ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তার সরকারের ওপর আনা বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাব ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে লোকসভা। বুধবার (৯ আগস্ট) এই প্রস্তাবের ওপর কথা বলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। এ সময় বিজেপি সরকারের কড়া সমালোচনা করেন তিনি। রাহুল অভিযোগ করেন, বিজেপি মণিপুর রাজ্যে আগুন জ্বালিয়েছে, এখন তারা হরিয়ানাকে জ্বালানোর চেষ্টা করছে।
তার বক্তব্য শেষ হওয়ার পর কথা বলেন বিজেপি নেত্রী ও কেন্দ্রীয় সরকারের মানব সম্পদ ও উন্নয়নমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। তিনি রাহুলের সমালোচনা করেন এবং তাকে নারী বিদ্বেষী হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি দাবি করেন, রাহুল গান্ধী লোকসভার ভেতরে উড়ন্ত চুম্বন দিয়েছেন। এর মাধ্যমে লোকসভার নারী সদস্যদের অপমান করেছেন তিনি।
রাহুল গান্ধী তার বক্তব্য শুরু করেন এই বলে, ‘ভারত হলো একটি কণ্ঠস্বর, হৃদয়ের কণ্ঠস্বর। আপনারা মণিপুরের কণ্ঠস্বরকে হত্যা করেছেন। মণিপুরে ভারত মাতাকে হত্যা করেছেন। আপনারা দেশদ্রোহী। আমার মা এখানে বসে আছে। অন্য মা, ভারত মাতাকে মণিপুরে হত্যা করেছেন। এ কারণে প্রধানমন্ত্রী মণিপুরে যাননি। আপনারা ভারত মাতার রক্ষক নন, হত্যাকারী।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মণিপুরে যাননি কারণ তিনি এটিকে ভারতের অংশ মনে করেন না। বিজেপি মণিপুরকে বিভক্ত করে ফেলেছে।’ তিনি অভিযোগ করেন, কেন্দ্র সরকার চাইলে সেনাবাহিনী মোতায়েন করে মণিপুরের দাঙ্গা বন্ধ করতে পারত, কিন্তু তারা তা করেনি।
এরপর তিনি হরিয়ানার হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রতিক দাঙ্গা নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘আপনারা সব জায়গায় কেরোসিন ছিটিয়েছেন, মণিপুরে আপনারা আগুন জ্বালিয়েছেন, এখন হরিয়ানাতেও একই কাজ করার চেষ্টা করছেন।’
রাহুল এমন মন্তব্য করার পর লোকসভার ভেতরে হৈচৈ শুরু হয়। বিজেপি নেতারা তাকে ক্ষমা চাইতে বলেন।
চলতি বছরের মে মাসের শুরুতে মণিপুরে মেতিস ও কুকিদের মধ্যে জাতিগত সহিংসতা শুরু হয়। যা পরবর্তীতে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নেয়। এতে ১৭০ জন মানুষ নিহত হলেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এ নিয়ে কোনো কথা বলেননি।
কিন্তু দুই সপ্তাহ আগে দুই নারীকে বিবস্ত্র করে হাঁটানোর ভয়ংকর ভিডিও ভাইরাল হলে অল্প কথা বলতে বাধ্য হন তিনি। কিন্তু মোদি যেন মণিপুর নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন সেজন্য কংগ্রেস কয়েকদিন আগে তার সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে। এখন এ প্রস্তাবের ওপর লোকসভায় আলোচনা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:৪০:৩৬ ৪৯ বার পঠিত