প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সমাজে ইসলামের সত্যিকারের বার্তা পৌঁছানোর সরকারি পদক্ষেপের অংশ হিসেবে সারা দেশে আরও ৫০টি মডেল মসজিদ এবং ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্বোধন করেছেন।
তিনি এখানে তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যোগদান করে পঞ্চম পর্বে আটটি বিভাগের ৩৪টি জেলার এ মসজিদগুলো উদ্বোধন করেন।
সারাদেশে ৯,৪৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৫৬৪টির মধ্যে নতুনগুলোসহ প্রধানমন্ত্রী এ পর্যন্ত ২৫০টি মসজিদ উদ্বোধন করেছেন।
তিনি এর আগে ২০২১ সালের ১০ জুন, ২০২৩ সালের ১৬ জানুয়ারি, ১৬ মার্চ, ১৭ এপ্রিল এবং আজ ৩০ জুলাই- প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ এবং পঞ্চম ধাপে প্রতিটিতে ৫০টি করে মসজিদ উদ্বোধন করেন।
অবশিষ্ট মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
মডেল মসজিদ এবং ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের মধ্যে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা সহ ওযু ও নামাজের জন্য আলাদা জায়গা রয়েছে।
এছাড়া হজযাত্রীদের নিবন্ধন ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, ইমাম প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, গবেষণা কেন্দ্র ও ইসলামিক লাইব্রেরি, অটিজম কর্নার, দাফনের আগে আচার ব্যবস্থা, গাড়ি পার্কিং সুবিধা, হিফজাখানা, প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা ও কোরআন শিক্ষার ব্যবস্থা, ইসলামিক কনফারেন্স রুম থাকবে। সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড এবং ইসলামী দাওয়াত, ইসলামী বই বিক্রয় কেন্দ্র, মসজিদের সাথে দেশী-বিদেশী অতিথিদের জন্য বোর্ডিং সুবিধা থাকবে মসজিদে।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মোঃ ফরিদুল হক খান এবং এর সচিব এমডি এ হামিদ জমাদ্দার
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মোঃ তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া।
অনুষ্ঠানে কক্সবাজার সদর উপজেলা ও খুলনা জেলার ফুলতলা উপজেলার স্থানীয় সংসদ সদস্য, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সরকারি কর্মকর্তা, আলেম-উলামাসহ সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ওপর একটি ভিডিও-ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।
ইসলামের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এবং দেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে শেখ হাসিনা সারাদেশে ৫৬৪টি মডেল মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছেন।
প্রকল্পের উদ্দেশ্য হল ইসলামী ভ্রাতৃত্ব এবং এর মূল্যবোধকে প্রচার করা এবং সেইসাথে চরমপন্থা ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ইসলামের সারমর্ম প্রচার করা কারণ ধর্ম কখনই এগুলোকে সমর্থন করে না।
এটি সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড প্রচারের পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদ ও নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টিতেও মনোনিবেশ করবে।
এ ক্যাটাগরির অধীনে, ৬৪টি জেলা ও সিটি কর্পোরেশন এলাকায় লিফট সুবিধা এবং ২,৩৬০.০৯ বর্গ মিটার প্রতিটি ফ্লোর স্পেস সহ প্রায় ৬৯টি চারতলা মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে।
বি ক্যাটাগরির অধীনে, প্রতিটি ১৬৮০.১৪ বর্গ মিটার ফ্লোর স্পেস দিয়ে ৪৭৫টি মসজিদ তৈরি করা হচ্ছে এবং উপকূলীয় অঞ্চলে সি ক্যাটাগরির অধীনে ১৬টি মসজিদের প্রতিটি ২,০৫২.১২ বর্গ মিটার মেঝে থাকবে।
নতুন উদ্বোধন করা মডেল মসজিদগুলো হলো: ঢাকা বিভাগে-গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলা মডেল মসজিদ, কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলা মডেল মসজিদ, কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুর উপজেলা মডেল মসজিদ, মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলা মডেল মসজিদ, মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর উপজেলা মডেল মসজিদ, শরীয়তপুর জেলার ডামুড্যা উপজেলা মডেল মসজিদ, টাঙ্গাইল জেলার সদর উপজেলা মডেল মসজিদ।
রাজশাহী বিভাগের মসজিদগুলো হলো: বগুড়া জেলার আদমদীঘি উপজেলা মডেল মসজিদ, বগুড়া জেলার সোনাতলা উপজেলা মডেল মসজিদ, নওগাঁ জেলার রাণীনগর উপজেলা মডেল মসজিদ, নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলা মডেল মসজিদ, নওগাঁ জেলার জেলা সদর মডেল মসজিদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার জেলা সদর মডেল মসজিদ, নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলা মডেল মসজিদ, পাবনা জেলার বেড়া উপজেলা মডেল মসজিদ, পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলা মডেল মসজিদ, পাবনা জেলার সদর উপজেলা মডেল মসজিদ, রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলা মডেল মসজিদ, রাজশাহী জেলার দুর্গাপুর উপজেলা মডেল মসজিদ।
রংপুর বিভাগের মডেল মসজিদগুলো হলো: গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলা মডেল মসজিদ, কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী উপজেলা মডেল মসজিদ, দিনাজপুর জেলার বিরামপুর উপজেলা মডেল মসজিদ, লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলা মডেল মসজিদ।
ময়মনসিংহ বিভাগের মডেল মসজিদগুলো হলো: নেত্রকোণা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলা মডেল মসজিদ, নেত্রকোণা জেলার খালিয়াজুরী উপজেলা মডেল মসজিদ, নেত্রকোণা জেলার সদর উপজেলা মডেল মসজিদ, জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা মডেল মসজিদ, ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলা মডেল মসজিদ।
বরিশাল বিভগের মডেল মসজিদগুলো হলো: বরিশাল জেলার সদর উপজেলা মডেল মসজিদ, ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলা মডেল মসজিদ, ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলা মডেল মসজিদ, পিরোজপুর জেলার মঠবাড়ীয়া উপজেলা মডেল মসজিদ।
চট্টগ্রাম বিভাগের মডেল মসজিদগুলো হলো: ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলা মডেল মসজিদ, চাঁদপুর জেলার হাইমচর উপজেলা মডেল মসজিদ, চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলা মডেল মসজিদ, নোয়াখালী জেলার সদর উপজেলা মডেল মসজিদ, কুমিল্লা জেলার নাঙ্গলকোট উপজেলা মডেল মসজিদ, কুমিল্লা জেলার সদর উপজেলা মডেল মসজিদ, কক্সবাজার জেলার সদর উপজেলা মডেল মসজিদ, চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া উপজেলা মডেল মসজিদ, ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া উপজেলা মডেল মসজিদ, রাঙ্গামাটি জেলার কাউখালী উপজেলা মডেল মসজিদ, রাঙ্গামাটি জেলার নানিয়ারচর উপজেলা মডেল মসজিদ, রাঙ্গামাটি জেলার রাজস্থলী উপজেলা মডেল মসজিদ।
খুলনা বিভাগের মডেল মসজিদগুলো হলো: খুলনা জেলা ফুলতলা উপজেলা মডেল মসজিদ, খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলা মডেল মসজিদ, মাগুরা জেলার সদর উপজেলা মডেল মসজিদ, মাগুরা জেলার জেলা সদর মডেল মসজিদ, মেহেরপুর জেলার সদর উপজেলা মডেল মসজিদ।
সিলেট বিভাগের মডেল মসজিদ হলো : সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ উপজেলা মডেল মসজিদ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:৪০:২০ ৭৯ বার পঠিত