ফরিদপুর-৪ আসনের (ভাঙ্গা-সদরপুর ও চরভদ্রাসন) স্বতন্ত্র প্রার্থী মজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরী বলেছেন, নির্বাচনে আমাকে ভোট না দিলে আগামীতে কোনো এমপি উন্নয়ন ও মূল্যায়ন করবে না। আমার ঈমানী দায়িত্ব পালন করেছি, উন্নয়ন করেছি, মূল্যায়ন করেছি। যদি আপনারা উন্নয়নে ভোট দেন, মূল্যায়নে ভোট দেন; তাহলে সে ভোটের দাবীদার আমি নিক্সন। আপনাদের ভোট আমার হক।
বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের মজুমদার বাজার ফকিরবাড়ি ঈদগা মাঠে আয়োজিত উঠান বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব বলেন তিনি।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী কাজী জাফর উল্যাহর সমালোচনা করে নিক্সন চৌধুরী বলেন, ‘আগে আপনাদের হেভিওয়েট এমপি ছিল, যারা জনগণের সঙ্গে হাত মিলিয়ে টিস্যু দিয়ে হাত মুছতো। বাংলাদেশের ৩০০ আসনে কোথায় আছে এমপির সঙ্গে চার বছরের শিশুর সম্পর্ক। অনেক জায়গায় এমপির নামও জানে না। গত ১০ বছর আপনারা দায়িত্ব দিয়েছিলেন, ঈমানের সঙ্গে সেই দায়িত্ব পালন করেছি। উন্নয়ন করেছি, জনগণের মূল্যায়ন করেছি। যখন আপনারা দায়িত্ব দেন, তখন প্রতিটি ইউনিয়নে ৭০-৮০ টা করে বাঁশের সাকো ছিল, রাস্তাঘাট ছিল বিধ্বস্ত। এখন কি অবস্থা, আপনারা নিজের চোখে দেখছেন।’
তিনি বলেন, ‘রাস্তা দিয়ে গেলে মায়ের কোল থেকে ৪ বছরের বাচ্চা বলে ওই যে নিক্সন যায়। ১৩-১৪ বছরের কিশোর সামনে এসে বলে দোস্ত কই যাও, বৃদ্ধরা সামনে এসে মাথায় হাত দিয়ে দোয়া দেয়। নিক্সন চৌধুরী সংসদ সদস্যের সঙ্গে চার বছরের শিশুর সম্পর্ক তৈরি করেছি। কিশোর, বৃদ্ধ বাবা-চাচাদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি।’
উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ তুলে ধরে সংসদ সদস্য বলেন, ‘আমার ঈমানি দায়িত্ব পালন করেছি, উন্নয়ন করেছি, মূল্যায়ন করেছি। যদি আপনারা উন্নয়নে ভোট দেন, মূল্যায়নে ভোট দেন, তাহলে সেই ভোটের দাবীদার আমি নিক্সন। আপনাদের ভোট আমার হক। নিক্সন চৌধুরীকে যদি ভোট না দেন, তাহলে আগামীতে কোন এমপি উন্নয়ন ও মূল্যায়ন কোনটাই করবে না।’
স্বতন্ত্র প্রার্থী মজিবুর রহমান বলেন, ‘করোনার সময় যখন ভাইয়ের মৃত্যুর খবরে ভাই যায় নাই, আমার বৃদ্ধ মা ও শিশু সন্তানকে রেখে নিজে গাড়ি চালিয়ে আপনাদের মাঝে এসেছি। দিনমজুর ভাইদের খাবার ব্যবস্থা করেছি, যারা লাইনে দাঁড়িয়ে খাবার নিতে পারে না তাদের জন্য হটলাইন চালু করেছি। ফোন করলে বাড়ির উঠানে খাবার পৌঁছে দিয়ে আসছি।’
তিনি বলেন, ’গত ১০ বছরে ঈদও সন্তানদের সঙ্গে করি নাই, তিন উপজেলার মানুষের সঙ্গে করেছি। আজ যেসব হেভিওয়েটরা ভোট চায়, ওই সময়ে তারা কোথায় ছিল। একটিবারও তো আসে নাই আপনাদের দেখতে। এখন ভোটের সময় এসে ভোট চায়, লজ্জা করে না। প্রতিবছর আমার নির্বাচনী এলাকার ৪-৫ টি ইউনিয়ন বর্ষাকালে পানিতে ডুবে যায়, মানুষ অসহায় হয়ে পরে। কোনদিন তো ওই হেভিওয়েটপ্রার্থীকে দুই কেজি চাল নিয়ে বন্যাদুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়াতে দেখি নাই।’
নিক্সন চৌধুরী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর এক বোন আমার দাদী, আরেক বোন আমার নানী। আমার বাবা-মা আপন খালাতো ভাই-বোন। আমার শরীরে বঙ্গবন্ধুর রক্ত। আমরাই আসল নৌকার লোক। আমার ফুফু কাজী কাকাকে প্রতিবারই নৌকা দেয়, কিন্তু বৈঠাটা আমাকে দিয়ে দেয়। কাকা নৌকা নিয়ে টালমাটাল হয়ে যায়, আর আমি বৈঠা নিয়ে কলা গাছের ভেলা বানাইয়া গাঙ পাড় হইয়া যাই।’
উঠান বৈঠকে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোকাদ্দেস ফকিরের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী শফিকুর রহমান, জেলা পরিষদ সদস্য ইখলাস ফকির, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য শাহেদীদ গামাল লিপু, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জিনিয়া নাজনীন কল্পনা, সংরক্ষিত জেলা পরিষদ সদস্য কোহিনুর বেগমসহ সদরপুর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:০০:০৯ ৩৪ বার পঠিত #নির্বাচন ২০২৪