মাঘের শীতে কাঁপছে উত্তরের সীমান্তঘেঁষা লালমনিরহাটের মানুষ

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারি » মাঘের শীতে কাঁপছে উত্তরের সীমান্তঘেঁষা লালমনিরহাটের মানুষ
শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫



মাঘের শীতে কাঁপছে উত্তরের সীমান্তঘেঁষা লালমনিরহাটের মানুষ

মাঘের হাড় কাঁপানো শীতে কাঁপছে উত্তরের সীমান্তঘেঁষা লালমনিরহাটের মানুষ। জেলার ৫ উপজেলায় তাপমাত্রা নিম্নগামী হওয়ায় জনজীবনে নেমে এসেছে দুর্ভোগ। সঙ্গে বইছে হিমেল বাতাস। এতে চরম কষ্টে পড়েছেন জেলার খেটে-খাওয়া, দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষ।

রাজারহাট আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আজ শনিবার সকাল ৯টায় লালমনিরহাটে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে।

সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় বেড়েছে শীতের তীব্রতা। শীতের দাপটে বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ। সেই সাথে শীতবস্ত্রের অভাবে কষ্টে আছেন হতদরিদ্র, ছিন্নমূল ও স্বল্প আয়ের মানুষজন। গ্রামাঞ্চলের অনেকেই আবার খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। ঘন কুয়াশার সঙ্গে হিমেল বাতাসে কষ্টে পড়েছে গৃহপালিত পশুপাখিরাও।

জেলা সদরের বড়বাড়ী এলাকার ভ্যান চালক রেজু মিয়া (৪৫) জীবিকার তাড়নায় এই শীতেও ভ্যান চালাতে বের হয়েছেন। বাসসের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, দিনের মধ্যে দুপুরের দিকে যখন একটু গরম থাকে তখন ভ্যান ভালোভাবে চালানো যায়। কিন্তু সন্ধ্যার আগ মুহূর্তে ও সকালে সূর্য ওঠার আগ পর্যন্ত তেমন যাত্রী পাওয়া যায় না। শীতের কারণে ভ্যানও ঠিকভাবে চালানো যায় না। ফলে উপার্জন কমে গেছে।

পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের কৃষক আজিম হোসেন (৫৩) বলেন, প্রতিবারই বোরো মৌসুমে ধান রোপণের কাজ করি।

এবার এ মৌসুমে প্রচুর পরিমাণে ঠান্ডায় আমার সর্দি-কাশি শুরু হইছে । মন চায় না ঠান্ডার মধ্যে কাজ করতে। তবে জীবন-জীবিকার তাগিদে এই ঠান্ডার মধ্যেও কাজ করতে হচ্ছে।

পেটের দায়ে ঠান্ডা উপেক্ষা করে কাজ করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন কৃষক ইসমাইল আলী (৬০)। তিনি বলেন, আমি বয়স্ক মানুষ! এই তীব্র শীতের মধ্যে সকালে আমার কাজে যাওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। তবুও পেটের দায়ে কাজ করতে গিয়ে এখন অসুস্থ হয়ে পড়েছি। সেই ওষুধ কিনতে এখন বাজারে যাচ্ছি।

জেলার পাঁচ উপজেলায় ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে । নিউমোনিয়া, সর্দি, কাশি, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন রোগীরা।

এ বিষয়ে লালমনিরহাট ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ মোঃ আব্দুল মোকাদ্দেম জানান, ‘হাসপাতালে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা বাড়ছে। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি রোগীদের সেবা দিতে।’

তিনি আরো বলেন, আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার সাথে সংশ্লিষ্ট যেসব এনজাইম আছে, তা স্বাভাবিকের চেয়ে কম তাপমাত্রায় কম কার্যকর থাকে। ফলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। শীতে বাতাসের তাপমাত্রা কমার সাথে সাথে আর্দ্রতাও কমে যায়, যা আমাদের শ্বাসনালির স্বাভাবিক কর্মপ্রক্রিয়াকে বিঘ্নিত করে ভাইরাসের আক্রমণকে সহজ করে। ঠান্ডাজনিত সর্দি-কাশির শুরুতে গলা ব্যথা করে, গলায় খুসখুস ভাব দেখা দেয়, নাক বন্ধ হয়ে যায়, নাক দিয়ে ক্রমাগত পানি ঝরতে থাকে এবং হাঁচি আসে।

ক্রমান্বয়ে মাথাব্যথা, মাংসপেশিতে ব্যথা, শরীর ম্যাজ ম্যাজ করা, দুর্বল লাগা ও ক্ষুধামান্দ্য দেখা দেয়। হালকা জ্বর ও শুকনা কাশিও হতে পারে। এ ধরনের সমস্যায় চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, ‘প্রতি বছর এ এলাকায় শীতের দাপট অনেকটাই বেশি থাকে। তাই প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের জেলার প্রত্যেক উপজেলায় ছিন্নমূল মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭:৪৬:৪৭   ১ বার পঠিত  




ছবি গ্যালারি’র আরও খবর


বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে হাসনাত আবদুল্লাহ
মাঘের শীতে কাঁপছে উত্তরের সীমান্তঘেঁষা লালমনিরহাটের মানুষ
অবস্থান না জেনেই শীর্ষ সন্ত্রাসীদের ধরতে অভিযানে পুলিশ!
ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে কিন্তু গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা হয়নি: নজরুল ইসলাম খান
বাংলা একাডেমিতে ফ্যাসিস্টদের দোসর ঢুকে পড়েছে: সংস্কৃতি উপদেষ্টা



আর্কাইভ