সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি বলেছেন, যেকোনো জন্মদিন আমরা সাধারণত আনন্দ, উচ্ছ্বাস ও উল্লাসের মধ্য দিয়ে উদযাপন করি। কিন্তু শেখ রাসেলের জন্মদিনে আমরা উল্লাস করতে পারি না, বেদনায় নীল হয়ে যাই, নিদারুণ বিষাদের ছায়া আমাদের উপর ভর করে। নিষ্পাপ, কোমলমতি শিশুটিকে কি নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। চিন্তা করলেই আঁতকে উঠি। হৃদয় ক্ষত-বিক্ষত হয়ে যায়। যে পৃথিবীতে শেখ রাসেলকে হত্যা করা হয়, শেখ রাসেল হত্যার মধ্য দিয়ে সে পৃথিবী বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
প্রতিমন্ত্রী আজ সকালে রাজধানীর বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে ‘শেখ রাসেল দিবস ২০২৩’ উদযাপন উপলক্ষ্যে একাডেমি আয়োজিত ‘শেখ রাসেল দীপ্তিময় নির্ভীক নির্মল দুর্জয়’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথি বলেন, শেখ রাসেলসহ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা জিয়াউর রহমান। তাঁরই স্ত্রী খালেদা জিয়ার হাতে ন্যস্ত প্রশাসনের সহযোগিতায় ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২৪ জন নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয় যার মূল টার্গেট ছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। মহান আল্লাহর রহমতে ভাগ্যের সহায়তায় তিনি বেঁচে যান। সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিএনপি এখন খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ খুঁজছেন। কিন্তু বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী সে সুযোগ নেই। তাছাড়া তাকে বাংলাদেশে সর্বোচ্চ চিকিৎসার সুযোগ দেয়া হয়েছে। কে এম খালিদ বলেন, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা এবং ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার সময় বা পরে তারা কোনো অনুকম্পা দেখাইনি। বরং এসব হত্যাকাণ্ডের সহযোগীদের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসিয়েছে, মদদ জুগিয়েছে। সেজন্য তাদের কোনো ক্ষমা নেই- শেখ রাসেল দিবসে এটাই হোক আমাদের প্রতিজ্ঞা।
বাংলা একাডেমির সভাপতি বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তৃতা করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট শিশু সাহিত্যিক, লেখক ও গবেষক নাসরীন মুস্তাফা। আলোচনা করেন বিশিষ্ট শিশুসাহিত্যিক ও বাংলা একাডেমির ফেলো খালেক বিন জয়েনউদদীন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বাংলা একাডেমির সচিব ড. মোঃ হাসান কবীর।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতি সচিব খলিল আহমদ বলেন, শেখ রাসেল হত্যাকান্ড পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম নৃশংসতম ঘটনা। এ মেধাবী, উদ্যম, নির্ভীক, নির্মল, দুর্জয় শিশুটিকে নিয়ে অনেক বই রচিত হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তাঁর আদরের ছোট ভাই শেখ রাসেলকে নিয়ে ‘আমাদের ছোট রাসেল সোনা’ শীর্ষক বইটি রচনা করেছেন। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা সম্পাদনা করেছেন ‘রাসেলের জন্য ভালোবাসা’ শীর্ষক বই। তিনি বলেন, এসব বই পড়ে নতুন প্রজন্ম রাসেলের জীবন ও আদর্শ সম্পর্কে জানতে পারবে এবং উদ্বুদ্ধ ও অনুপ্রাণিত হয়ে নিজেদের জীবনে কাজে লাগাবে বলে আশা করি।
শেখ রাসেলকে নিবেদিত ছড়া পাঠ করেন বিশিষ্ট কবি ও ছড়াকার আসলাম সানী এবং বাংলা একাডেমির ফেলো আনজীর লিটন। শেখ রাসেলকে নিয়ে সুজন বড়ুয়ার লেখা কবিতা আবৃত্তি করেন পারভেজ চৌধুরী। স্বরচিত কবিতা পাঠ করে শোনান রাজনীতিবিদ ও কবি নূহ-উল-আলম লেনিন।
অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী বাংলা একাডেমি আয়োজিত শিশু-কিশোরদের কবিতা ও প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার বিতরণ করেন।
প্রতিমন্ত্রী পরে রাজধানীর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে ‘শেখ রাসেল দিবস ২০২৩’ উদযাপন উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘শেখ রাসেল দীপ্তিময় নির্ভীক নির্মল দুর্জয়’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭:১৬:৫৮ ৫৩ বার পঠিত