মুসা (আ.) ছিলেন আল্লাহর একজন প্রিয় নবী ও রসুল। তিনি বনি ইসরাঈল জাতির মুক্তির জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। তার জীবনের প্রতিটি অধ্যায়েই আল্লাহর প্রতি তার গভীর আনুগত্য এবং দৃঢ় বিশ্বাসের নিদর্শন পাওয়া যায়।
মুসা (আ.) আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথা বলার সৌভাগ্যপ্রাপ্ত একজন মহান ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তার জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ছিল তার ভাই হারুন (আ.) এর নবী হওয়ার বিষয়টি, যা আল্লাহর পরিকল্পনার একটি অংশ ছিল।
মুসা (আ.)-এর সংক্ষিপ্ত পরিচয়
মুসা (আ.) জন্মগ্রহণ করেছিলেন মিসরে। যখন ফেরাউন এবং তার শাসন অত্যাচার ও জুলুমে সীমাহীন ছিল। বনি ইসরাঈল জাতিকে ফেরাউনের নিপীড়ন থেকে মুক্ত করার জন্য আল্লাহ তাকে নবুয়ত দান করেন। এক মহৎ মিশনের দায়িত্ব প্রদান করেন।
ফেরাউনের অত্যাচারের হাত থেকে বাঁচার জন্য মুসা (আ.) শিশুকালে তার মায়ের আদেশে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। ফেরাউনের পরিবারই তাকে খুঁজে পায় এবং লালন-পালন করে। পরবর্তীতে আল্লাহর পক্ষ থেকে নবী হিসেবে নির্বাচিত হয়ে, মুসা (আ.) বনি ইসরাঈলকে ফেরাউনের হাত থেকে মুক্তি দেন এবং তাওহিদের পথে ফিরিয়ে আনেন।
মুসা (আ.)-এর আল্লাহর সঙ্গে কথোপকথন
মুসা (আ.) যখন মিসর ছেড়ে মাদইয়ান শহরে যাচ্ছিলেন, তখন তুর পাহাড়ে আল্লাহর সাথে তার প্রথম কথোপকথন হয়। আল্লাহ তাআলা মুসা (আ.)-কে নির্দেশ দেন ফেরাউনের কাছে ফিরে গিয়ে তাকে সতর্ক করতে। বনি ইসরাঈলকে মুক্তি দিতে। কিন্তু মুসা (আ.) তখন আল্লাহর কাছে তার কণ্ঠস্বরের দুর্বলতার কথা বলেন। সহায়তার জন্য তার ভাই হারুন (আ.) এর সাহায্য চান। আল্লাহ তার আবেদন কবুল করেন। তার ভাইকে নবী হিসেবে মনোনীত করেন।
মুসা আ.-এর ভাই হারুন আ. নবী হয়েছিলেন যেভাবে
মুসা (আ.) আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী ফেরাউনের কাছে দাওয়াত দেওয়ার দায়িত্ব পেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি অনুভব করলেন যে, তার বক্তব্য মসৃণভাবে উপস্থাপন করতে সমস্যা হতে পারে, কারণ তার কণ্ঠস্বর ছিল কিছুটা ভারী।
এ জন্য তিনি আল্লাহর কাছে তার ভাই হারুন আ. কে সহকারী হিসেবে প্রার্থনা করেন। আল্লাহ তাঁর প্রার্থনা গ্রহণ করেন এবং হারুন আ. কে নবী হিসেবে মনোনীত করেন।
হারুন (আ.) ছিলেন মুসা (আ.)-এর বড় ভাই, একজন সাবলিল ভাষী। তিনি মুসা (আ.)-এর সাথে একত্রিত হয়ে ফেরাউনের কাছে দাওয়াত পেশ করেন। আল্লাহর বার্তা পৌঁছে দেন। এই দুই ভাই আল্লাহর পথে একসাথে কাজ করেন। বনি ইসরাঈলকে মুক্তি দিতে সক্ষম হন।
মুসা (আ.) এবং হারুন (আ.)-এর জীবনের এই ঘটনা আমাদের শেখায় যে আল্লাহ তার প্রিয় বান্দাদের সাহায্য করতে সবসময় প্রস্তুত থাকেন। নবুয়তের এই দুই ভাই একত্রে কাজ করে আল্লাহর নির্দেশ পালন করেন। এক মহান দায়িত্ব সফলভাবে সম্পন্ন করেন। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে তার প্রেরিত নবীদের পথ অনুসরণ করার তাওফিক দান করুন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩:০৫:৩২ ৩২ বার পঠিত