মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের মধ্যে বাংলাদেশ সীমান্তে আশ্রয় নেওয়া বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সদস্যদের ফিরিয়ে নিতে দেশটি যোগাযোগ করেছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) ব্রাসেলস সফর শেষে দেশে ফিরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বিজিপি সদস্যদের বিষয়ে সরকারের অবস্থান জানতে চায় সাংবাদিকরা। জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ আছে। আজ সকালে মিয়ানমারের ডেপুটি ফরেন মিনিস্টার আমাদের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে কথাও বলেছেন। তারা তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। বিজিপি যেসব সদস্য এখানে এসেছে তাদের ফিরিয়ে নিয়ে যাবে।
বিজিপি সদস্যদের ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, কোন প্রক্রিয়ায় তাদের ফিরিয়ে নিয়ে যাবে সেটি নিয়ে আমরা আলাপ-আলোচনা করব। তাদের বাই এয়ার (বিমানযোগে) নাকি বাই বোট (নৌকাযোগে) ফিরিয়ে নেওয়া হবে সেটি নিয়ে আমরা আলাপ-আলোচনার মধ্যে আছি। আমাদের একটি পথ খুঁজে বের করতে হবে। এর আগেও ভারতে অনেকে ঢুকে পড়েছিল এবং ভারত থেকে তাদের বিমানযোগে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
মিয়ানমারের বিদ্রোহী দল আরাকান আর্মির সঙ্গে সংঘর্ষের মধ্যে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বর্ডার গার্ড পুলিশ-বিজিপি) ৯৫ জন সদস্য পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন বাংলাদেশে।
গতকাল (রোববার) থেকে আজ (সোমবার) সকাল ৮টা পর্যন্ত ৯৫ জনের পালিয়ে আসার তথ্য পাওয়া গেছে।
সোমবার সকালে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘর্ষের জেরে এখন পর্যন্ত বিজিপির ৯৫ জন সদস্য অস্ত্রসহ বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। বিজিবি তাদের নিরস্ত্রীকরণ করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়েছে।
বিজিপি সদস্যরা যদি ফিরে না যায় -এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা তো অবশ্যই যেতে চাচ্ছে। না হলে মিয়ানমার সরকার আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে কেন? মিয়ানমার তাদের নিয়ে যেতে চায়। তারাই যোগাযোগ করেছে, আমরাও যোগাযোগ করেছি। দুই পাশ থেকেই যোগাযোগ হয়েছে। এটি নিয়ে আমরা কাজ করছি।
আরো বিজিপি সদস্য বাংলাদেশে আসতে পারার সম্ভাবনার কথা জানান হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, এখনও অনেকে আসছে বা আসার সম্ভাবনা আছে। আমাদের কাছে রেজিস্টার্ড ৯৫ জন এসেছে। এরমধ্যে সকাল গড়িয়ে দুপুর হয়ে গেছে। আরও এসেছে কি না জানি না। এরমধ্যে কয়েকজন আহত আছে, তাদের কক্সবাজার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বাংলাদেশের সীমান্ত অরক্ষিত কি না -জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সীমান্ত আমাদের যতেষ্ঠ রক্ষিত আছে। তারা (বিজিপি সদস্য) যেহেতু পালিয়ে এসেছে আমরা তাদের আশ্রয় দিয়েছি।
তৃতীয় কোনো পক্ষের সহযোগিতার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, যেহেতু দুই দেশের মধ্যে আলোচনা এখনও তৃতীয় পক্ষকে জড়িত করার প্রশ্ন আসেনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:০৭:৩৫ ৫৮ বার পঠিত