সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে তুলসী একটি পবিত্র গাছ। প্রতিদিনের গৃহ দেবতার পূজোয় বা ভোগে তুলসী পাতা ব্যবহার করা হয়। তবে শুধু পূজার কাজেই নয় রোগ নিরাময়েও তুলসী পাতার জুড়ি মেলা ভার।
তুলসী একটি আয়ুর্বেদিক ভেষজ। এটি আপনার চায়ের স্বাদ বৃদ্ধি করে, সঙ্গে সুগন্ধ ছড়ায়। এ ছাড়া তুলসী আপনাকে বিভিন্ন রোগবালাই থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করে। আধুনিক চিকিৎসা আসার আগে মানুষ নির্ভর করত ভেজষ ওষুধে। এ ছাড়া ভেজষ রাণী হিসেবে পরিচিত তুলসী পাতা। চলুন জেনে নিই তুলসী পাতা কেন খাবেন-
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য
বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘তুলসীতে ফ্ল্যাভোনয়েড, পলিফেনল এবং অপরিহার্য তেলের মতো যৌগ রয়েছে যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো শরীরের ক্ষতিকারক ফ্রি র্যাডিকেলগুলোকে নিরপেক্ষ করতে সহায়তা করে, যার ফলে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস হ্রাস পায় এবং কোষগুলেঅকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে।’
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
তুলসীর ইমিউনোমোডুলেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে বলে জানা যায়। যার মানে এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। আপনি যদি নিয়মিত তুলসী পানি পান করেন, তাহলে আপনার ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে এবং শরীরকে সংক্রমণের জন্য আরও স্থিতিস্থাপক করতে সাহায্য করতে পারে।
হজমশক্তির উন্নতি
বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘তুলসীর কার্মিনেটিভ বৈশিষ্ট্য হজমে সাহায্য করে এবং গ্যাস ও ফোলাভাব কমাতে পারে। তুলসীর পানি পান করলে পাচনতন্ত্র প্রশমিত হয় এবং হজমে সহয়তা করে।’
এ ছাড়া তুলসী পানি পানে আপনার শরীরের বিষাক্ত পদার্থ ও জীবাণু বের করে দিতে সাহায্য করে। এটি হজমের ব্যাধিগুলোকে দূরে রাখতে সাহায্য করে।
তুলসী পানি পানে আপনার শরীরের বিষাক্ত পদার্থ ও জীবাণু বের করে দিতে সাহায্য করে। ছবি: সংগৃহীত
স্ট্রেস কমায়
বিশেষজ্ঞের মতে, তুলসীকে একটি অভিযোজনীয় ভেষজ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যার অর্থ এটি শরীরকে চাপের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে এবং শান্ত এবং শিথিলতার অনুভূতি প্রচার করতে সহায়তা করতে পারে। তুলসী পানি পানে মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করতে পারে।
শ্বাসযন্ত্রের স্বাস্থ্য
তুলসী ঐতিহ্যগতভাবে কাশি, সর্দি এবং হাঁপানির মতো শ্বাসকষ্ট দূর করতে ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়া তুলসী পানি পান করা শ্বাসযন্ত্রের উপর প্রশান্তিদায়ক প্রভাব ফেলতে পারে এবং শ্বাসযন্ত্রের অস্বস্তি থেকে মুক্তি দেয়। তুলসিতে শক্তিশালী কফের ওষুধ এবং অ্যান্টিটিউসিভ বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা কফের উপসর্গ, জ্বালাপোড়া এবং সর্দি-কাশির লক্ষণগুলিকে মূল থেকে দূর করতে সাহায্য করে।
প্রদাহ কমায়
তুলসীতে উপস্থিত অপরিহার্য তেলগুলোতে প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যা প্রদাহ এবং সম্পর্কিত উপসর্গগুলো কমাতে সাহায্য করতে পারে।
মুখের স্বাস্থ্য
তুলসীতে অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা মুখের সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে এবং সামগ্রিক মুখের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে সহায়তা করে। তুলসীর পানি দিয়ে গার্গল করা মাড়িকে স্বাস্থ্যকর করে এবং নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ কমাতে পারে।
তুলসীর ডিটক্সিফাইং বৈশিষ্ট্য শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থগুলো দূর করে এবং সামগ্রিক ডিটক্সিফিকেশন প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে। ছবি: সংগৃহীত
ডিটক্সিফিকেশন
তুলসীর অগণিত ডিটক্সিফাইং বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থগুলো দূর করে এবং সামগ্রিক ডিটক্সিফিকেশন প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে।
সূত্র: হেলথ শটস
বাংলাদেশ সময়: ১০:৪২:৪১ ৬৭ বার পঠিত