স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম বলেছেন, বাঙালি জাতির স্বাধীনতা সংগ্রামের সুদীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর থেকে নানা ধাপে এই সংগ্রাম এগিয়ে চলে যার প্রতিটি ধাপে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম ওতোপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে। ৫২ ভাষা আন্দোলন, ৫৪ যুক্ত ফ্রন্ট নির্বাচন, ৬৬ ছয় দফা আন্দোলন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকে ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান এবং সবশেষে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধ প্রতিটি স্তরেই বঙ্গবন্ধু ছিলেন অপরিহার্য। এই দীর্ঘপথ পরিক্রমায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা।
বঙ্গবন্ধুকে ছাড়া স্বাধীনতার ঘোষণা কিভাবে আইনসিদ্ধ হতে পারে প্রশ্ন রেখে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, এটি শুধু আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাসের ঘৃণ্য বিকৃতি নয়, বাস্তবতা বিবর্জিত দাবি। অথচ এরকম একটি মিথ্যা দাবি বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে করে আসছে বাঙালি জাতিকে দ্বিধা বিভক্ত ও বিভ্রান্ত করার জন্য।
তিনি আজ ঢাকা ওয়াসা আয়োজিত জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাৎ বার্ষিকী স্মরণে এক আলোচনা ও দোয়া মাহফিলের প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন।
বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বিএনপির আমলে কৃষক সারের জন্য আন্দোলন করে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে। বিদ্যুতের জন্য আন্দোলন করে মানুষ নিজের জীবন উৎসর্গ করেছে। অথচ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিগত ১৫ বছরের শাসনামলে এ ধরনের ন্যাক্কারজনক কোন ঘটনা ঘটেনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে যখন ক্ষমতা গ্রহণ করেন তখন দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ছিল মাত্র ৬০০ মেগাওয়াট যা পাঁচ বছরের মাথায় তিনি ৪৩০০ মেগাওয়াটে উত্তীর্ণ করেন। আর বর্তমানে শতভাগ বিদ্যুতায়নের ফলে দেশের অর্থনীতি থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রেই ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে, জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ২০০৯ সালে যখন ক্ষমতাগ গ্রহণ করে তখন মাথাপিছু আয় ৭০০ ডলার থেকে বর্তমানে তা বৃদ্ধি পেয়ে ২৮০০ ডলারের অধিক হয়েছে জানিয়ে মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, যারা চোখ থাকতেও অন্ধ তাদেরকে কেউ দেখাতে পারে না। জাতিসংঘ, বিশ্বব্যাংক, এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক, আইএমএফ থেকে শুরু করে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করলেও বিএনপি নেতৃবৃন্দ অন্ধকারে সরকারের ব্যর্থতা খুঁজে বেড়ায় বলেও জানান মন্ত্রী।
বাংলাদেশ নানা ষড়যন্ত্র ও প্রতিবন্ধকতা ডিঙিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে বর্তমান সরকার নিরোলসভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইও প্রকৌশলী তাকসিম এ খান, প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি মোঃ আশকার ইবনে শায়েখ খাজা এবং এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা ওয়াসা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি তাছাদ্দুক হুসেন। আলোচনা সভা শেষে ১৫ই আগস্ট এর সকল শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২২:১৯:৪৮ ৪৪ বার পঠিত