চারগুণ মাশুল আদায়ের সিদ্ধান্তে মুখোমুখি চট্টগ্রাম বন্দর ও বিজিএমইএ

প্রথম পাতা » চট্রগ্রাম » চারগুণ মাশুল আদায়ের সিদ্ধান্তে মুখোমুখি চট্টগ্রাম বন্দর ও বিজিএমইএ
বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫



চারগুণ মাশুল আদায়ের সিদ্ধান্তে মুখোমুখি চট্টগ্রাম বন্দর ও বিজিএমইএ

বন্দরে জট তৈরি করা কনটেইনার প্রতি চারগুণ মাশুল আদায় অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্তে অটল চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় আমদানি-রফতানি বাণিজ্য ক্ষতির মুখে পড়ার দাবি করে মাশুল প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ)। মূলত আমদানি করা ভোগ্যপণ্য আটকে রেখে বাজারে দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা নস্যাতে মাশুল আদায় শুরু করে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

৫৩ হাজার ৫১৮ টিইইউএস ধারণ ক্ষমতার চট্টগ্রাম বন্দরে এই মুহূর্তে কনটেইনার রয়েছে মাত্র ২৯ হাজার ৬৫১ টিইইউএস। আর মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) একদিনেই রেকর্ড ৪ হাজার ৮৫৫ টিইইউএস কনটেইনার বন্দর থেকে ডেলিভারি হয়েছে। অথচ মার্চ মাসের শুরুতে বন্দরের বিভিন্ন ইয়ার্ডে ৪৫ হাজারের বেশি কনটেইনারমাশুল আটকে ছিল। রমজানে কৃত্রিম সংকটের মাধ্যমে দাম বাড়াতে আমদানি করা ভোগ্য পণ্য কৌশলে আটকে রাখার অভিযোগ ওঠায় দ্রুত কনটেইনার খালাসে কঠোর অবস্থান নেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান বলেন, মাশুল আদায় চারগুণ বাড়ানোয় কনটেইনার দ্রুত খালাস হচ্ছে। এতে প্রতিদিন অতিরিক্ত ১ হাজার কনটেইনার বন্দর থেকে আউট হচ্ছে। এটি একটি ইতিবাচক দিক।

আগে থেকে ঘোষণা দিয়ে ৯ মার্চ পর্যন্ত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের পর ১০ মার্চ থেকে ৪গুণ হিসাবে ২০ ফুট সাইজের কন্টেইনারে প্রতিদিনের জন্য ৪৮ মার্কিন ডলার এবং ৪০ ফুট সাইজের কনটেইনারে ৯৬ মার্কিন ডলার মাশুল আদায় শুরু করে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

এতে আমদানি করা ভোগ্যপণ্য বন্দরে আটকে রেখে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে দাম বাড়ানোর জন্য সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা যে পরিকল্পনা নিয়েছিল, সেটি বন্দর নস্যাৎ করে দিয়েছে। ভোগ্যপণ্য ডেলিভারি চলছে দ্রুতগতিতে। তবে বন্দরের এই চারগুণ মাশুল আদায়ে ক্ষতির মুখে পড়তে যাচ্ছে বিজিএমইএ, এমনটিই দাবি করছেন গার্মেন্টস ব্যবসায়ীরা।

কনটেইনার জট কমলে বন্দর কর্তৃপক্ষ মাশুল আদায়ের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নিবে বলে আশায় ছিল ব্যবসায়ীরা। কিন্তু মাশুল আদায়ের সিদ্ধান্তে বন্দর অনঢ় থাকায় আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের জন্য বড় ধরনের সংকট সৃষ্টি করবে বলে দাবি ব্যবসায়ী নেতাদের।

বিজিএমইএর সাবেক প্রথম সহ সভাপতি এস এম আবু তৈয়ব বলেন, বন্দর যদি অতি উৎসাহী হয়ে অনেক বেশি শুল্ক আরোপ করে ও বেশি শুল্ক আদায়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করে তাহলে শুল্ক আদায় তো হবেই না, বরং কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এ অবস্থায় মাশুল আরোপের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়ে বন্দর চেয়ারম্যানের কাছে চিঠি দিয়েছে গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিজিএমইএ। কাস্টমসের জটিলতায় এফসিএল কনটেইনার বন্দরের ইয়ার্ডে আটকা পড়ছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে শুক্র-শনিবার ছাড়াও সরকারি বন্ধের দিনগুলোতেও চাল-ডাল-চিনি-ছোলার মতো ভোগ্য পণ্য ডেলিভারি চালু রাখার ঘোষণা দিয়ে আরও একটি চিঠি ইস্যু করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

বিজিএমইএর সাবেক সহ সভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, বন্দরে হঠাৎ করে যে হটকারী সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে সেটি ব্যবসায়ীদের জন্য বড় ধরনের হুমকি। খরচ চারগুণ হারে বাড়ায় বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। কারণ এই খরচটি পণ্যের অর্ডার নেয়ার সময় পণ্যের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।

অবশ্য, ঈদের দীর্ঘ ছুটিতে কারখানা বন্ধ রাখতে হয় বলে গার্মেন্টস মালিকরা প্রস্তুতকৃত পোশাক রফতানির জন্য আগে-ভাগে অফডকের পাশাপাশি বন্দরে রেখে আসে। একইভাবে আমদানি করা কাঁচামাল গুদামে না এনে বন্দরের শেডে ফেলে রাখে।

বাংলাদেশ সময়: ১২:৩২:০৮   ৩ বার পঠিত  




চট্রগ্রাম’র আরও খবর


চারগুণ মাশুল আদায়ের সিদ্ধান্তে মুখোমুখি চট্টগ্রাম বন্দর ও বিজিএমইএ
খাগড়াছড়িতে দুই দুর্ধর্ষ ডাকাত গ্রেফতার, লুণ্ঠিত মালামাল ও সরঞ্জাম উদ্ধার
ভারত ও পাকিস্তান থেকে এবার এলো ৪৮ হাজার টন চাল
চাঁদপুরে ইয়াবাসহ কারবারি গ্রেপ্তার
মাগুরার সেই শিশুটি না ফেরার দেশে



আর্কাইভ