যৌথ প্রচেষ্টায় ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করায় পাকিস্তান ও চীনের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সহায়তা নেয়ায় পাকিস্তানের একটি কোম্পানি এবং সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি সরবরাহ করায় চীনের একাধিক কোম্পানি ও এক ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। নতুন এই নিষেধাজ্ঞার ফলে যুক্তরাষ্ট্র এখন সংশ্লিষ্ট পাক ও চীনা কোম্পানিগুলোর সম্পত্তি জব্দ করতে পারবে।
ওয়াশিংটনের দাবি, চীনের সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি দিয়ে পাকিস্তানে ব্যালিস্টিক মিসাইল তৈরি করা হচ্ছে। এই ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির জন্য ২০২১ সালের নভেম্বর থেকে পাকিস্তান ও চীনা কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। গত বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) ঘোষিত নিষেধাজ্ঞা ছিল ষষ্ঠ দফার নিষেধাজ্ঞা। খবর রয়টার্স ও আল জাজিরা।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এক বিবৃতিতে বলেন, মিসাইল প্রযুক্তির বিধিনিষেধ সত্ত্বেও জ্ঞাতসারে প্রযুক্তি ও সরঞ্জাম সরবরাহে জন্য চীনভিত্তিক হুবেই হুয়াচংদা ইন্টেলিজেন্ট ইকুপমেন্ট কোম্পানি, ইউনিভার্সাল এন্টারপ্রাইজ ও জিয়ান লংদে টেকনোলজি ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির পাশাপাশি পাকিস্তান-ভিত্তিক কোম্পানি ইনোভেটিভ ইকুপমেন্ট এবং একজন চীনা নাগরিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের মতে, বেইজিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট অফ অটোমেশন ফর মেশিন বিল্ডিং ইন্ডাস্ট্রি (আরআইএএমবি) পাকিস্তানের ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কমপ্লেক্সকে (এনডিসি) সহযোগিতা করেছে। ওয়াশিংটন মনে করে যে, এনডিসি পাকিস্তানের জন্য দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পরপরই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে চীন। ওয়াশিংটনে চীনা দূতাবাসের মুখপাত্র লিউ পেংইউ বলেন, ‘চীন দৃঢ়ভাবে একতরফা মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এবং এখতিয়ারবহির্ভূত এলাকায় হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করছে। কারণ আন্তর্জাতিক আইনে কিংবা জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলে এ ধরনের নিষেধাজ্ঞার কোনো ভিত্তি নেই।
আল জাজিরা জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নিয়ে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনও কোনো মন্তব্য করেনি। আল জাজিরার পক্ষ থেকে এ বিষয়ে উত্তর জানতে চেয়ে প্রশ্ন পাঠানো হলেও তার জবাব মেলেনি।
এর আগে চলতি বছরের এপ্রিলে পাকিস্তানের দূর পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিতে বেলারুশ ও চীনের সহযোগিতার অভিযোগে চার কোম্পানির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। ওই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলে, তাদের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিতে বিদেশি কোম্পানির সংশ্লিষ্টতার কোনো তথ্য-উপাত্ত দেখানো হয়নি।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মমতাজ জারা বালোচ বলেন, রফতানি নিয়ন্ত্রণে এ ধরনের রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি। তিনি আরও বলেন, এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে প্রতিরক্ষা সম্পর্কে উন্নয়নের বিষয়টি সামনে আনে। বিশেষজ্ঞারা বলছেন, এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে পাকিস্তান ক্ষেপণান্ত্র উন্নয়ণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:৩৫:১৪ ১৮ বার পঠিত