জামালপুরের মেলান্দহে এক পোশাক শ্রমিককে বিয়ে করার কথা বলে বাড়িতে রেখে প্রেমিক পালিয়ে যাবার পর তার পরিবারের লোকজন রাতভর প্রেমিকাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় পুরো এলাকা জুড়ে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
গাজীপুর থেকে বিয়ের কথা বলে রোকসানাকে এনে বাড়ির সামনে রেখে পালিয়ে যান শান্ত, পরে রোকসানাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার আদ্রা ইউনিয়নের তেঘরিয়া গ্রামের অটোরিকশা চালক আব্দুর রশিদের মেয়ে রোকসানার সাথে একই গ্রামের মঞ্জুরুল হোসেনের ছেলে শান্তর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। তিন বছর ধরে চলছে এই প্রেম। সংসারের অভাব অনটনের কারণে রোকসানা দুই মাস আগে গাজীপুরে বড় বোনের সাথে একটি পোশাক কারখানায় কাজ নেয়।
কিছু দিন আগে শান্ত গাজীপুরে গিয়ে রোকসানার সঙ্গে দেখা করে। বাসায় বড় বোন না থাকায় তার সাথে অনৈতিক সর্ম্পকের চেষ্টা করে। এতে রাজি না হওয়ায় রোকসানাকে বেধড়ক মারধর করে শান্ত। পরে তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন আসলে তাকে (রোকসানা) বিয়ের করার আশ্বাস দিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসে।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) রাতে বাড়িতে আসার পর রোকসানাকে রাস্তায় রেখে শান্ত পালিয়ে যায়। পরে রোকসানা শান্তদের বাড়িতে গেলে তার পরিবারের লোকজন তাকে বাড়ির পাশে একটি গাছের সাথে রাতভর বেঁধে রাখে।
পরে বুধবার (২ অক্টোবর) ভোরে খবর পেয়ে রোকসানার বাবা-মা ও এলাকাবাসী এসে তাকে উদ্ধার ছেলের বাড়িতে রেখে দেন।
এই ঘটনার পর শান্তর বাবা মঞ্জুরুল হোসেন মেলান্দহ থানায় গিয়ে উল্টো অভিযোগ করে পুলিশ নিয়ে আসেন।
ঘটনা সম্পর্কে রোকসানা বলেন, ‘তিন বছর আগে থেকেই আমার সাথে শান্ত প্রেমের সর্ম্পক হয়। দুই মাস আগে আমি গাজীপুরে বড় বোনের সাথে একটি গার্মেন্টসে চাকরি নেই। গত ২৯ সেপ্টেম্বর শান্ত আমার সাথে দেখা করতে যায়। আমার বড় বোন বাসায় না থাকায় আমার সাথে জোরপূর্বক অনৈতিক সর্ম্পক করার চেষ্টা করে শান্ত। আমি এতে বাধা দিলে একপর্যায়ে মারধর করে।’
রোকসানা আরও বলেন, ‘আমার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে শান্তকে ধরে ফেলে। পরে সে আমাকে বিয়ে করবে বলে ফোনে তার মা-বাবার সাথে কথা বলে। এরপর আমাকে তার গ্রামের বাড়ির সামনে রেখে পালিয়ে যায়। আমি তার বাড়িতে এসে তার বাবা-মাকে বিয়ের কথা বললে তারা আমাকে গাছের সাথে বেঁধে মারধর করে। এখন শান্ত বিয়ে না করলে আমি মুখ দেখাবো কী ভাবে।’
রোকসানার বাবা আব্দুর রশিদ বলেন, ‘আমার চারটি মেয়ে। রিকশা ও ক্ষেত খামারে কাজ করে ওদের মানুষ করেছি। আমার মেয়ের সাথে প্রেমের সর্ম্পক করেছে আমি জানতাম না। ভোরে খবর পাই আমার মেয়েকে গাছের সাথে বেঁধে রেখেছে। দৌঁড়ে গিয়ে দেখে আমার মেয়ে গাছের সাথে বাঁধা। আমি এর বিচার চাই।’
স্থানীয় বাসিন্দা লিটন সরকার বলেন, আমি মেয়েটিকে গাছের সাথে বাঁধাবস্থায় দেখে খুবই কষ্ট পেয়েছি। এই কাজটা করা ঠিক হয়নি।
মেলান্দহ থানার উপপুলিশ পরির্দশক তোফায়েল হোসেন বলেন, মেয়েটিকে গাছের সাথে বেঁধে রেখে নির্যাতন করেছে। এ ব্যাপারে মেয়ের পরিবার থেকে আইনগত সহায়তা চাইলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১১:১৫:০৪ ১১ বার পঠিত