চলতি বছরের শুরু থেকে রফতানির বিপরীতে প্রণোদনা ও নগদ সহায়তা কমিয়ে দিয়ে দেশের বস্ত্রখাতকেও পাটশিল্পের মতো বিলুপ্তির পথে ঠেলে দিচ্ছে একটি চক্র। আর শিল্পে জ্বালানি সংকট নিরসন করার আশ্বাস দিয়ে সরকার সাপ-লুডু খেলছে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ)।
শনিবার (৬ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর পান্থপথে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করেছে বস্ত্রখাতের শীর্ষ সংগঠনটি।
টেক্সটাইল খাতের আসন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা সার্কুলার বাতিল করে, আগের মতো প্রণোদনা ও নগদ সহায়তার দাবি জানিয়েছে বিটিএমএ। দেশে বর্তমান ৫১৯টি স্পিনিং মিল, ৯৩০টি উইভিং মিল ও ৩২২টি ডাইং-প্রিন্টিং-ফিনিশিং মিলসহ দেশের নিট পোশাক খাতে দরকারি সুতার ৯০ শতাংশ ও উইভিংয়ের ৪৫ শতাংশ যোগান দিয়েও বস্ত্রখাত ভালো নেই বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।
তাই সংবাদ সম্মেলনে বিটিএমএ-এর পক্ষ থেকে এ খাতের চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরা হয়, যেখানে উঠে আসে জ্বালানি সংকট, ব্যাংক ঋণের সুদ ও মজুরি বৃদ্ধিসহ নানা প্রতিবন্ধকতা। বস্ত্রখাতের শীর্ষ সংগঠনটি জানায়, গ্যাসের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহের সংকট এবং প্রায় ২৫০ শতাংশ মূল্য বৃদ্ধি, ইডিএফ ফান্ডের পরিমাণ ৩ কোটি ডলার থেকে কমিয়ে ২ কোটি ডলার করা এবং অধিকাংশ ব্যাংকের এই ২ হাজার কোটি ডলার ব্যয়েও অনীহা, ব্যাংক সুদের হার বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ১৪ দশমিক ৫ শতাংশ হওয়ায় ৪৮ থেকে ৬৬ শতাংশ বৃদ্ধি করার ফলে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে চলছে এ খাত।
এছাড়া শ্রমিক মজুরিও ৭০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি ডলার সংকটের কারণে ওয়ার্কিং ক্যাপিটালের প্রায় ৪০ শতাংশ ঘাটতি এবং তুলা ও অন্যান্য কাঁচামাল আমদানিতে এলসি খুলতে ব্যাংকের অনীহা উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ বলে জানায় বিটিএমএ।
এসময় বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, রফতানির বিপরীতে চলতি অর্থবছর থেকে প্রণোদনা, নগদ সহায়তা কমিয়ে দিয়ে পাটশিল্পের মতো বস্ত্র খাতকেও বিলুপ্তির পথে ঠেলে দিচ্ছে একটি চক্র। তাছাড়া রফতানি আয় বাড়িয়ে দেখাতে এতদিন মিথ্যা তথ্য দিয়ে তৈরি পোশাকসহ রফতানিমুখী খাতের ক্ষতি করেছে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও বাংলাদেশ ব্যাংক।
এসময় রফতানিমুখী শিল্পের সংকট যখন আষ্টেপৃষ্ঠে, তখন জ্বালানি সংকটের নামে সরকার সাপ-লুডু খেলছে বলে দাবি করে সংগঠনটি। এ অবস্থায় আগামীর প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে গেলে- ৩০ জুন বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা সার্কুলার বাতিল করে আগের মতো প্রণোদনা ও নগদ সহায়তা বহাল রাখার জন্য বিটিএমএ-এর পক্ষ দাবি জানান তিনি।
তাছাড়া সংগঠনটির সভাপতি আরও জানান, দেশে কাপড়ের চাহিদার প্রায় ১৫ শতাংশ মিটছে চোরাইপথে আসা কাপড়ে। এতে রাজস্ব ফাঁকির সঙ্গে বাড়ছে অর্থপাচার।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:১৫:২৬ ১৭ বার পঠিত