভুক্ত সম্পদের লিজ কার্যক্রম চালু করা হবে।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের বিশেষ কর্মসূচি ‘Automated Land Administration & Management System (ALAMS)’ এর আওতায় ভূমিসেবা ডিজিটাইজেশন ‘১৮০ দিনের স্মার্ট কৌশল’ বিষয়ক এক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দকে খুলনা বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় থেকে এই প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মোঃ হেলাল মাহমুদ শরীফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই কর্মশালায় ভূমি সচিব মোঃ খলিলুর রহমান বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
কর্মশালায় উপস্থিত ভূমি কর্মকর্তাদের উদ্দেশে ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ বলেন, সরকারী সম্পদ রক্ষায় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে। আবার যে নাগরিকের তার মালিকানার পক্ষে সব ধরণের দলিলাদি আছে, তাকে যেন কোনোভাবেই হয়রানি না করা হয়, সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে।
ভূমিমন্ত্রী বলেন, অনেক সময় দেখা যায় ক্রয় পরবর্তী কোনো জমি কিছুদিন পর পুনরায় বিক্রয় করার পর, একই জমির নামজারি করতে অযথা বিলম্ব করা হয়। অথচ, ঐ জমির প্রযোজ্য সব তদন্ত হয়ত কয়েক মাস পূর্বেই করা হয়েছে! মন্ত্রী বলেন, এই ধরণের নামজারি কেসে কোনোভাবেই যেন নামজারি নিষ্পত্তি করতে বিলম্ব না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। ভূমিমন্ত্রী বলেন, সেবাগ্রহীতাকে আটকানোর মানসিকতায় নয়, তাকে স্বস্তি দেওয়ার মানসিকতা থেকে সেবা দিতে হবে।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির কথা পুনর্ব্যক্ত করে মন্ত্রী আরও বলেন স্মার্ট ভূমিসেবা বাস্তবায়নে গতি আনতে ভূমি মন্ত্রণালয় সামগ্রিকভাবে ১৮০ দিনের বিশেষ কর্মসূচি নিয়েছে। ভূমি মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দপ্তর/সংস্থা এই ১৮০ দিনের কর্মসূচির আওতার মধ্যে নিজস্ব ১০০ দিনের কর্মসূচি নিয়েছে।
মন্ত্রী জানান, এসব পরিকল্পনার আওতায় বেশকিছু জেলায় অবস্থিত ভূমি অফিসসমূহকে নিবিড় তত্ত্বাবধান ও পর্যবেক্ষণে আনা হচ্ছে। ৬৪টি জেলার মধ্যে প্রথমে কিছু জেলা বাছাই করার উদ্দেশ্য হচ্ছে নিবিড় তত্ত্বাবধানের কার্যকারিতা পর্যবেক্ষণ এবং বাকি জেলাগুলোতে এই কার্যক্রম সম্প্রসারণের জন্য তা থেকে একটি টেকসই মডেল দাঁড় করানো।
ভূমিমন্ত্রী এসময় ১৮০ দিনের মধ্যে আইবাসের মাধ্যমে ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণের অর্থ পরিশোধ কার্যক্রম এবং রাজস্ব মামলা ব্যবস্থাপনার জন্য ডিজিটাল কেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম চালুর আশা প্রকাশ করেন।
ভূমিসচিব জানান, ভূমি মন্ত্রণালয়ের ১৮০ দিনের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে শতভাগ খতিয়ান ডেলিভারি, সকল নামজারি ও সার্ভে খতিয়ান সিস্টেমে আপলোড করা ইত্যাদি। সচিব এসময় বলেন, ভূমিসেবা প্রদান সংশ্লিষ্ট সকল কার্যক্রম ড্যাশবোর্ডের মাধ্যমে নিয়মিত মনিটর করা হচ্ছে। এই ব্যাপারে ভূমি মন্ত্রণালয়ের টিম কাজ করছে।
খুলনার বিভাগীয় কমিশনার জানান, বাংলাদেশ বেতার, খুলনা কর্তৃক আয়োজিত ভূমি বিষয়ক ফোন-ইন অনুষ্ঠান স্থানীয় পর্যায়ে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। সাধারণের কাছে ডিজিটাল ভূমিসেবার তথ্য পৌঁছে দিতে খুলনা বিভাগীয় কমিশনার আরও বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলায় কর্মরত অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর (আরডিসি), ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা (এলএও), জেনারেল সার্টিফিকেট অফিসার (জিসিও), রেকর্ড রুম কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার (ভূমি), ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (ইউএলএও), ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা (ইউএলডিএও)গণ কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন।
খুলনা বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) মোঃ ফিরোজ শাহ এবং খুলনার জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীনসহ ভূমি মন্ত্রণালয় ও খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত উল্লিখিত কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন ভূমি মন্ত্রণালয় এবং খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ।
কর্মশালায় ভূমি কর্মকর্তাদের ১৮০ দিনে করনীয় সম্পর্কে অবহিত করা হয় এবং তাঁদের মতামত গ্রহণ করা হয়। খুলনা বিভাগের খুলনা ও যশোর জেলার ভূমি অফিসসমূহকে প্রাথমিকভাবে নিবিড় তত্ত্বাবধান ও পর্যবেক্ষণে আনা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য জেলাসমূহের ভূমি অফিসকে আনা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭:১৪:২৪ ২৩ বার পঠিত