বিএনপি যতই মারামারি, পাল্টাপাল্টি হুমকি দিক না কেন আওয়ামী লীগ সরকার সংবিধান থেকে এক চুলও নড়বে না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি মার্কা তত্ত্বাবধায়ক আমরা চাই না। বিএনপি মার্কা নির্বাচনকালীন সরকার আমরা মানি না। সংবিধানে যা আছে, সে অনুযায়ী সব করবো। এর বাইরে আমরা একচুলও নড়বো না। মারামারি হুমকিতেও কাজ হবে না। আওয়ামী লীগ কারো কাছে মাথানত করবে না।’
ওবায়দুল কাদের আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনের সামনে আয়োজিত শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এই সমাবেশের আয়োজন করে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, তত্ত্বাবধায়ক হবে না। সরকারের পদত্যাগ হবে না। শেখ হাসিনা দায়িত্বে থেকে নির্বাচনকালীন সরকারে থাকবেন। মিথ্যাচার করে কোনো লাভ হবে না। আমেরিকান ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের আমরা বলেছি, আমরা শান্তি চাই। নির্বাচনের সময়ও শান্তি চাই।
সরকারের পদত্যাগসহ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিএনপির একদফা আন্দোলনের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ফখরুল ইসলাম বলেছেন, তাদের পদযাত্রা না কি জয়যাত্রা, বিজয়যাত্রা। আসলে তাদের পদযাত্রা পরাজয় যাত্রা। তাদের পতনযাত্রা শুরু হয়ে গেছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন কী দিয়ে গেছে? এমন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক দিয়েছে? সরকারের পদত্যাগ, না কি শেখ হাসিনার পদত্যাগ? তারা দেবার কে? বিএনপি আসলে পেয়েছে একটা হাসের ডিম, ঘোড়ার ডিম। আমেরিকানরা এসেছে, বিএনপি মনে করেছে তারা বলবে- সংলাপ করতেই হবে। আসলে তারাও দিয়ে গেছে ঘোড়ার ডিম।
দেশবাসির উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির ওপর ভর করে লাভ নেই। বিএনপি ঘোড়ার ডিম ছাড়া কিছুই দিতে পারবে না। বিএনপি কি দিবে? একদিনে শত সেতু শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেছেন। বিএনপির আছে কিছু দেখাবার? ফখরুল ইসলাম কি দেখিয়ে ভোট করবেন? সামনের কয়েক মাস উদ্বোধন আর উদ্বোধন। তিনি বলেন, বিএনপি বুঝে গেছে আগামী নির্বাচনে তাদের জেতার সম্ভাবনা নেই। গতবারের মতো এবারো হারবে। ওদের সব দল, জোট, আন্দোলন ভুয়া। এই ভুয়া আন্দোলনের পরাজয় অনিবার্য। তাদের বিজয় যাত্রা বিফলে যাবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম বলেন, বিএনপি একটি সন্ত্রাসী দল। এ সন্ত্রাসী দল মিরপুরে ছাত্রলীগের কর্মীদের ওপর হামলা করেছে। মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দিয়েছে। ইতোমধ্যে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড শুরু করেছে। আমরা রাজপথে মোকাবিলা করব।
সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম বলেন, আমরা উন্নয়নের ধারাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। পদযাত্রার নামে মিরপুরে যেভাবে ছাত্রদের ওপর হামলা করেছে, তারা বাংলাদেশকে আবার সন্ত্রাসের অভয়ারণ্যে পরিণত করতে চায়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন। তাই, সন্ত্রাসের পথে না হেঁটে নির্বাচনের পথে হাঁটুন। অন্যথায় আপনাদের অস্তিত্ব থাকবে না।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফির সভাপতিত্বে সমাবেশে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম ও এস এম কামাল হোসেন, মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সমাবেশ শেষে পৌনে ৫টার দিকে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের সামনে থেকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের শোভাযাত্রা শুরু হয়। শোভাযাত্রাটি ধানমন্ডিস্থ বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এতে আওয়ামী লীগের সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে অংশ গ্রহণ করে। তাদের হাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম নিয়ে প্ল্যাকার্ড, ব্যানার ও ফেস্টুন শোভা পায়।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:০০:৩৮ ৪৪ বার পঠিত