মধ্যপ্রাচ্যের বদলে এবার জাপান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ ইউরোপে চোখ বাংলাদেশের। পাঠাবে দক্ষ জনশক্তি। তথ্যপ্রযুক্তি, নির্মাণ শিল্প, কৃষি ও খাদ্য, কেয়ার গিভিং খাতের জন্য দক্ষ কর্মী প্রস্তুতের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। নিরাপদ পরিবেশ আর উচ্চ বেতনের কর্মসংস্থানের জন্য বাজার যাচাই, সমঝোতা স্মারক সই ও জিটুজি চুক্তি সইয়ের চেষ্টা চালাচ্ছে প্রবাসী কল্যাণ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বিশ্বজুড়ে দ্রুত বদলাচ্ছে শ্রমবাজার। কর্মসংস্থানের চাহিদা, জোগান, ধরণ, মজুরি- সবই সরছে প্রচলিত ধারণা থেকে। যেখানে বিকল্প নেই দক্ষ কর্মীর। নতুন এই দিন বদলের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশের কর্মীরাও।
মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিকূল পরিবেশ, কম বেতনের কর্মসংস্থানের বাইরে পা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সরকারও। দৃষ্টি এখন এশিয়ার জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ইউরোপের বেলজিয়াম, জার্মানি, পোল্যান্ড, গ্রিস, পর্তুগাল, হাঙ্গেরি, ইতালিতে। যেখানে নির্মাণ শিল্প, কৃষি ও খাদ্য, কেয়ার গিভিং, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দক্ষ কর্মীদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে বাজার যাচাই, সমঝোতা স্মারক সই ও জিটুজি চুক্তি সাক্ষরের চেষ্টা করছে প্রবাসী কল্যাণ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
কর্মীদের প্রশিক্ষণের কাজ শুরু করেছে জনশক্তি রফতানি ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান ব্যুরো (বিএমইটি) ও বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড (বোয়েসেল)।
এ বিষয়ে বিএমইটি অতিরিক্ত মহাপরিচালক এ এইচ এম আনোয়ার পাশা সময় সংবাদকে বলেন,
মধ্যপ্রাচ্য বা সৌদি আরবে ৫৫ শতাংশ কর্মী রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন ২৩ শতাংশ। আর উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ৭ শতাংশ কর্মী রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন ২০ শতাংশ। এর কারণ হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের চেয়ে উন্নত দেশগুলোতে দক্ষ শ্রমিকরা যাচ্ছেন। তাই তাদের রেমিট্যান্স পাঠানোর পরিমাণটা বেশি।
সময় সংবাদের সঙ্গে কথা বলছেন বিএমইটি অতিরিক্ত মহাপরিচালক এ এইচ এম আনোয়ার পাশা
২০২৫ সালের মধ্যে নতুন ১০টি দেশে কর্মী পাঠানোর সম্ভাবতা যাচাইয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বোয়েসেল। কর্মীদের মধ্যে পোশাক খাত ও কেয়ার গিভিংয়ে নারী কর্মীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সবচেয়ে বেশি। ২০২০ থেকে ২০২২ পর্যন্ত বোয়েসেলের মাধ্যমে বিনা অভিবাসন ব্যয়ে বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়েছেন ১৬ হাজার ৫৯৩ দক্ষ নারী কর্মী।
জনশক্তি রফতানি ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান ব্যুরোর তথ্য বলছে, ১৯৯১ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত ৯ লাখ ২ হাজার ৪৮২ জন নারী কর্মীর বিদেশে কর্মসংস্থান হয়েছে।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন বলেন,
চাহিদা আসছে। কিন্তু যেকোনো চাহিদার ক্ষেত্রে আমাদের কিছু কারণ এবং অসুবিধা বিবেচনা করতে হয় যে আমরা কীভাবে সেখানে পাঠাবো। তাদের সঙ্গে চুক্তি ও সমঝোতা (এমওইউ) করার ব্যাপারগুলো আমরা সিরিয়াসলি দেখি।
নিরাপদ ও শোভন অভিবাসন নিশ্চিত করতে ২০৩০ সালের মধ্যে বিদেশে শতভাগ দক্ষ প্রশিক্ষিত জনশক্তি পাঠানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার।
গত অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ১১ লাখ ৪০ হাজার কর্মীর বিদেশের বিভিন্ন দেশে কর্মসংস্থান হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১১:০৩:৩৯ ৫০ বার পঠিত