যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারে ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর সন্ত্রাসী হামলার পর বিশ্বজুড়ে যুদ্ধে ৪৫ লাখেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের রোড আইল্যান্ডের ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। গবেষণা বলছে, ২০০১ সালের পর থেকে প্রতিবছর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে সংঘটিত যুদ্ধে প্রাণহানির সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।
তুরস্কের সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ডসহ বিশ্বের বিভিন্ন শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। ‘যুদ্ধের ফলাফল’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এ গবেষণা করা হয়। গত সোমবার (১৫ মে) এর ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের পর থেকে আফগানিস্তান, ইরাক, সিরিয়া, ইয়েমেন, লিবিয়া, সোমালিয়া এবং পাকিস্তানে চলা যুদ্ধের কারণে সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্রে প্রায় ১ মিলিয়ন মানুষ নিহত হয়েছেন। প্রকৃত সংখ্যা ৯ লাখ ৬ হাজার থেকে ৯ লাখ ৩৭ হাজারের মধ্যে।
এছাড়া, ৩৫ লাখেরও বেশি মানুষ (প্রকৃত সংখ্যা ৩৫ লাখ ৮৮ হাজার থেকে ৩৭ লাখ ১৬ হাজারের মধ্যে) যুদ্ধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন উপাদানের কারণে প্রাণ হারিয়েছেন। এসব উপাদানের মধ্যে রয়েছে অর্থনৈতিক ব্যর্থতা, চরম দারিদ্র্য, অপুষ্টি এবং কলেরা ও হামের মতো বিভিন্ন ছোঁয়াচে রোগের ব্যাপক বিস্তার।
ফলে সবমিলিয়ে এ ২২ বছরে যুদ্ধে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ৪৫ লাখ থেকে ৪৬ লাখ মানুষ মারা গেছেন। গবেষণা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে সহিংসতার পরিমাণ বাড়তে থাকায় প্রাণহানির সংখ্যা প্রতিবছরেই বাড়তে থাকে।
যদিও গবেষণায় কোনো নির্দিষ্ট দেশকে সরাসরি দোষ দেয়া হয়নি। তবে আফগানিস্তানে বিপর্যয়ের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের নাম সরাসরি উল্লেখ করা হয়েছে। গবেষণা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ‘২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার করায় আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধ শেষ হয়েছে। তবে ২০ বছর আগে শুরু হওয়া এ যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে চলা যেকোনো সংঘাত এবং সংঘাত সংশ্লিষ্ট ঘটনার কারণে প্রাণহানি এবং অন্যান্য ক্ষয়ক্ষতি আফগানিস্তানেরই সবচেয়ে বেশি হয়েছে।’
বাংলাদেশ সময়: ১১:১০:০৭ ৭৫ বার পঠিত