লক্ষ্মীপুরে বন্যায় কৃষিখাতে ২২৭ কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি

প্রথম পাতা » চট্রগ্রাম » লক্ষ্মীপুরে বন্যায় কৃষিখাতে ২২৭ কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি
বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪



লক্ষ্মীপুরে বন্যায় কৃষিখাতে ২২৭ কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি

সাম্প্রতিক বন্যায় জেলার কৃষিখাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
আবাদকৃত ১৫ হাজার ৬২৬ হেক্টর জমির ফসল সম্পুর্ণ নষ্ট হয়েছে, এতে ১ লাখ ৫৭ হাজার ২০৯ জন কৃষক-কৃষাণীর ২২৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে আউশ ধান, আমনের বীজতলা, রোপা আমন ও সবজি ক্ষেত। এছাড়া পান, আখ, হলুদ, আদা ও নানা জাতের ফলজ গাছেরও ক্ষতি হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, জেলার ৫টি উপজেলায় চলতি মৌসুমে ৩ হাজার ৬০৭ হেক্টর জমিতে আমনের বীজতলা তৈরি করা ছিল। ভারী বর্ষণে জলাবদ্ধতা, মেঘনা নদীর জোয়ারের পানি ও বানের পানিতে তলিয়ে গেছে ২ হাজার ৫৩৬ দশমিক ৮০ হেক্টর জমির বীজতলা। এতে ৬৩ হাজার ৪২০ জন কৃষকের ২৯ কোটি ২৬ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
রোপা আমনের আবাদ করা হয়েছে ১৪ হাজার ৩৯৪ হেক্টর জমিতে। পানিতে ডুবে নষ্ট হয়েছে ৭ হাজার ৬১০ দশমিক ৭০ হেক্টর। এতে ৩১ হাজার ৭০৬ জন কৃষকের ৮৫ কোটি ৬২ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
এছাড়া ৪ হাজার ৭০ দশমিক ৫০ হেক্টর জমিনের আউশ ধান নষ্ট হয়েছে। এতে ২৪ হাজার ৪২৩ জন কৃষকের ৩৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে শুধু রায়পুর উপজেলায় ১৬২ হেক্টর জমিতে বোনা আমনে, ৯ হাজার ৭২০ জন কৃষকের ১ কোটি ২ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
অন্যদিকে ১০ হাজার ৩৯০ হেক্টর জমিতে শরৎকালীন শাক-সবজি সম্পূর্ণ পানিতে ডুবে নষ্ট হয়েছে। এতে ২০ হাজার ৭৮০ জন কৃষকের ৫১ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে।
২২৭ দশমিক ২ হেক্টর জমিতে পানের আবাদ করা হয়েছে, নষ্ট হয়েছে ১১২ দশমিক ২ হেক্টর জমির। এতে ১ হাজার ৬৬৩ জন কৃষকের ক্ষতি হয়েছে ১৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকার।
৬ হেক্টর জমিতে আদা চাষ করা হয়েছে, এর মধ্যে ৫ হেক্টর নষ্ট হয়েছে। এতে ২৪০ জন কৃষকের ক্ষতি হয়েছে ৭০ লাখ টাকার।
৩৯ হেক্টর জমিতে থাকা ৯৮ টন হলুদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ২ হাজার ৪০ জন কৃষকের ১ কোটি ৪৬ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
৭৪৪ জন কৃষকের ৯ দশমিক ৩ হেক্টর জমির আখ নষ্ট হয়েছে। এতে ক্ষতি হয়েছে ২ কোটি ৯ লাখ টাকা।
এদিকে ২ হাজর ৭৩ জন কৃষকের ৪১ দশমিক ৪৬ হেক্টর জমিনের ফলের বাগান নষ্ট হয়েছে। এতে ২০৭ টন ফলের ক্ষতি হয়েছে। যারা বাজার মূল্য ২ কোটি ৭ লাখ ৩০ হাজার টাকা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সোহেল মো. শামসুদ্দীন ফিরোজ বাসসকে বলেন, বৃষ্টিপাতে জলাবদ্ধতা, নদীর জোয়ারের পানি এবং বন্যার কারণে জেলা জুড়ে ফসলি জমিতে পানি জমে গেছে। কৃষকের আমনের বীজতলা, রোপা আমন ক্ষেত, পান, সবজি ও ফলজগাছসহ মোট ১৫ হাজার ৬২৬ হেক্টর জমিনের ফসল সম্পুর্ণ নষ্ট হয়েছে। যার আর্থিক মূল্য প্রায় ২২৭ কোটি টাকা। আমরা ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে অবহিত করেছি।
দ্রুত কৃষকের মধ্যে যাতে পুনর্বাসন প্রণোদনা সরবরাহ করা যায়, কর্তৃপক্ষ সে নির্দেশনা দিয়েছেন। ইতোমধ্যে আমরা জেলার ৫টি উপজেলায় ৬ হাজার কৃষকের মধ্যে রোপা আমন ধানের বীজ, সার ও একাউন্টের মাধ্যমে ১ হাজার টাকা করে সহায়তা বাস্তবায়ন করছি।
এছাড়া আগাম রবি মৌসুমের জন্য প্রণোদনা প্যাকেজ হাতে পেয়েছি। ১৩ হাজার ২০০ কৃষকের মধ্যে গম, ভুট্টা, সরিষা, সূর্যমূখী, মুগ, মশুর, খেশারী, চিনা বাদাম, সয়াবিন, শীতকালীন পেঁয়াজ বীজ বিতরণের জন্য কর্মসূচি আসবে।
আমন ধান চাষীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আমন ধানের চারা লাগাতে পারবে। কৃষকরা যেন নাভি জাতের বিআর-২২, বিআর-২৩ ধানের চারা রোপণ করে।
এছাড়া আমরা যে বীজ দিয়েছি, বিআর-৭৫, বিআর-১৭, এ দুটি বীজ দ্রুত কাদাযুক্ত মাটিতে বপন করে ১৫ দিনের মধ্যে চারা জমিতে রোপণ করতে পারবে। এ ধান নির্দিষ্ট সময়ে ভাল ফলন দেয়।
তিনি আরও বলেন, ৬৫ হাজার কৃষকের জন্য শীতকালীন সবজির প্রণোদনা চাহিদা পাঠিয়েছি। তারা যাতে বাড়ির আঙ্গিনায় শীতের সবজির চাষাবাদ করতে পারে, সে সহযোগিতা করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭:৪৮:৩৪   ২৬ বার পঠিত  




চট্রগ্রাম’র আরও খবর


রাঙ্গামাটিতে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী নারীদের কৃষি ও হস্ত শিল্পের প্রদর্শনী
চাঁদপুরে জাহাজ থেকে ৬ জনের মরদেহ উদ্ধার
লক্ষ্মীপুরে শিক্ষার্থী হত্যা-মামলায় গ্রেফতার-২
হাজীগঞ্জে ৩ দিনব্যাপী কৃষি প্রযুক্তি মেলার উদ্বোধন
সবাইকে কথা বলার সুযোগ করে দেয়াই হলো সরকারের প্রধানতম লক্ষ্য -সুপ্রদীপ চাকমা



আর্কাইভ