দেশব্যাপী ইন্টারনেট ছড়িয়ে দিতে বাংলাদেশ অভাবনীয় সফলতা অর্জন করেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় গত চৌদ্দ বছরে আমরা শুধু ডিজিটাল সংযুক্তির মহাসড়কই তৈরি করিনি, ইন্টারনেটের প্রতি এমবিপিএস এর মূল্য ২৭ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ৬০ টাকায় নামিয়ে এনেছি। এক দেশ এক রেট নির্ধারণের মাধ্যমে ডিজিটাল বৈষম্য দূর করা হয়েছে। ইন্টারনেট এখন মানুষের শ্বাস প্রশ্বাসের মতো। ২০০৮ সালে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহার হতো সাড়ে সাত জিবিপিএস তা বর্তমানে ৪১ শত জিবিপিএস এ উন্নীত হয়েছে। সে সময়ের ৮ লাখ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর স্থলে এখন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সাড়ে ১২ কোটি। ডিজিটাল নিরাপত্তার জন্য নেটওয়ার্কের নিরাপত্তা অপরিহার্য। এ বিষয়েও আমরা অত্যন্ত মনোযোগী। এ জন্য একইসঙ্গে আইপিভি ৪ ও আইপিভি ৬ অ্যানাবল রাউটার আমদানিতে বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তার জন্য আইপিভি ৬ বাস্তবায়নে সরকার বদ্ধপরিকর।
মন্ত্রী আজ ঢাকায় সোনারগাঁও হোটেলে ইএসপিএপি ও বিডিনগ আয়োজিত সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অপারেটরস গ্রুপের সম্মেলন- স্যানোগ ৩৯ ও বিডিনগ এর ১৬তম সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বিটিআরসি‘র চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মাহবুব-উল-আলম, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ আবদুর রহিম খান, এপনিক এর মহাপরিচালক পল উইলসন, স্যানোগ চেয়াম্যান রুপেস শ্রেষ্ঠ, বিডিনগ প্রেসিডেন্ট রাশেদ আমিন এবং আইএসপিএবি সভাপতি মোঃ এমদাদুল হক বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিজিটাল এইজ ডিসি’র হেড অব ইন্টারকানেক্ট ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড অপারেশন রাফেল হো।
ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের এই অগ্রদূত বলেন, আমরা ডিজিটাল প্রযুক্তির মহাসড়ক নির্মাণে এগিয়ে থাকার পাশাপাশি ডিজিটাল নিরাপত্তা, ডাটা নিরাপত্তা, ব্যক্তি সমাজ ও রাষ্ট্রের ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করছি। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদূরপ্রসারী ভিশন ও গতিশীল নেতৃত্বের কারণে প্রথাগত সেবা ডিজিটাল সেবায় রূপান্তরিত হচ্ছে। এবারের ঈদে ট্রেনের টিকিট শতভাগ অনলাইনে বিক্রি হয়েছে। ভূমি ব্যবস্থার পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল রূপান্তর হয়েছে।
কম্পিউটারে বাংলা ভাষার প্রবর্তক মোস্তাফা জব্বার বলেন, প্রযুক্তিতে ৩২৪ বছর পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশ বিশ্বে আজ অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। দেশের প্রতিটি মানুষের দোরগোড়ায় দ্রুত গতির ইন্টারনেট পৌঁছে দিতে সরকার কাজ করছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে দেশের প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে দ্রুতগতির ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। ২০২৩ সালের মধ্যে এমন কোনো ইউনিয়ন থাকবে না যেখানে দ্রুততগতির ইন্টারনেট সুবিধা থাকবে না। আমরা দেশের শতকরা ৯৮ ভাগ অঞ্চলে মোবাইল ফোনের জন্য ফোর জি নেটওয়ার্ক পৌছে দিতে সক্ষম হয়েছি। ২০২১ সালে আমরা ৫জি প্রযুক্তি চালু করেছি।
বাংলাদেশের ৪ জনসহ ১১ জন নেটওয়ার্ক প্রকৌশলীকে সম্মেলনে দেয়া হয় ফেলোশিপ। সম্মেলনের অংশ হিসেবে আগামী চার দিন হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে চলবে নেটওয়ার্ক প্রকৌশলীদের কর্মশালা। দক্ষিণ এশিয়ার ৬টি দেশের ৩০০ প্রকৌশলী অংশ নিচ্ছে এতে।
বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যামসুন্দর সিকদার বললেন, পাঁচ দিনের এই আয়োজন অংশগ্রহণকারীদের দক্ষতা দ্বিগুণ করবে এবং স্মার্ট বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮:১৫:৩৭ ৭৫ বার পঠিত