শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে তামাক ও মাদক থেকে দূরে থাকার জন্য নতুন প্রজন্মের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত হচ্ছে। এ অগ্রগতির ধারক হবে নতুন প্রজন্ম। তাই, তাদেরকে আমাদের ভাষা, সংস্কৃতি এবং মহান মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে পরিস্কার ধারণা থাকতে হবে। একই সঙ্গে নিজেদের স্বাস্থ্য এবং পরিবেশ বিষয়ে সচেতন হতে হবে। দেশকে এগিয়ে নিতে সুস্থ ও সমৃদ্ধ তরুণ প্রজন্ম দরকার। তাই সব ধরনের নেতিবাচক বিষয় থেকে আমাদের তরুন প্রজন্মকে দূরে থাকতে হবে। এভাবেই প্রধানমন্ত্রীর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে পারবো আমরা।’
শিক্ষামন্ত্রী আজ সোমবার সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে ‘স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন’ এবং ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস’ অয়োজিত এ আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সংসদ সদস্য ডা. মো. হাবিবে মিল্লাতের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ এবং ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত এবং জাতির পিতাসহ ১৫ আগস্ট-’৭৫’র সকল শহীদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।
ড. শাম্মী আহমেদ বলেন, ‘নতুন প্রজন্মকে স্বাধীন বাংলার সঠিক ইতিহাস জানতে হবে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর থেকে এই দেশে দীর্ঘদিন আমরা সঠিক ইতিহাস থেকে দূরে ছিলাম। দুরন্ত বাংলাদেশের এই গতিকে ধরে রাখতে হলে নতুন প্রজন্মকে সঠিক ইতিহাস জানতে হবে। তারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হতে পারলে এই জাতি আরো সমৃদ্ধ হবে।’
ড. মো. মশিউর রহমান বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক এবং বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের নানান দিক নিয়ে আলোচনা করেন এবং তরুন প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারন করে জাতীয় উন্নয়নে কাজ করার আহবান জানান।
অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবে মিল্লাত এমপি বলেন, ‘একটি সুস্থ প্রজন্ম গড়ে তুলতে হলে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বাস্তবায়নের বিকল্প নেই। তিনি বলেন, ‘তামাকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা এজন্য জরুরী যে, ধূমপান না করেও আমাদের সন্তানেরা পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছে। বিশেষ করে শিশু ও নারীরা ভুক্তভোগী হচ্ছে। আমরা চাই, যেকোন মূল্যে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বাস্তবায়ন। এজন্য অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ ও জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া প্রস্তাবনা দ্রুত পাশের উদ্যোগ গ্রহণে ১৫২ জন সংসদ সদস্যের সুপারিশ মন্ত্রিপরিষদ সচিবের দপ্তরে পেশ করা হয়েছে।’
এই অনুষ্ঠানে ‘জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় ২০৪০ সালের মধ্যে তামাক মুক্ত বাংলাদেশের অঙ্গীকার’ বিষয়ক বক্তব্য উপস্থাপনা করেন ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস’র অ্যাডভোকেসি ম্যানেজার আতাউর রহমান মাসুদ। তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রায় ৪ কোটি মানুষ তামাক গ্রহণ করে। তাদের কারণে, বাকি ১৩ কোটি মানুষও তামাকের প্রভাবে আক্রান্ত হয়। দেশে তামাকজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে বছরে প্রায় ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ মারা যায়। এছাড়াও, বাংলাদেশ তামাকের কারণে প্রতিবছর প্রায় ৭ হাজার ৬শ’ ৬০ কোটি টাকা অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়।
আতাউর রহমান মাসুদ বলেন, ‘আমাদের জনস্বাস্থ্য, বিশেষ করে তরুন সমাজ ও শিশু-কিশোরদের রক্ষার্থে এবং অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের গুরুত্ব অপরিসীম।
বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং শিক্ষকরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সভায় শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষার্থীদের সুস্বাস্থ্য রক্ষা, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, ধূমপান থেকে মুক্তি ও তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বাস্তবায়নের শপথ করান।
বাংলাদেশ সময়: ২২:১৬:১২ ৬১ বার পঠিত