শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যাকাণ্ড ঘিরে ভারত ও কানাডার সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছে। এরই মধ্যে উভয় পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি কূটনীতিক বহিষ্কারের ঘটনা ঘটেছে। দুই দেশের সাম্প্রতিক প্রসঙ্গ উঠে এসেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) এক প্রশ্নের জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে দিয়েছি যে কানাডার অভিযোগকে খুবই গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত। আমরা চেয়েছিলাম ভারত সরকার এই নিয়ে কানাডার তদন্তকে সাহায্য করুক। তবে ভারত অন্য এক পথ বেছে নিয়েছে।’
২০২৩ সালের ১৮ জুন কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায় হত্যা করা হয় শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জারকে। ওই ঘটনার প্রতিবাদে ব্যাপক বিক্ষোভ করে খালিস্তানপন্থিরা। সে সময় দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ওই হত্যার সঙ্গে ভারত জড়িত বলে সন্দেহ প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন।
এমনকি ওই হত্যা তদন্তে সহযোগিতা করার জন্য নয়াদিল্লিকে অনুরোধও জানান। ভারত সরকার অভিযোগ অস্বীকার করে এবং কানাডা সরকারের কাছে অভিযোগের প্রমাণ চায়। এর ফলে দুই দেশের সম্পর্কে চিড় ধরে। পাল্টাপাল্টি কূটনীতিক বহিষ্কারের ঘটনাও ঘটে।
বেশ কিছুদিন পর গত সোমবার (১৪ অক্টোবর) আবারও উত্তেজনার শুরু। ওই দিন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, তারা ‘কূটনৈতিক সূত্রে’ ইঙ্গিত পেয়েছে যে কানাডায় একটি ঘটনার তদন্তে সেখানে ভারতীয় কূটনীতিকের ‘ফৌজদারি অপরাধে সংশ্লিষ্ট’ দেখানো হতে বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও বলা হয়, ভারত কানাডার ‘অযৌক্তিক দোষারোপ’ জোরালোভাবে প্রত্যাখ্যান করছে এবং দেশটি থেকে তার কূটনীতিক ও অন্য কর্মকর্তাদের সরিয়ে নিচ্ছে। এর কয়েক ঘণ্টা পরই কানাডা সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, তাদের কেন্দ্রীয় পুলিশ বাহিনী প্রমাণ পেয়েছে যে, ভারতীয় প্রতিনিধিরা এমন সব কর্মকাণ্ডে জড়িত রয়েছেন, যা কানাডার মানুষের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলছে।
এরপর ছয়জন ভারতীয় কূটনীতিককে বহিষ্কার করার কথা জানায় অটোয়া। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’ দাবি করে পাল্টা ছয় কানাডীয় কূটনীতিককে দ্রুত ভারত ছাড়ার নির্দেশ দেয় নয়াদিল্লি। পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে শিখ নেতা গুরপতওয়ান্ত সিং পান্নুকে হত্যার ষড়যন্ত্রেও ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে ওয়াশিংটন। পান্নুকে হত্যার ষড়যন্ত্রে যুক্ত এক ভারতীয়কে গত বছর প্রথমে বেলজিয়ামের পুলিশ গ্রেফতার করে। পরে তাকে মার্কিন আদালতে পেশ করা হয়।
মঙ্গলবার পররাষ্ট্র দফতরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ বিষয়েও প্রশ্ন করা হয়। জবাবে মিলার বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগের ভিত্তিতে ভারত একটি ‘তদন্ত কমিটি’ গঠন করেছে। এ বিষয়ে তদন্ত করতে ১৫ অক্টোবর দেশটির একটি টিম ওয়াশিংটন সফর করছে।
ভারতীয় তদন্ত টিমের ওয়াশিংটন সফরের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক মুখপাত্র জন কিরবি। তিনি বলেন, ‘তারা (ভারত) এখানে একটি তদন্ত কমিটি পাঠিয়েছে, বিষয়টিকে তারা গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছে বলেই আমরা মনে করছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:১৫:৩৬ ১৬ বার পঠিত