বাংলাদেশ থেকে সিফুড আমদানি ও বাংলাদেশের মৎস্য খাতে বিনিয়োগের জন্য বিদেশি আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল।
বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ইফতেখার হোসেন। এর আগে বুধবার (২৬ এপ্রিল) স্পেনের বার্সেলোনায় গ্লোবাল সিফুড এক্সপো ২০২৩-এ বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে বিভিন্ন দেশের আমদানিকারক ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ আহ্বান জানান রেজাউল করিম।
বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য অনুকূল পরিবেশ বিদ্যমান উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ থেকে মাছ রফতানির ক্ষেত্রে বিদেশি বায়ারদের বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করা হবে। পাশাপাশি মৎস্য খাতে বিনিয়োগ করলে বাংলাদেশ সরকার কর অব্যাহতিসহ নানা সুযোগ-সুবিধা দিতে প্রস্তুত।
এ সময় বিদেশি বায়ারদের বাংলাদেশের মৎস্য খাত পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানান মন্ত্রী। এ ছাড়া বাংলাদেশের চিংড়ি ও অন্যান্য মৎস্যসম্পদ রফতানির চ্যালেঞ্জ ও সমস্যা উত্তরণে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন তিনি।
তিনি বলেন, দেশের সিফুড খাতে সরকারের বিশেষ উদ্যোগ রয়েছে। সারাবিশ্বে সিফুড রফতানির প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে বাংলাদেশে এ খাতে বুদ্ধিবৃত্তিকসহ অন্যান্য সম্পদ বিনিয়োগ করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বিদেশি বায়ার ও বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অগ্রাধিকার দিয়ে বিবেচনা করা হবে। বাংলাদেশের মাছকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার জন্য সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে।
বাংলাদেশের মৎস্য সম্পদে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে উল্লেখ করে মন্ত্রী আরও বলেন, চিংড়ি, ফিনফিস, শুঁটকি মাছ, কাঁকড়াসহ বিভিন্ন মৎস্য ও মৎস্য পণ্য রফতানির মাধ্যমে বাংলাদেশের রফতানি আয় চলতি অর্থবছরে ২৬ দশমিক ৯৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়া সরকার রোগমুক্ত বাগদা চিংড়ি উৎপাদনে বেসরকারি খাতে ম্যাচিং গ্র্যান্ট প্রদানসহ চিংড়ি উৎপাদন ব্যবস্থাপনায় বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছে।
মন্ত্রী বলেন, সনাতনী পদ্ধতির চিংড়ি হ্যাচারিকে এসপিএফ হ্যাচারিতে রূপান্তর, ক্লাস্টারভিত্তিক চিংড়ি চাষ পদ্ধতি প্রচলন, চিংড়ি খামারের উৎপাদন বৃদ্ধি, সাপ্লাই চেইনের মান উন্নয়ন, দেশব্যাপী বিদ্যমান চিংড়ি খামারের ডিজিটাল ডাটাবেজ তৈরি, সমন্বিত ই-ট্রেসিবিলিটি সিস্টেম প্রবর্তন, মৎস্য ও মৎস্যপণ্য মান নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০২০ প্রণয়ন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের নীতির সঙ্গে সমন্বয় রেখে ন্যাশনাল রেসিডিউ কন্ট্রোল প্ল্যান বাস্তবায়ন, মৎস্য ও মৎস্য পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে দেশে আন্তর্জাতিক মানের ল্যাবরেটরি প্রতিষ্ঠা, নিয়মিত পরিদর্শন ও মনিটরিং, আমদানিকারক দেশের মৎস্য পরিদর্শন এবং মাননিয়ন্ত্রণ বিধি ও চাহিদার সঙ্গে গতি রেখে কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করতে কাজ করছে সরকার।
এ ছাড়া বিভিন্ন দেশের মৎস্য খাত কীভাবে বিকশিত হয়েছে, মৎস্য খাতে প্রযুক্তির ব্যবহার, মৎস্য প্রক্রিয়াকরণ, সিফুড রফতানিসহ বিভিন্ন বিষয় বার্সেলোনায় অনুষ্ঠিত গ্লোবাল সিফুড এক্সপো থেকে বাংলাদেশ অভিজ্ঞতা অর্জন করছে বলে জানান রেজাউল করিম। এ সময় চলতি বছর বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক সিফুড এক্সপো আয়োজন করা হচ্ছে জানিয়ে সিফুড সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দেশের বায়ার ও বিশেষজ্ঞদের এ এক্সপোতে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানান মন্ত্রী।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন স্পেনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সারওয়ার মাহমুদ, বাংলাদেশের মৎস্য অধিদফতরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক, বাংলাদেশের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ব্লু ইকোনমি সেলের প্রধান ও যুগ্মসচিব ড. আবু নঈম মুহাম্মদ আবদুছ ছবুর, সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়ার বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সেলিম রেজা হাসান, নেদারল্যান্ডসের প্রতিষ্ঠান ফিশারম্যান চয়েস ও সিফুড কানেকশন এবং জার্মানির প্রতিষ্ঠান এইচ অ্যান্ড এফ, লেংক ফ্রোজেন ফুডস ও গ্লোবাল গ্যাপের প্রতিনিধিরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৩:৩৬:২৩ ৭৪ বার পঠিত