সড়ক দুর্ঘটনায় অন্য কোনো কারণ বিবেচনা না করে কেবল চালকের ওপর দোষারোপ সংস্কৃতি আমাদের সমাজ এবং রাষ্ট্রীয় জীবনে একটি নৈমিত্তিক ঘটনা। কেবলমাত্র চালকদের দোষারোপের সংস্কৃতি থেকে বের হতে না পারলে সড়ক দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণসমূহ এবং একটি টেকসই প্রতিকার সম্ভব নয়। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক এবং কাঠামোগত উন্নয়নের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি যথেষ্ট বিবেচনার দাবি রাখে।
রোববার (১৩ আগস্ট) প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন কর্তৃক আয়োজিত ‘সড়ক দুর্ঘটনায় চালকের দায় কতটুকু?’ শীর্ষক এক গোল টেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনায় সড়ক পরিবহন শ্রমিকসহ গড়ে ১১ থেকে ১৩ জন মানুষ প্রাণ হারায়, যার দায়ভার প্রধানত বহন করতে হয় চালকের। প্রকৃত অর্থেই চালকই কি সড়ক দুর্ঘটনার জন্য একমাত্র দায়ী?
ফেডারেশনের সভাপতি শাহজাহান খান বলেন, পরিবহন শ্রমিকরা কম সম্মানিত নন। সমগ্র দেশে তারা সেবা দিয়ে থাকেন। তবে পাঠ্যক্রমে ট্রাফিক রুল নিয়ে আসতে হবে। সচেতনতা গড়ে তোলাই সবচেয়ে বড় উপায়। গাড়ি চালকের জন্য ভর্তুকি দিতে হবে। ফেডারেশনের অনেক দাবিই সরকার পূরণ করেছে।
তিনি বলেন, আমরা চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে কাজ করছি। আমাদের বিরুদ্ধে মানুষের ভুল ধারণা রয়েছে। পরিবহন সেক্টরে সুশৃঙ্খল এবং নিরাপদ সড়ক করতে শ্রমিক মালিক বিআরটিএ সকলের সমন্বয় প্রয়োজন। তবে পুলিশও দায় এড়াতে পারে না। তাদের ভুল সিগন্যালও দুর্ঘটনায় প্রভাব রাখে। হাইওয়েতে এখন অপরাধ শূন্যের কোঠায়। যে কোনো সরকার ফেডারেশনকে সহযোগিতা করলে দুর্ঘটনা কমে আসবে।
শাহজাহান খান বলেন, বাস্তবতা আর আবেগ মিলেই আমরা কাজ করছি। আগে সড়ক পরিবহনে কথায় কথায় গাড়ি বন্ধ হয়ে যেত। এখন এটি হয় না। এখন যৌক্তিকভাবে সব দাবি করা হয়।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলীর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক মো. শাহাবুদ্দিন খান, বিআরটিএর চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার, বুয়েটের এক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক কাজী সাইফুন নেওয়াজ, শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:২৭:৩৩ ৫২ বার পঠিত