বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বহুদলীয় গণতন্ত্রের ধারা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করাই এখন বিএনপির মূল লক্ষ্য।
বিএনপির ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপির ৪৬তম প্রষ্ঠিাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মী, শুভানুধ্যায়ী এবং দেশবাসীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ১ সেপ্টেম্বর, এ দিনটি বাংলাদেশের মানুষের জন্য আনন্দ, উদ্দীপনা ও প্রেরণার। ১৯৭৮ সালের এই দিনে এক শুভক্ষণে স্বাধীনতার ঘোষক সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান (বীর উত্তম) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
তিনি বলেন, বাকশালী ব্যবস্থায় গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছিল শুধুমাত্র একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী হওয়ার জন্য। সেই মৃত গণতন্ত্রকে পুনরুজ্জীবিত করেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। বাংলাদেশে আবারও বহুমাত্রিক গণতন্ত্রের পথচলা শুরু হয়। জিয়াউর রহমানের সৃষ্টি বিএনপি বিগত ৪৬ বছরে কয়েকবার সবার অংশগ্রহণমূলক সুষ্ঠুু নির্বাচনে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসীন হয়ে দেশ ও জনগণের সমৃদ্ধি ও কল্যাণে কাজ করে গেছে।
তারেক রহমান ‘স্বাধীনতার মহান ঘোষক, সফল রাষ্ট্রনায়ক ও আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তম-এর প্রতি ‘গভীর শ্রদ্ধা’ জানান।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আমাদের এই প্রিয় দল অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করেছে। নির্বাসিত গণতন্ত্র আদায়ে নির্দিধায় অকাতরে জীবন উৎসর্গ করেছে অসংখ্য নেতাকর্মী। ৮০’র দশকে ৯ বছরের সামরিক স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপির রাজপথে আপসহীন ভূমিকা ইতিহাসের একটি উজ্জ্বল অধ্যায়। তার সেই অগ্রণী ভূমিকার জন্য গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হয়। এজন্য আমি খালেদা জিয়াকে জানাই সশ্রদ্ধ সালাম।’
তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার লক্ষ্যে বিএনপি ১৯৯১ সালে নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালনকালে সাংবিধানিক সংশোধনীর মাধ্যমে সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তন করেছে। এতে নেতৃত্ব দিয়েছেন গণতন্ত্রের অনন্য প্রতীক খালেদা জিয়া। সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের চর্চা ও বিকাশসহ দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় বিএনপির বলিষ্ঠ ভূমিকা জনগণের কাছে সবসময় সমাদৃত হয়েছে।
তিনি বলেন, গণতন্ত্র সমুন্নত ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য বিএনপির উদ্যম ও উদ্যোগের ফলশ্রুতিতে দলটি দেশবাসীর কাছে এখন সর্বাধিক জনপ্রিয় রাজনৈদিক দল। জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অক্ষুণ্ণ রেখে দেশমাতৃকার সেবায় নিজেদের নিবেদন করে বিএনপি আগামী দিনগুলোতেও বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে।
জন্মলগ্ন থেকে এ পর্যন্ত দলের যে সমস্ত নেতাকর্মী মৃত্যুবরণ করেছেন ও দেড় দশকের আওয়ামী ফ্যাসিবাদের করাল গ্রাস এবং সম্প্রতি ছাত্রজনতার রক্তঝরা আন্দোলনে যারা প্রাণ হারিয়েছেন ও সম্প্রতি পূর্বাঞ্চলের বন্যায় যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তারেক রহমান তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
তিনি উল্লেখ করেন, এখন গণতন্ত্রকে নির্বাসন থেকে ফিরিয়ে আনার সময় এসেছে। আইনের শাসন, মত প্রকাশ, সংবাদ পত্র ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পারলেই দেড়যুগ ব্যাপী গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শহীদদের আত্মদান সার্থক হবে।
তারেক রহমান আরও বলেন, ‘দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভলগ্নে আমাদের অঙ্গীকার হোক বাংলাদেশকে নিপীড়ন-নির্যাতনসহ সব পৈশাচিকতা মুক্ত একটি সুস্থির-শান্তিময় নাগরিক অধিকার সুরক্ষার দেশ হিসেবে গড়ে তোলা। দেশজুড়ে যেন আর কখনোই গুম, গুপ্তহত্যা, বিচারবহির্ভূত হত্যা, নারী ও শিশুদের ওপর পৈশাচিকতা, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, টাকা পাচারের মতো ঘৃণ্য বিভীষিকার পুনরাবৃত্তি না হয়। জনগণের অধিকার আদায়ে তাদের দুঃখ-কষ্ট লাঘবে এবং দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের ধারা আবারও পুনঃপ্রতিষ্ঠা করাই এখন বিএনপির মুল লক্ষ্য।
এবারে দেশের পূর্বাঞ্চলে প্রলয়ংকারী বন্যার কারণে বিএনপির ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর ৫ দিনব্যাপী কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করে একদিন করা হয়েছে উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ‘বিএনপি জনগণের দল, এই মুহূর্তে দেশের একটি বড় অঞ্চলে বন্যায় পানিবন্দি ও ক্ষতিগস্ত মানুষকে সহায়তা করাই সবচেয়ে বড় কাজ। এ জন্য তিনি দলের সব নেতাকর্মীকে বন্যাদুর্গতদের পুনর্বাসন না হওয়া পর্যন্ত তাদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:৫৩:৫০ ২১ বার পঠিত