মাতৃ ও নবজাতকের মৃত্যুরোধে বাংলাদেশ সরকার উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাাতিক উন্নয়ন সংস্থা (ইউএসএআইডি) এর অর্থায়নে পাঁচ বছর মেয়াদী ‘মামনি মাতৃ ও নবজাতক স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়ন প্রকল্পের (এমএনসিএসপি)’ সমাপ্তি উপলক্ষে গতকাল রাজধানীতে এক অভিজ্ঞতা বিনিময় সভায় বক্তাগন এসব কথা বলেন।
সেভ দ্য চিলড্রেন অভিজ্ঞতা বিনিময় সভার আয়োজন করে।
সভায় বলা হয়, কর্মসূচিটি মাতৃ ও নবজাতকের স্বাস্থ্যসেবার মান বৃদ্ধি, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা জোরদার এবং বাংলাদেশের মানুষের অত্যাবশ্যকীয় স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে কমিউনিটি সম্পৃক্ততার ওপর গুরুত্ব দিয়েছে।
সভায় অভিমত ব্যক্ত করা হয় যে, কর্মসূচিটিতে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের সক্ষমতা বৃদ্ধি, স্বাস্থ্য অবকাঠামো ও সরঞ্জামের উন্নয়ন এবং মাতৃ ও নবজাতক স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ে কমিউনিটি সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রচার কার্যক্রম পরিচালনাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ বাস্তবায়নের মাধ্যমে মাতৃ ও নবজাতকের মৃত্যু রোধে গৃহীত পদক্ষেপ গ্রহনের কারনে বাংলাদেশ সরকারের এই উল্লেখযোগ্য অবদান।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথিদের মধ্যে ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) উপসচিব মো. নাসির উদ্দিন, ইউএসএআইডি বাংলাদেশের ইনফেকশাস ডিজিস টীম লিড ডা. সামিনা চৌধুরী, বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস এর সভাপতি ও নবজাতক স্বাস্থ্য বিষয়ক জাতীয়কারিগরি ওয়ার্কিং কমিটির চেয়ারপারসন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ, প্রাক্তন সভাপতি, অবস্টেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশ (ওজিএসবি) অধ্যাপক ফেরদৌসী বেগম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাতৃস্বাস্থ্য কর্মসূচির প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. মো. আজিজুল আলীম।
সম্মানিত অতিীথর বক্তব্যে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) উপসচিব মো. নাসির উদ্দিন বলেন, প্রকল্পটি গর্ভবতী নারী, মা এবং নবজাতকের জন্য জীবন রক্ষাকারী স্বাস্থ্য সহযোগিতার সহজলভ্যতা বৃদ্ধি করেছে এবং প্রায় ৩৫ দশমিক ৫ মিলিয়ন জনসংখ্যার কাছে স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দিয়েছে।
তিনি জানান, “ইউএসআইডি’র মামনি এমএনসিএসপি কর্মসূচিটি সিভিল সার্জন, হেলথ ফ্যাসিলিটি ম্যানেজার এবং সেবা প্রদানকারীসহ সম্প্রতি গ্র্যাজুয়েট মিডওয়াইফদেরসাথে কাজের মাধ্যমে বিশেষ করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পর্যায়ে প্রধান মাতৃ ও নবজাতক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী হিসেবে তাদের অর্পিত দায়িত্ব¡ গ্রহণে সক্ষম করেছে।”
তিনি বলেন, প্রকল্পের কার্যক্রম ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে, অর্থাৎ প্রকল্পটি শেষ হয়ে গেলেও এর বেশিরভাগ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
প্রকল্প সমর্থিত জেলাগুলো ছাড়াও বাংলাদেশের ৬৪টি জেলায় জীবন রক্ষাকারী এই কার্যক্রম প্রসারিত করতে বাংলাদেশ সরকারকে দাতাদের সাথে কাজ চালিয়ে নেয়ার সুপারিশ করা হয় অনুষ্ঠানে।
সভাতে বলা হয়, প্রকল্পটির মাধ্যমে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেলা হাসপাতাল, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং ইউনিয়ন পর্যায়ের স্বাস্থ্য সুবিধাসহ জেলা ও উপজেলা স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা এবং সরকারী খাতের বিভিন্ন সুবিধা সরাসরি উপকৃত হয়েছে।
সভায় সেভ দ্য চিলড্রেন ও সহযোগী সংস্থাগুলোর সমন্বয়ে গঠিত কনসোর্টিয়াম দ্বারা বাস্তবায়িত ইউএসএআইডি মামনি প্রকল্পটি বাংলাদেশের ১৭ টি জেলায় মা ও নবজাতকের স্বাস্থ্যের উন্নয়নে কাজ করেছে। প্রকল্পের দীর্ঘ পাঁচ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা বিশদভাবে তুলে ধরা হয় সমাপনী অনুষ্ঠানে।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:০১:৫৬ ৪৫ বার পঠিত