শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান বলেছেন, দেশের অভ্যন্তরে কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের মাধ্যমে দক্ষ জনবল গড়ে তোলার লক্ষ্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীনে কর্মসংস্থান অধিদপ্তর গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, কর্মসংস্থান সম্পর্কিত কার্যক্রম সূচারুভাবে সম্পাদন, কর্মসংস্থান সেবা দান এবং কর্মসংস্থানের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর, সংস্থার কার্যক্রমের মধ্যে সমন্বয় সাধনে জাতীয় কর্মসংস্থান নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীতে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) যৌথ আয়োজনে ‘জাতীয় কর্মসংস্থান নীতিমালা এবং বাংলাদেশের শ্রম বাজারে কর্মসংস্থান এর চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক কৌশলগত সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শ্রম প্রতিমন্ত্রী বলেন, নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি আমাদের অবশ্যই শোভন কর্মপরিবেশ, শ্রমিকদের জীবনমানের উন্নয়ন এবং তাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে ৩ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে বেকারত্বের অবসান ঘটানো, টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ট ৮ অনুযায়ী শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে শ্রম মন্ত্রণালয় কাজ করছে। জাতীয় কর্মসংস্থান নীতিমালার ওপর সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, দপ্তর সংস্থা, সামাজিক সংগঠন, বেসরকারি সংস্থা, সিভিল সোসাইটি এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারগণকে নিয়ে আরো কৌশলগত সংলাপ এবং অংশগ্রহণমূলক আলোচনার আয়োজন করা হবে বলে তিনি জানান।
শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. এহছানে এলাহীর সভাপতিত্বে সংলাপে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ড. মো. কাউসার আহাম্মদ, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ এর সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান বক্তৃতা করেন। সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন র্যাপিড এর চেয়ারম্যান ড. এম এ রাজ্জাক।
বিশ্বের অন্যান্য দেশে কর্মসংস্থান নীতিমালার চর্চার প্রেক্ষিত তুলে ধরে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইএলও এর কর্মসংস্থান, শ্রম বাজার এবং যুব বিষয়ক শাখার প্রধান ড. শের ভারিক। সংলাপে জাতীয় কর্মসংস্থান নীতিমালা এবং বাংলাদেশের শ্রম বাজারে কর্মসংস্থানের চ্যালেঞ্জ বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গবেষণা সংস্থা রিসার্চ এন্ড পলিসি ইন্ট্রিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র্যাপিড) এর চেয়ারম্যান ড. এম এ রাজ্জাক।
সংলাপে আইলও এর কান্ট্রি ডিরেক্টর তোমো পুটিআইনেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. তাসনিম আরেফা সিদ্দিকী প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
ড.এম এ রাজ্জাক মূল প্রবন্ধে বাংলাদেশের কর্মসংস্থান নীতি, প্রেক্ষাপট এবং শ্রমবাজারের চ্যালেঞ্জের উপর পর্যালোচনা উপস্থাপন করেন। তিনি প্রধানত শ্রম মন্ত্রণালয়ের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতার ভিত্তিতে কর্মসংস্থান নীতির যথাযথ বাস্তবায়ন এবং অনানুষ্ঠানিক অর্থনীতিতে শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষার ওপর জোর দেন।
তিনি বলেন, কর্মসংস্থানের জন্য উচ্চ সম্ভাবনাময় খাতের চাহিদা-সরবরাহের ব্যবধান বিশ্লেষণ এবং বেকারত্বের মতোই কর্মহীনতাকে সমান গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে।
তিনি বলেন, জাতীয় উন্নয়নে সহায়ক যুগোপযোগী, বৈষম্যহীন, স্ব-উদ্যোগী ও উৎপাদনশীল পূর্ণ কর্মসংস্থান উৎসাহিত করার লক্ষ্যে জাতীয় কর্মসংস্থান নীতি-২০২২ প্রণয়ন করেছে সরকার। দেশের সকল কর্মক্ষম কর্মসংস্থান প্রত্যাশী মানুষের কর্মের সুযোগ সৃষ্টি ও কর্মে নিয়োগের উপায় নির্ধারণ, কর্মসংস্থান এবং কর্মের জন্য জনশক্তিকে উপযুক্ত ও দক্ষ করে তোলার মাধ্যমে বেকারত্বহীন দারিদ্রমুক্ত উন্নত সমাজ প্রতিষ্ঠা করা এ নীতির লক্ষ্য।
বাংলাদেশ সময়: ২০:৩৮:২৬ ৪৮ বার পঠিত