পোর্তোর বিপক্ষে পিছিয়ে পড়েও শেষ পর্যন্ত ২-১ গোলে জয়ের মাধ্যমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোল নিশ্চিত করেছে বার্সেলোনা। তিন মৌসুমে এই প্রথমবারের মত নক আউটে পর্বে গেল কাতালান জায়ান্টরা। আর সে কারনেই কোচ জাভি স্বীকার করেছেন ক্লাবের জন্য এটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি।
ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার পেপের গোলে এগিয়ে যায় সফরকারী পোর্তো। দারুন লড়াই শেষে পর্তুগীজ জুটি হোয়াও ক্যান্সেলো ও হুয়াও ফেলিক্সের গোলে বার্সেলোনার জয় নিশ্চিত হয়।
বেনফিকার সাবেক এই জুটি তাদের সাবেক ক্লাবের বিপক্ষে বার্সাকে জয় উপহার দিয়েছেন। একইসাথে গত দুই মৌসুমের মত জাভি হার্নান্দেজের দল যাতে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় না নেয় তার দায়ভারও ছিল পুরো দলের ওপর।
ম্যাচ শেষে জাভি বলেছেন, ‘আজ আমরা দারুন খুশী। ভবিষ্যত প্রকল্পকে সামনে রেখে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ক্লাবের জন্যও এই ফলাফল ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে আসবে। দল ক্রমেই উন্নতির দিকে এগোচ্ছে, এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সত্যিকার অর্থেই ভাল একটি দলকে পরাজিত করেছি। আজকের দিনটা আমাদের জন্য দারুন সন্তুষ্টির।’
এর আগের ম্যাচে হামবুর্গে শাখতার দোনেৎস্কর কাছে হেরে বেশ চাপে পড়েছিল বার্সেলোনা। এর সাথে যোগ হয়েছিল ঘরোয়া আসরের ব্যর্থতা। কিন্তু তারপরও কাল সবদিক থেকে পোর্তোকে চেপে ধরেছিল জাভির শিষ্যরা। এক গোল হজম করার পর ক্যান্সেলো দ্রুতই সমতা আনেন। এরপর ফেলিক্সকে দিয়ে জয়সূচক গোলটি করিয়েছেন।
জয়ের লক্ষ্যে মরিয়া হয়ে মাঠে নামা বার্সেলোনার পজিশন কিছুটা পরিবর্তন করে দল মাঠে নামিয়েছিলেন জাভি। ক্যান্সেলোকে লেফট-ব্যাকে নিয়ে গিয়ে ইকে গুনডোগানকে মূল দলে ওরিওল রোমেউর জায়গা সুযোগ দিয়েছেন। শনিবার লা লিগায় রায়ো ভায়োকানোর সাথে ১-১ গোলে ড্র করার পর জাভি এই পরির্বতন আনতে বাধ্য হন। পিঠের ইনজুরির কারনে যেহেতু প্রথম পছন্দের মার্ক-আন্দ্রে টার স্টেগান মাঠের বাইরে ছিলেন তাই গোলবার সামলানোর দায়িত্ব ছিল যথারীতি ইনাকি পেনার ঘাড়ে। পোর্তোর বেশ কিছু আক্রমন প্রতিহত করে পেনা নিজেকে প্রমান করেছেন। ফেলিক্সের একটি শট ক্লিয়ার করেন পেপে। রাফিনহার লো শট সহজেই রুখে দেন পোর্তো গোলরক্ষক দিয়োগো কস্তা। ২৫ মিনিটে ইরানী স্ট্রাইকার মেহদি টারেমি পেনাকে পরাস্ত করে বল জালে জড়ালেও অফসাইডের কারনে গোলটি বাতিল হয়ে যায়। স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নদের ওপর পোর্তো এক পর্যায়ে ভালই আধিপত্য দেখিয়েছে। ৩০ মিনিটে পর্তুগীজ এই অভিজ্ঞ সেন্টার-ব্যাক গোল করে সফরকারীদের এগিয়ে দেন। ইভানিলসনের শট পেনা রুখে দিলে ফিরতি বল জালে জড়ান পেপে। ৪০ বছর ২৭৫ দিন বয়সে গোল করে পেপে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশী বয়সী খেলোয়াড়ের তালিকায় পঞ্চম স্থানে জায়গা করে নিয়েছেন। দুই মিনিট পর পোর্তোর রক্ষনভাগকে কাটিয়ে অনেকটা একক প্রচেষ্টায় গোল করে বার্সেলোনাকে সমতায় ফেরান সাবেক বেনফিকা ডিফেন্ডার ক্যান্সেলো।
দ্বিথীয়ার্ধে উভয় দলই বেশ আগ্রাসী হয়ে খেলতে থাকে। ৫৭ মিনিটে ক্যান্সেলোর পাস থেকে ২৪ বছর বয়সী পর্তুগীজ স্ট্রাইকার ফেলিক্স দলকে জয় উপহার দেন। মধ্য সেপেটম্বরের পর এটাই ফেলিক্সের প্রথম গোল। এরপর রাফিনহা পরপর দুটি সুযোগ নষ্ট করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পরাজয়ের ব্যবধান বাড়াতে না পারলেও নক আউট পর্বে খেলার টার্গেট পূরণ হয়েছে বার্সেলোনার।
আগামী রোববার এ্যাথলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে লা লিগায় গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচকে সামনে রেখে জাভি একে একে ফেলিক্স, ক্যান্সেলোকে উঠিয়ে নেন।
এই পরাজয়ে গ্রুপ-এইচ’এ শাখতারের সাথে সমান ৯ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে পোর্তো। আগামী ১৩ ডিসেম্বর পর্তুগালে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে এই দুই দল মুখোমুখি হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:৩৩:১৭ ৫৯ বার পঠিত