সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপন উপলক্ষে ওয়াশিংটন ডিসিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে এক সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মার্কিন সেনাবাহিনীর ডেপুটি চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল প্যাট্রিক ম্যাটলক।
যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান ও বাংলাদেশ দূতাবাসের ডিফেন্স অ্যাটাচে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহেদুল ইসলামও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) ওয়াশিংটনের বাংলাদেশ দূতাবাস জানায়, ইউএস মেরিন কোরের ডেপুটি কমান্ড্যান্ট লেফটেন্যান্ট জেনারেল গেরি গ্ল্যাভি, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মিজ আফরিন আক্তার ও মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক আঞ্চলিক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সিমাস হুইটসেলও অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
বিশ্ব ব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক ড. আহমাদ কায়কাউসও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল প্যাট্রিক ম্যাটলক তার বক্তব্যে জাতীয় স্বাধীনতা রক্ষা ও বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী নিরাপত্তা ও জাতীয় স্বাধীনতা রক্ষায় এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় জনগণের মধ্যে ত্রাণ সহায়তা ও নিঃস্বদের আশ্রয় দেওয়া এবং বিশ্বব্যাপী শান্তি ও স্থিতিশীলতা আনয়নে সম্মুখ ভূমিকা পালন করছে।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা অভিযানে বাংলাদেশকে বিশ্বের বৃহত্তম সৈন্য পাঠানোকারী দেশ হিসেবে উল্লেখ করে প্যাট্রিক ম্যাটলক বলেন, বাংলাদেশি সেনাদের এ অবদানে বিশ্ব আজ কৃতজ্ঞ।
তিনি বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে বর্তমান অংশীদারিত্বের কথা উল্লেখ করেন এবং আশা প্রকাশ করেন আগামী বছরগুলোতে শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য এ অংশীদারিত্ব আরও মজবুত হবে।
রাষ্ট্রদূত ইমরান বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন, যার অবিসংবাদিত নেতৃত্বে বাঙালি জাতি তার দীর্ঘদিনের কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা অর্জন করে। মুক্তিযুদ্ধে মহান আত্মত্যাগের জন্য তিনি সশস্ত্র বাহিনীর বীর সদস্যসহ ৩০ লাখ শহীদের প্রতিও গভীর শ্রদ্ধা জানান।
তিনি বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে বহুমুখী সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে বলেন, দুই দেশ বিভিন্ন প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা ইস্যুতে অভিন্ন মতামত বিনিময় করছে।
রাষ্ট্রদূত ইমরান বলেন, বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র অতীতে বাংলাদেশের উন্নয়নের অভিযাত্রায় সব ধরনের সহায়তা দিয়েছে এবং বাংলাদেশ এ সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার জন্য আগ্রহী।
ডিফেন্স অ্যাটাচে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শাহেদুল ইসলাম সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অতিথিদের স্বাগত জানান এবং দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও উন্নয়নে অব্যাহত সমর্থন ও সহযোগিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানান। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মিনিস্টার (পলিটিক্যাল) মো. রাশেদুজ্জামান।
এর আগে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। পরে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর বিভিন্ন কার্যক্রমের ওপর একটি সংক্ষিপ্ত তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, কূটনীতিক ও ডিফেন্স অ্যাটাচে এবং পেন্টাগন, স্টেট ডিপার্টমেন্ট ও অন্যান্য মার্কিন সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, প্রবাসী বাংলাদেশি এবং দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:১০:৫৮ ৪৬ বার পঠিত