
পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগণায় একটি আতশবাজি তৈরির কারখানায় বিস্ফোরণে চার শিশুসহ প্রাণ হারিয়েছেন একই পরিবারের সাতজন। এখনও নিখোঁজ ৪ জন। গ্রামবাসীদের দাবি, বিস্ফোরণের পর থেকে তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
সোমবার (৩১ মার্চ) রাত সাড়ে ৯টার দিকে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সুন্দরবন লাগোয়া পাথরপ্রতিমার ঢোলাহাট থানার রায়পুরের ৩নং ঘেরিতে বাজি বানানোর এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
নিহতরা হলেন, প্রভাতী বণিক (৮০), সান্ত্বনা বণিক (২৮), অর্ণব বণিক (৯), অস্মিতা বণিক (৬ মাস), অঙ্কিত বণিক (৬ মাস), অরবিন্দ বণিক (৬৫) ও অনুস্কা বণিক (৬)।
জানা যায়, সোমবার (৩১ মার্চ) রাত ১০টা নাগাদ বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে রায়পুরের তৃতীয় ঘেরি এলাকার একটি বাড়ি। তার কিছুক্ষণ পরেই স্থানীয়রা দেখতে পান, দাউ দাউ করে আগুনে জ্বলছে বাড়িটিতে। সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় চিৎকার-চেঁচামেচি। আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন স্থানীয়রা। তার মধ্যেই আরও কয়েকবার বিস্ফোরণ ঘটে।
খবর দেওয়া হয় ঢোলাহাট থানায় ও দমকল বাহিনীকে। ঘটনাস্থলে পুলিশ ও দমকল বাহিনীর সদস্যরা পৌঁছে আগুন নেভানোর চেষ্টার পাশাপাশি বাড়ির ভেতরে আটকে থাকা মানুষজনকে উদ্ধারের চেষ্টা করে। বিস্ফোরণের সময় ওই ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন চার শিশুসহ পরিবারের ১১ সদস্য। আগুনের তীব্রতা এত বেশি ছিল যে সেই চারজন শিশু পুরো ঝলসে যায়, সঙ্গে আরও তিনজন গুরুতর দগ্ধ হন।
স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, বিস্ফোরণের শব্দ শুনে বাইরে বেরিয়ে দেখি দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। এখানে বাজি তৈরি হয়। সেগুলো বিক্রির জন্য বাড়িতে রাখে। হয়তো সেই বাজিতেই কোনোভাবে আগুন লেগে বিস্ফোরণ ঘটে। পুলিশকেও খবর দেওয়ার হয়।
পাথরপ্রতিমা বিধায়ক সমীর কুমার জানান, বাজি তৈরির সময় হঠাৎ বিস্ফোরণ ঘটেছে। পুরো বাড়িতে আগুন ধরে গেছে। বাড়ির ভেতর আরও কয়েকজন থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। ঘটনাস্থলে ঢোলাহাট থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়ন রয়েছে।
ঢোলাহাট থানার পুলিশ জানিয়েছে, আগুন নেভানোর পাশাপাশি চলছে উদ্ধারকাজ। কী কারণে বিস্ফোরণ ঘটলো তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
এর আগে পূর্ব মেদিনীপুরের খাদিকুলে বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের জেরে মৃত্যু হয় একাধিক জনের। এরপর মহেশতলা, চম্পাহাটি, উত্তর ২৪ পরগনা জেলার নীলগঞ্জে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। প্রত্যেক ক্ষেত্রেই মৃতের সংখ্যা ১০ এর বেশী।
বাংলাদেশ সময়: ১৪:৫৮:২৫ ৬ বার পঠিত