
জনগণকে আবারও ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একই সঙ্গে জনগণের স্বার্থে প্রয়োজনে আবারও রাজপথে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
শনিবার বিকালে রাজধানীতে ঈদ উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে বিএনপির মহাসচিব এ হুঁশিয়ারি দেন। বাড্ডার মাদানি সড়কে বেরাইদা ঈদগাহ মাঠে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ৪২নং ওয়ার্ডের উদ্যোগে নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঈদ উপহার বিতরণ উপলক্ষে এই অনুষ্ঠান হয়।
বিএনপি মহাসচিব হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকেই দেব- এই অবস্থার মধ্য দিয়ে আমরা নির্বাচনটা চাই। আমরা এখনো বলছি, আমরা এখনো রাস্তায় নামিনি। আমরা সাধারণ মানুষের কাছে ঈদ সামগ্রী, ইফতারসামগ্রী নিয়ে যাচ্ছি; তাদের সুখ-দুঃখে তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়াচ্ছি। কিন্তু আমাদের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে যদি কোনো বিঘ্ন সৃষ্টি করা হয়, তাহলে বিএনপি আবার মাঠে নামবে। মাঠে নেমে তারা দাবি আদায় করে নিতে জানে। কথাটা বলছি এজন্য, আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।’
দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, খুব পরিষ্কার কথা, যে যেখানেই থাকেন, সেই ইউনাইটেড স্টেটে থাকেন, ফ্রান্সে থাকেন আর আমেরিকায় থাকেন; সেখান থেকে কাজ করেন। আমরা মানুষের সঙ্গে আছি, মানুষের সঙ্গে থেকে রাজনীতি করছি। সুতরাং আমাদের কেউ বিপথে পরিচালিত করতে পারবে না, বাংলাদেশের মানুষকেও কেউ বিপথে পরিচালিত করতে পারবে না।
বিএনপি ভারত-পাকিস্তান-যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য কারও পক্ষেই নয় জানিয়ে দলটির মহাসচিব বলেন, ‘পরিষ্কার কথা। আমরা ভারতের পক্ষেও নই, পাকিস্তানের পক্ষেও নই, আমেরিকার পক্ষেও নই, ইংল্যান্ডের পক্ষেও নই। আমরা বাংলাদেশের পক্ষে। আমাদের নেতা তারেক রহমান খুব পরিষ্কার করে বলেছেন, সবার আগে বাংলাদেশ- আমরা বাংলাদেশি। আপনারা সবাই সজাগ থাকবেন, সতর্ক থাকবেন। ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত শেষ হয়নি। সমস্ত ষড়যন্ত্র-চক্রান্তকে ব্যর্থ করে দিয়ে জনগণের সরকার আমরা প্রতিষ্ঠা করবই করব, ইনশাআল্লাহ।’
আল্লাহর হুকুমেই হাসিনার পতন হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ৯০ শতাংশ নেতাকর্মীকে জেলে নিয়েছিলে। আমাদের ২০ হাজারের মতো নেতা-কর্মীকে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকার হত্যা করেছিল। প্রায় ১৭শ নেতাকর্মীকে গুম করেছিল। ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা-গায়েবি মামলা দিয়েছিল। পৃথিবীর গণতান্ত্রিক ইতিহাসে এই ধরনের নজির খুব কম। সেই একটা অবস্থা আমরা পার হয়ে এসেছি। এজন্য আল্লাহতালার কাছে হাজারো শুকরিয়া আদায় করি। আমার কাছে মনে হয়, আল্লাহতায়ালা তার অশেষ অলৌকিক শক্তির মাধ্যমে হঠাৎ করে একদিন হাসিনাকে যেন গুম করে দিলেন। হাসিনা গুম হয়ে গেছে আল্লাহতায়ালার নির্দেশে। অত্যাচার-নির্যাতন-পীড়নের পরিবেশ থেকে আপাতত মুক্তি পেয়ে একটা মুক্ত পরিবেশে আমরা একটা জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছি।
মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক তহিরুল ইসলাম তুহিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা এমএ কাইয়ুম বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে মহানগর উত্তরের যুগ্ম আহ্বায়ক এসএম জাহাঙ্গীর, আখতার হোসেন, আলফাজ উদ্দিন, এজিএম শামসুল হক, গাজী রেজাউনুল হোসেন রিয়াজ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:০২:৪৪ ১০ বার পঠিত