শনিবার, ২০ মে ২০২৩

রোমে বাংলা নববর্ষ ১৪৩০ এর বর্ণিল উদযাপন

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারি » রোমে বাংলা নববর্ষ ১৪৩০ এর বর্ণিল উদযাপন
শনিবার, ২০ মে ২০২৩



রোমে বাংলা নববর্ষ ১৪৩০ এর বর্ণিল উদযাপন

ইতালিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে বাংলা নববর্ষ-১৪৩০ উদযাপন উপলক্ষে এক আলোচনা সভা ও বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। বর্ণিল এ আয়োজনে পিঠা উৎসব, সুমধুর গান, দৃষ্টিনন্দন নাচ, ঐতিহ্যবাহী দেশীয় খাবারের মাধ্যমে আবহমান বাংলার ঐতিহ্য ও সমৃদ্ধ সংস্কৃতি তুলে ধরা হয়।

বৃহস্পতিবার আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে ইতালির পররাষ্ট্র ও অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, রোমস্থ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, স্থায়ী প্রতিনিধি, কূটনীতিক, জাতিসংঘের কর্মকর্তা, ইতালির সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, সাংবাদিক, বাংলাদেশের কনসাল ও দূতাবাস এবং মিলান কন্স্যুলেটের কর্মকর্তা কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

রাষ্ট্রদূত মো. শামীম আহসান ও তার সহধর্মিণী পেন্ডোরা চৌধুরী, আমন্ত্রিত অতিথিদের বৈশাখের উত্তরীয় দিয়ে তাদের উষ্ণভাবে বরণ করে নেন এবং তাদের সঙ্গে নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

দূতাবাসের সামনের সড়কে আয়োজিত বাংলার ঐতিহ্যবাহী মঙ্গল শোভাযাত্রায় অনেক বিদেশি অতিথিসহ দূতাবাস পরিবারের সদস্যরা বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনার সঙ্গে অংশগ্রহণ করেন।

আলোচনা সভায় রাষ্ট্রদূত তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে বাঙালি সংস্কৃতির দীর্ঘ ঐতিহ্যের কথা তুলে ধরেন। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কূটনীতিক উদ্যোগের ধারাবাহিকতায় ইউনেস্কো কর্তৃক মঙ্গল শোভাযাত্রাকে মানবজাতির বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দানের কথা উল্লেখ করে বলেন, এটি বাংলাদেশের নববর্ষ উদযাপনে একটি নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে। দেশে ও প্রবাসে বসবাসরত বাংলাদেশের সকল নাগরিকের জন্য নববর্ষ আরো সুখ ও স্বাচ্ছন্দ্য বয়ে আনবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক পহেলা বৈশাখকে সরকারি ছুটি ঘোষণা ও দিনটি উদযাপনের কথা উল্লেখ করে তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

ইতালির পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের এশিয়া বিভাগের সেন্ট্রাল ডিরেক্টর মিনিস্টার আলেসান্দ্রা স্কিয়াভো অনুষ্ঠানে “গেস্ট অব অনার” হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

তিনি তার বক্তব্যে ইতালিতে বসবাসকারী বাংলাদেশ কমিউনিটির প্রসংসার পাশাপাশি তাদের নিজস্ব সাংস্কৃতিক চর্চার উপর গুরুত্বারোপ করেন। একই সঙ্গে ইতালীয় ভাষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে ইতালিস্থ বাংলাদেশি কমিউনিটির মিথস্ক্রিয়ার গুরুত্বের বিষয়টি তুলে ধরেন।

তিনি উল্লেখ করেন, ইতালি প্রবাসী বাংলাদেশিরা ইতালির সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে প্রশংসনীয় অবদান রাখছে। সাম্প্রতিক সময়ে ইতালি-বাংলাদেশ বন্ধুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের তাৎপর্যপূর্ণ উন্নতির বিভিন্ন দিক তুলে ধরে তিনি বাংলাদেশের অদম্য অগ্রযাত্রার প্রশংসা করেন।

---

আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইতালির লুমসা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও বাংলাদেশের বিশিষ্ট বন্ধু ড. ফ্রান্সেস্কো জানিনি। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলা নববর্ষ উদযাপনের যে প্রচলিত রীতি, তা হাজার বছরের বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে ধারণ ও লালনের এক অনন্য নিদর্শন। প্রবাসী বাংলাদেশিদের মাঝে এ ঐতিহ্যকে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার উপরও তিনি আলোকপাত করেন। তিনি নববর্ষ উপলক্ষে দূতাবাসের বর্ণিল আয়োজনের জন্য দূতাবাস-কে অভিনন্দন জানান এবং এ ধারা অব্যাহত রাখার উপর গুরুত্বারোপ করেন।

আলোচনা সভার পরে প্রবাসী বাংলাদেশি ও ইতালির শিল্পীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। এসময় ইতালির শিল্পীর কণ্ঠে বাংলা গান অতিথিদের মুগ্ধ করে। নববর্ষ উপলক্ষে দূতাবাসের একটি রঙ্গিন ও দ্বিভাষিক প্রকাশনা অতিথিদের মাঝে বিতরণ করা হয় যা উপস্থিত সকলের মাঝে বাংলা নববর্ষের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও ঐতিহ্যগত দিকগুলো ফুটিয়ে তোলে।

অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দকে ঐতিহ্যবাহী রকমারি বাংলাদেশি খাবারে আপ্যায়ন করা হয়। দূতাবাস প্রাঙ্গনে স্থাপিত পালকি, মেহেদী, পান ও ঝাল-মুড়ির স্টল ও পিঠা ঘর উপস্থিত বিদেশি অতিথিদের মাঝে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়।

দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে দূতাবাসকে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির অনেক অনুসঙ্গ দিয়ে সুসজ্জিত করা হয় যা সহজেই সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং সকলের মাঝে উৎসবের আমেজ তৈরি করে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫:৩০:৫০   ৪৬ বার পঠিত