
অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, কোন অপশক্তি যেন জুলাই বিপ্লবকে ভূলুন্ঠিত করতে না পারে, সে জন্য ফ্যাসিবাদী বিরোধী সব পক্ষকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
শুক্রবার ঝিনাইদহ’র শৈলকুপা উপজেলা মিলনায়তনে মেধা ও মনন উৎসব-২০২৫ সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অ্যাটর্নি জেনারেল এসব কথা বলেন।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অনুষ্ঠানে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ, শৈলকুপা উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্নিগ্ধা দাস, সহকারী কমিশনার সিরাজুস সালিহিন ও শৈলকুপা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সুলতান আলী প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মেধা ও মনন মঞ্চের সভাপতি সাদিয়া সুলতানা।
তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লবে শহীদের রক্ত বৃথা যেতে দেওয়া যাবে না। মেধা ও মননের মাধ্যমে জুলাই বিপ্লবের কমিটমেন্ট রক্ষা করতে হবে। দেশের এই সন্ধিক্ষণে ছাত্র-জনতাসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের ঐক্যবদ্ধ থাকার কোন বিকল্প নেই।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, গত ১৫ বছরে ৭শ’র বেশি মানুষকে গুম করেছে ফ্যাসিস্ট সরকার। বিনা বিচারে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে সাড়ে ৪ হাজারের বেশি মানুষকে। এই ফ্যাসিস্টের পতন ঘটাতে জুলাই বিপ্লবে জীবন দিতে হয়েছে অসংখ্য ছাত্র-জনতাকে। আর কোনো শক্তি যেন গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আইনের শাসনের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে না পারে সে জন্য যে কোন ধরনের দুর্নীতি, গণতন্ত্র বিরোধী, সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রাখতে হবে।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ছাত্র জনতার গণবিপ্লবে অর্জিত সুফল ধরে রাখতে হবে। জুলাই বিপ্লবে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হলেও দেশকে অস্থিতিশীল করতে দেশি বিদেশি ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। তরুণরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে দেশের বিরুদ্ধে সব ষড়যন্ত্রই ব্যর্থ হবে। পতিত আওয়ামী সরকার ডাকাততন্ত্র কায়েমের মাধ্যমে আইন-বিচার, নির্বাচন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, প্রশাসনসহ সব প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো অকার্যকর করে দিয়েছিল।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকার শিক্ষাকে পাঠমুখী না করে কোচিং মুখী করেছে। অটোপাশের সংস্কৃতি চালু করে মেধার মুল্যায়ন থেকে বঞ্চিত করেছে শিক্ষার্থীদের। শিক্ষা এখন পাঠমুখী নয়, পরীক্ষামুখী। বর্তমানে দেশে চার ধারার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা বিদ্যমান। বাংলা মাধ্যম, ইংরেজি মাধ্যম, ইংরেজি ভার্সন এবং মাদ্রাসা শিক্ষা। মাদ্রাসা শিক্ষা আবার বিভিন্ন ধরণ রয়েছে, যেমন আলিয়া মাদ্রাসা, কওমী মাদ্রাসা, ক্যাডেট মাদ্রাসা। ক্লাসে পাঠদানের পরিবর্তে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে চাঁদা তুলে রান্না শেখানো শুরু করেছিল বিগত সরকার। এটা শুধু বোকামিই ছিলনা, ছিল অন্যায়। যা নিয়ে তৈরি হয়েছিল নানা আলোচনা, সমালোচনা ও হাসি ঠাট্টা। বিভিন্ন পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বাংলাদেশের শিক্ষার মান ১৩৮টি দেশের মধ্যে ১২৩ তম। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বনিম্ন আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা।
মেধা ও মনন উৎসব-২০২৫ উপলক্ষে আয়োজিত বিতর্ক প্রতিযোগিতার গ্র্যান্ড ফাইনালে ‘কেবল শিক্ষাক্ষেত্রে বিনিয়োগই টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পারে’ শীর্ষক প্রতিযোগিতায় শৈলকুপা পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়কে পরাজিত করে কাঁচেরকোল মরিয়ম নেছা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়।
প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠ বক্তা হবার গৌরব অর্জন করে কাঁচেরকোল মরিয়ম নেছা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাউদা ইসলাম তিসনী। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ক্রেস্ট, ট্রফি ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২২:৩৯:৫২ ৫ বার পঠিত