পৃথিবীতে মানুষের মলের দুর্গন্ধটা ছড়িয়ে পড়া স্বাভাবিক। কারণ যে পৃথিবীতে মানুষ বাস করছে সেখানের পরিবেশ তার মলে দুর্গন্ধময় হয়ে উঠতেই পারে। কিন্তু একবার ভাবুন তো, পৃথিবী থেকে সুদূর চাঁদের বুকেও যদি মানুষের মলের দুর্গন্ধ পাওয়া যায়, ব্যাপারটা কেমন হয়!
পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদ। আর চাঁদকে জয় করতে মানুষ একাধিকবার প্রচেষ্টা চালিয়েছে চন্দ্রাভিযানের। চন্দ্রাভিযান কখনও ব্যর্থ হয়েছে, আবার কখনও হয়েছে সফল। সফল চন্দ্রাভিযানে চাঁদের মাটিতে পা পড়েছে মানুষসহ একাধিক মহাকাশযানের।
চন্দ্র জয়ের পর দেখা যায়, সেখানে আবেগে তাড়িত হয়ে প্রায়ই নভোচারীরা রেখে আসে তাদের নানান স্মৃতিচিহ্ন। এ পর্যন্ত ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় অনেক জিনিসই চাঁদের মাটিতে রেখে এসেছেন মহাকাশচারীরা। সম্প্রতি বিজ্ঞানীদের নজরে পড়েছে চাঁদে পড়ে থাকা সেসব জিনিসগুলোর দিকে। যার মধ্যে রয়েছে- ল্যান্ডার, রোভার, যন্ত্রাংশ, ভাঙা মহাকাশযানসহ আরও অনেক কিছু।
এমনকি গলফ বল, পতাকা, অ্যালুমিনিয়ামের ভাস্কর্য, ভি ক্যামেরা, ফিল্ম ম্যাগাজিন, চিমটা, বেলচা, ব্যাকপ্যাক, ব্যবহৃত রুমাল, ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সরঞ্জাম, পরিবারের ছবিও পাওয়া গেছে চাঁদের মাটিতে। ২০১২ সালের সমীক্ষা বলছে, প্রায় ৪ লাখ টন মানবসৃষ্ট বস্তু পড়ে রয়েছে চাঁদের মাটিতে।
কিন্তু সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো সম্প্রতি বিজ্ঞানীদের নজরে পড়েছে, চাঁদে পড়ে থাকা মানুষের মল ভর্তি ব্যাগের দিকে। ভাবছেন চাঁদে আবার মানুষের মল কীভাবে আসলো?
এসব মানুষের মল মূলত নভোচারীদের। আপনি কখনও যদি চাঁদে যাওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেন তাহলে চাঁদের বুকে নেমে প্রথমেই আপনার নজরে পড়বে মহাকাশচারীদের ফেলে আসা মলভর্তি ব্যাগের ওপর।
পরিসংখ্যান বলছে, এ পর্যন্ত মোট ৯৬টি মানববর্জ্যের ব্যাগ পড়ে রয়েছে চাঁদের বুকে। পৃথিবী থেকে চাঁদে যাওয়া পর্যন্ত সময়ে নভোচারীরা তাদের মল একটি ব্যাগে জমিয়ে রাখেন। তারপর চাঁদে নেমে তাদের গবেষণার প্রয়োজনীয় কাজ শেষে পৃথিবীতে ফেরার সময় মহাকাশযানের বাড়তি ওজন কমাতে চাঁদের বুকে এসব বর্জ্যভর্তি ব্যাগ ফেলে দেন।
এ প্রসঙ্গে চাঁদের বুকে পা রাখা দ্বিতীয় ব্যক্তি -’এডউইন অলড্রিন’ এক টুইট বার্তায় লিখেছিলেন, ‘ভবিষ্যতে আমার মলভর্তি ব্যাগ যিনি খুঁজে পাবেন, তার জন্য খুব খারাপ লাগছে।’
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, মানুষের মলের এই ৯৬ টি ব্যাগ চাঁদের মাটিতে ছড়িয়ে রয়েছে, তা কি চাঁদের পরিবেশ দূষিত করছে? দুর্গন্ধময় করে তুলছে আশপাশ?
এমন প্রশ্নের উত্তর অবশ্য নাসা দিয়েছে। নাসা বলছে, চাঁদে কোনো বায়ুমণ্ডল নেই। তাই মলের দুর্গন্ধ ছড়ানোর কোনো ভয়ও নেই। তবে হ্যাঁ, চাঁদের মাটিতে মলের বস্তা পড়ে থাকায় তা চাঁদের সৌন্দর্য নষ্ট করছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দৃশ্য দূষণ থেকে চাঁদকে বাঁচাতে খুব শিগগিরই মানুষের মলের সেই ব্যাগ চাঁদ থেকে সরানোর ব্যবস্থা করছে নাসা।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস
বাংলাদেশ সময়: ১৪:৫৯:৪১ ৪৩ বার পঠিত