বাংলাদেশে একটি গণহত্যা চালানোর পর আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক অধিকার থাকা উচিত কিনা; তা বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ বিচার-বিবেচনা করবেন বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। এসময় ফ্যাসিস্টদের রক্ষার জন্য মৃত্যুদণ্ড রহিতের প্রশ্নই আসে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) সচিবালয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্কের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ কথা জানান উপদেষ্টা।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নিতে পারবে কিনা; জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা আমার বলার জায়গা না। এখন আপনি যদি মনে করেন, যারা হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করেছে, আরও চল্লিশ-পঞ্চাশ হাজার মানুষকে অঙ্গহানি ঘটিয়েছে, চোখ কেড়ে নিয়েছে, এখনো তারা সেই অপকর্মের পক্ষে কথা বলে। যদিও ফাঁস হওয়া রেকর্ডটা সঠিক হয়, তাহলে এখনো তাদের নেত্রী ২৮৭ জনকে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়েছে। অন্য দেশে বসে সন্ত্রাসী হুমকি দিচ্ছে, যিনি একটা গণহত্যার মামলার আসামি। বিচারের আগে, দায়মুক্তির আগে তারা রাজনৈতিক কর্মসূচি চালাবে আরও হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করার জন্য? কাজেই সবকিছু একটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আসবে।
আপনারা বিবেচনা করে দেখেন, একটা গণহত্যা চালানোর পর এখনো একটা দল বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। আমাদের এত বড় আন্দোলনের নেতাদের কিশোরগ্যাং বলার চেষ্টা করে, আরও মানুষকে হত্যা করার হুমকি দেয়, সেই দলের রাজনৈতিক অধিকার থাকা উচিত কিনা; তা প্রতিটি মানুষই বিবেচনা করবেন। বিচারপ্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর দেখা যাবে, তাদের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেয়া যায়।
মৃত্যুদণ্ড নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, ফ্যাসিস্টদের রক্ষার জন্য মৃত্যুদণ্ড রহিতের প্রশ্নই আসে না। সব দেশেই মৃত্যুদণ্ড রহিত করার কথা বলে জাতিসংঘ। তাদের একটি অপশনাল প্রটোকল আছে। ওই প্রটোকলের মূলকথাই হচ্ছে মৃত্যুদণ্ড রদ করার জন্য। কিন্তু পৃথিবীর খুব অল্প দেশই মৃত্যুদণ্ড রদ করেছে। এটা তাদের অঙ্গীকার থেকে বলবেই। কিন্তু আমাদের যে ক্রিমিনাল জাস্টিস সিস্টেম, আমাদের যে জুডিশিয়াল কালচার আছে, সেগুলোতো আমাদের কাছে প্রাধান্য পাবে। সবচেয়ে বড় কথা, মৃত্যুদণ্ড রহিত করার যে অপশনাল প্রটোকল, তাতে বাংলাদেশের কোনো সরকারই পক্ষরাষ্ট্র হয়নি। আমাদের কোনো সরকারের পক্ষ থেকেই এই অপশনাল প্রটোকলের পক্ষরাষ্ট্র হওয়ার বিন্দুমাত্র উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪:৪১:৪০ ৮ বার পঠিত