শনিবার সিরি-এ লিগে তলানির থেকে দ্বিতীয় স্থানে থাকা সালেরনিতানাকে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে ইন্টার মিলান। এ্যাওয়ে ম্যাচটিতে ইন্টারের হয়ে চারটি গোলই করেছেন বদলী হিসেবে মাঠে নামা আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার লটারো মার্টিনেজ। এদিকে দিনের আরেক ম্যাচে ল্যাজিওকে ২-০ গোলে পরাজিত করে ইতালিয়ান লিগ টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে এসি মিলান।
সাসৌলোর বিপক্ষে সপ্তাহের মাঝামাঝিতে মৌসুমের প্রথম পরাজয়ের থেকে বেরিয়ে এসে মার্টিনেজের দ্বিতীয়ার্ধের দুর্দান্ত পারফরমেন্সে ইন্টারের জয় নিশ্চিত হয়। ৬২ মিনিটে মার্কোস থুরামের অসাধারন একটি বল থেকে স্বাগতিক গোলরক্ষক গুইলারমো ওচোয়ার মাথার উপর দিয়ে বল জালে জড়িয়ে ডেডলক ভাঙ্গেন মার্টিনেজ। সালেরনিতানা মাতেয়াজ লেগোভস্কির একটি গোল অফসাইডের কারনে বাতিল হয়ে যায়। নিকোলো বারেলার ক্রস থেকে মার্টিনেজ ব্যবধান দ্বিগুন করেন। ৮৫ মিনিটে পেনাল্টি স্পট থেকে হ্যাট্রিক পূরণ করেন মার্টিনেজ। থুরামের আদায় করা পেনাল্টি থেকে হ্যাট্রিক পূরণে মার্টিনেজকে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি। কার্লোস অগাস্টোসের পাস থেকে ম্যাচের একেবারে শেষভাগে চতুর্থ গোলটি করেন মার্টিনেজ।
এ পর্যন্ত ৯ গোল করে সিরি-এ সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় শীর্ষে থাকা মার্টিনেজ বলেছেন, ‘আমি খুশী কারন আমি দলকে জিততে সহায়তা করেছি। দিনের শেষে এটাই গুরুত্বপূর্ণ। বুধবারের ম্যাচে হারের পর আমাদের নিয়ে যে সমালোচনা তৈরী হয়েছিল তাতে এই জয়টা জরুরী ছিল। আমি শিরোপা কিংবা সর্বোচ্চ গোলদাতার বিষয় নিয়ে ভাবছি না, আমি শুধুমাত্র দলের জয়ে ভূমিকা রাখতে চাই।’
বড় এই হয়ে ইন্টার মিলানের সাথে সমান ১৮ পয়েন্ট নিয়ে গোল ব্যবধানে এগিয়ে শীর্ষে রয়েছে। দিনের শুরুতে ধুকতে থাকা ল্যাজিওকে ২-০ ব্যবধানে পরাজিত করে অল্প সময়ের জন্য পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ স্থান দখল করেছিল মিলান। সান সিরোতে ক্রিস্টিয়ান পুলিসিচ ৬০ মিনিটে মিলানকে এগিয়ে দিয়েছিলেন। রাফায়েল লিয়াওয়ের দারুন পাস থেকে পুলিসিচ স্বাগতিকদের এগিয়ে দেন। চেলসি থেকে আসার পর এটা পুলিসিচের তৃতীয় গোল। ৮৮ মিনিটে মিলানের তিন পয়েন্ট নিশ্চিতের গোলেও যোগানদাতা ছিলেন লিয়াও। পর্তুগীজ এই উইঙ্গারের কাট-ব্যাকে নোয়া ওকাফোর ব্যবধান দ্বিগুনের পাশাপাশি স্বাগতিকদের জয় নিশ্চিত করেন।
ম্যাচ শেষে পুলিসিচ বলেছেন, ‘আমি মনে করি আজ আমরা অনেক বেশী চাপে ছিলাম। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে সেটা কাটিয়ে উঠতে পেরেছি। প্রথম গোলের পর আমরা সত্যিকার অর্থেই ল্যাজিওর উপর আধিপত্য দেখিয়েছি। আমি এখানে অনেকদিন পরে খেলতে এসেছি, এই দলে এখন বেশ কিছু নতুন খেলোয়াড় এসেছে। মৌসুমে আমাদের শুরুটা ভাল হয়েছে। এখানকার সময়টা আমি দারুনভাবে উপভোগ করছি।’
উরুর ইনজুরির কারনে গত দুই ম্যাচ অনুপস্থিত থাকার পর আবারো মিলানে ফিরেছেন ফরাসি গোলরক্ষক মাইক মেইগনান। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নিউক্যাসলের সাথে গোলশুন্য ড্রয়ের ম্যাচটিতে মেইগনান ইনজুরিতে পড়েছিলেন।
বদলী বেঞ্চ থেকে উঠে এসে লিসের বিপক্ষে নাপোলিকে চার দিনের ব্যবধানে দ্বিতীয় জয় উপহার দিয়েছেন তারকা স্ট্রাইকার ভিক্টর ওশিমেহ। এই জয়ে ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়নরা লিগ টেবিলের তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে। টানা তিন ম্যাচে জয়বিহীন থাকার পর রুডি গার্সিয়ার দল রিয়াল মাদ্রিদের বিরুদ্ধে আগামী সপ্তাহে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের হোম ম্যাচের আগে কিছুটা হলেও আত্মবিশ^াস সঞ্চয় করতে পেরেছে। ১৬ মিনিটে সেন্টার-ব্যাক লিও ওস্টিগার্ড নাপোলিকে এগিয়ে দেন। ক্লাবের হয়ে এটি ওস্টিগার্ডের প্রথম গোল। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে নাইজেরিয়ান স্ট্রাইকার ওশিমেহ নামার আগ পর্যন্ত নাপোলি ম্যাচের নিয়ন্ত্রন নিজেদের করতে পারেনি। ৫১ মিসিটে কাভিচা কাভারাটসখেলিয়ার ক্রসে ওশিমেহ ব্যবধান দ্বিগুন করেন। এরপর ম্যাচের শেষভাগে গিয়ানলুকা গায়েটানো ও মাত্তেও পলিটানো আরো দুই গোল করলে নাপোলির বড় জয় নিশ্চিত হয়।
স্পট কিক থেকে পলিটানো দলের হয়ে চতুর্থ গোলটি করেছে। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে ওশিমেহ তার পেনাল্টি শ্যুটের দায়িত্ব পলিটানোর উপর দিয়ে দিয়েছেন।
বড় এই জয়ের পরেও নাপোলি ইন্টার ও মিলানের থেকে চার পয়েন্ট পিছিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে।
গার্সিয়া বলেছেন, ‘শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রত্যেকেই দারুন খেলেছে। আমরা প্রথম ১৫ মিনিটেই গোল আদায় করে নিতে চেয়েছিলাম। ওস্টিগার্ডের জন্য আমি দারুন খুশী। কারন সে এমন একজন খেলোয়াড় যে প্রতিনিয়ত দলের জন্য নিজের সেরাটা দেবার চেষ্টা করে যাচ্ছে। জেনোয়ার সাথে ২-২ গোলের ড্রয়ের ম্যাচটি থেকে আমরা অনেক শিক্ষা নিয়েছি। আজ সব খেলোয়াড়রই তাদের শতভাগ দেবার চেষ্টা করেছে এবং তারা সফলও হয়েছে। এখন এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখাই মূল চ্যালেঞ্জ।’
বাংলাদেশ সময়: ১৫:৪৭:৪৩ ৪৯ বার পঠিত