শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এমপি বলেছেন, বাংলাদেশ পেটেন্ট আইন, ২০২২, বাংলাদেশ শিল্প-নকশা আইন, ২০২৩ প্রনয়ণ করা হয়েছে এবং ট্রেডমার্ক আইন, ২০০৯ সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে ইলিশ, জামদানি, রংপুরের শতরঞ্জজিসহ ১৭টি পণ্যকে ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেছে, যা বাণিজ্যিকীকরণের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতি লাভবান হতে পারে। বাংলাদেশে মেধাসম্পদ সংরক্ষণ ব্যবস্থা যত শক্তিশালী হবে, এদেশে বৈদশিক বিনিয়োগ তত বাড়বে।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, নতুন উদ্ভাবন ও সৃষ্টিশীলতার প্রকাশই মেধাসম্পদ আর এই উদ্ভাবন ও সৃষ্টিশীলতাকে উৎসাহিত করার সাথে অর্থনৈতিক উন্নয়নের সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর। জাতি হিসেবে আমরা যত বেশি জ্ঞানভিত্তিক উদ্ভাবন ও সৃষ্টিশীলতাকে কাজে লাগাবো, তত বেশি সমৃদ্ধির দিকে অগ্রসর হতে পারবো। একবিংশ শতাব্দীতে এসে বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এখন আমরা উন্নয়নশীল দেশের অন্তর্ভুক্ত হয়েছি, এই উন্নয়নশীলতা ধরে রাখতে না পারলে আমরা আবার পিছিয়ে যাব। তাই টেকসই উন্নয়ন ও ধারাবাহিক অগ্রগতির জন্য গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে ব্যয় বৃদ্ধি করে উদ্ভাবনী কর্মকাণ্ডকে উৎসাহ প্রদান করতে হবে এবং মানব কল্যাণের জন্য সৃষ্ট উদ্ভাবনকে সহজলভ্যভাবে ব্যবহার উপযোগী করতে হবে। সে লক্ষ্যে জোরালোভাবে কাজ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে আমি আহ্বান জানাই।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস্ অধিদপ্তরের (ডিপিডিটি) উদ্যোগে আয়োজিত বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস ২০২৩ উদযাপন উপলক্ষে “Women and IP: Acceleration innovation and creativity” শীর্ষক সেমিনার এবং সাম্প্রতিক সময়ে নিবন্ধনকৃত ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের সনদ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। আজ রাজধানীর একটি হোটেলে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। ডিপিডিটি’র মহাপরিচালক খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও বক্তব্য ডিপিডিটি’র সাবেক রেজিস্ট্রার সানোয়ার হোসেন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্ট (বিল্ড) এর চেয়ারপার্সন নিহাদ কবির।
উল্লেখ্য, এ পর্যন্ত ১৭টি পণ্যকে ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (জিআই) হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। তার মধ্যে ১০টির সনদ পূর্বেই প্রদান করা হয়েছে। আজকে সাম্প্রতিক সময়ে যে ৭টি ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে সেগুলোর আবেদনকারীদের নিকট সনদ প্রদান করা হয়। রাজশাহী-চাপাইনবাবগঞ্জের ফজলি আম এর যৌথভাবে সনদ গ্রহণ করে ফল গবেষণা কেন্দ্র, বিনোদপুর, রাজশাহী এবং চাপাইনবাবগঞ্জ কৃষি এসোসিয়েশন। এছাড়া, বাংলাদেশের শীতল পাটি এর সনদ গ্রহণ করে বাংলাশে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক); বগুড়ার দই এর সনদ গ্রহণ করে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি, বগুড়া; শেরপুরের তুলশীমালা ধান এর সনদ গ্রহণ করে শেরপুর জেলা প্রশাসক; চাপাইনবাবগঞ্জের ল্যাংড়া আম এবং আশ্বিনা আম এর সনদ গ্রহণ করে চাপাইনবাবগঞ্জের আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র; নাটোরের কাঁচাগোল্লা এর সনদ গ্রহণ করে নাটোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক।
অনুষ্ঠানে “A production process for totally biodegradable biopolymer from jute” শীর্ষক উদ্ভাবনের জন্য বিজ্ঞানী ড. মোবারক আহমদ খান-কে পেটেন্ট সনদ প্রদান করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:২৩:৪১ ১৫৬ বার পঠিত