বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলন নির্মূলে জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ দায়েরকৃত মামলায় প্রসিকিউশনের কাজ হল পরোয়ানা ইস্যু করানো আসামি গ্রেফতারের দায়িত্ব পুলিশ তথা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম আজ সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। পরোয়ানা জারি করেছেন ট্রাইব্যুনাল। সেই গ্রেফতারি পরোয়ানা আইজিপির কাছে প্রেরণ করা হয়। পরোয়ানা তামিল বিষয়টির পদক্ষেপ সংক্রান্ত কার্যক্রমের আপডেট আইজিপি বলতে পারবেন। পয়োয়ানা অনুযায়ী আসামি গ্রেফতার বাস্তবায়ন করবে পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলে জানান চিফ প্রসিকিউটর।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে ১৭ অক্টোবর গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুানাল। তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পৃথক আবেদনে করে প্রসিকিউশন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন। বিচারিক প্যানেলের অপর দুই সদস্য হলেন-বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত ৭০ টিরও বেশি অভিযোগ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনের কাছে এসেছে। প্রতিদিনই অভিযোগ আসছে। তাছাড়াও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা বরাবরও অনেক অভিযোগ জমা পড়েছে। পাশাপাশি, দেশের বিভিন্ন থানায় যেখানে যত মামলা হয়েছে জুলাই-আগস্ট গণহত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে এসব মামলা যেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলে আসে সেজন্য পদক্ষেপ নেয়া হবে। স্বল্প সময়ের মধ্যে আমরা এ পদক্ষেপ নেব। দেশের বিভিন্ন থানায় এসব মামলায় অহেতুক কাউকে সম্পৃক্ত করা হলে তা দেখা হবে। আমরা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর।
চিফ প্রসিকিউটর গণমাধ্যমের সহায়তা কামনা করে বলেন, জুলাই-আগস্ট গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হবে। জুলাই-আগস্টে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন নির্মূলে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের বিভিন্ন বাহিনী ও ক্যাডারদের হাতে হত্যা ও গণহত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধের শিকার ভিকটিম ও তাদের স্বজনরা ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থা বরাবরই অভিযোগ করবেন। এখানে অভিযোগ করতে কোথাও কোনোরূপ টাকা-পয়সা খরচ করতে হয় না, হবে না। ভিকটিমগণ কোন নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কা করলে সেই ক্ষেত্রে তাকে আইনি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। এক্ষেত্রে সাক্ষী সুরক্ষা বিধানও রয়েছে। এই বিষয়টি গণমাধ্যমে বেশি বেশি প্রচার করলে সকলে উৎসাহিত হবে বলে মনে করেন চিফ প্রসিকিউটর।
এদিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মূল ভবনের সংস্কার কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে।
এ সংস্কার কাজ সরেজমিন একাধিকবার পরিদর্শন করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। সংস্কার কাজ শেষে আগামী ৩ নভেম্বরের মধ্যে ট্রাইব্যুনালের মূল ভবনে বিচারকাজ শুরু করা যাবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭:২৮:৫৪ ৪০ বার পঠিত